বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে নতুন ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে পারে: পরওয়ার
Published: 13th, August 2025 GMT
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেছেন, বিদ্যমান ব্যবস্থায় নির্বাচন হলে নতুন ফ্যাসিবাদের জন্ম হতে পারে। নির্বাচনের সময় ঘোষণাকে ইতিবাচক বলা হলেও প্রয়োজনীয় সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে তা জনগণের সঙ্গে প্রতারণা হবে।
আজ বুধবার সকালে খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলার আরাফাত আবাসিক এলাকায় উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে আয়োজিত ভোটার সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মিয়া গোলাম পরওয়ার এসব কথা বলেন। সমাবেশে নির্দলীয় সরকারের অধীনেই ‘জুলাই সনদের’ আইনি ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করে সেই আলোকে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের আহ্বান জানান তিনি।
জুলাই ঘোষণা এবং জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি প্রদান করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, সারা দেশে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের অনুকূলে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। অবাধ ও নির্বিঘ্নে নিজেদের ভোট প্রয়োগ করতে পারলে জনগণ ইসলামি আদর্শের শক্তিকেই ভোট দিয়ে নির্বাচিত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব অর্পণ করবে।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, ফ্যাসিস্ট বাকশালী আওয়ামী লীগ সরকার ভিন্ন একটি দেশের প্রেসক্রিপশনে ক্ষমতায় এসে দেশের আলেম-ওলামাদের ওপর জেল-জুলুম চালিয়েছে। ছাত্র-জনতার ঐতিহাসিক বিপ্লবের মাধ্যমে তাদের লজ্জাজনক পতন হয়েছে। তাই আগস্ট বিপ্লবকে অর্থবহ ও টেকসই করতে দলমত–নির্বিশেষে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। বাংলাদেশের অতীতের দৃষ্টান্ত অনুসরণ করে অবিলম্বে জুলাই জাতীয় সনদের প্রণয়নের কাজ সুসম্পন্ন করে বর্তমান সরকারকেই তা বাস্তবায়ন করতে হবে এবং এই সনদের ভিত্তিতে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে।
রাষ্ট্রের প্রতিটি রন্ধ্রে রন্ধ্রে পতিত স্বৈরাচারের অনুসারীরা সক্রিয় রয়েছে বলে মন্তব্য করে জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, ষড়যন্ত্রকারীদের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে। আসন্ন নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়ে তুলতে হবে। আগামী নির্বাচনে দেশে ভোট বিপ্লব ঘটানোর জন্য নেতা-কর্মীদের এখন থেকেই প্রস্তুত থাকতে হবে। দেশের মানুষ এখন ইসলামী দলগুলোকে নেতৃত্বের আসনে দেখতে চায়। দেশে ইসলামের পক্ষে যে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে, তাতে অচিরেই জনগণের সে আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়িত হবে, ইনশা আল্লাহ। কোনো ষড়যন্ত্রই জনতার বিজয়কে ঠেকাতে পারবে না।
সাবেক সংসদ সদস্য মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, আসন্ন জাতীয় নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পূর্বে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন দ্রুত সম্পন্ন করে অধ্যাদেশ, এলএফও বা গণভোটের মাধ্যমে আইনি ভিত্তি প্রদান করা না হলে অন্তবর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রম বিফলে যাবে। তাই সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করতে হবে। এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সব বাহিনী ও সংস্থার কার্যকর ভূমিকা নিশ্চিত করতে হবে। সরকার ও প্রশাসনকে স্বৈরাচারের দোসরমুক্ত করতে হবে। নির্বাচন কমিশনসহ প্রশাসনের সব স্তরে নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করতে হবে।
জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল বলেন, বাংলাদেশের আপামর জনতা জুলাই জাতীয় ঘোষণাপত্রকে কেন্দ্র করে যে প্রত্যাশা নিয়ে অপেক্ষা করছিল তা পূরণ না হওয়ায় জনগণের মধে৵ দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। শহীদ ও আহত ব্যক্তিদের পরিবারসহ জুলাই যোদ্ধাদের মধ্যে নতুনভাবে উৎকণ্ঠা পরিলক্ষিত হচ্ছে। ঐকমত্য কমিশনের মাধ্যমে জুলাই জাতীয় সনদ প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের রূপরেখা কী হবে তা জাতির কাছে অস্পষ্ট।
আরাফাত নগরের চকমথুরাবাদ ভোটকেন্দ্র কমিটির সভাপতি মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: গ ল ম পরওয় র র রহম ন ইসল ম র সনদ র উপজ ল সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
‘বিহারে ভোট কিনতে ব্যবহার হয়েছে বিশ্বব্যাংকের ১৪ হাজার কোটি রুপি’
ভারতের বিহার রাজ্যের ভোটারদের প্রভাবিত করতে বিশ্বব্যাংকের ১৪ হাজার কোটি টাকা ব্যবহার করা হয়েছে। দেশটির সাবেক ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোরের দল জন সুরাজ পার্টি। রবিবার এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি করা হয়েছে।
জন সুরাজ পার্টির দাবি, রাজ্যের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের জন্য বিশ্বব্যাংক যে ১৪ হাজার কোটি রুপি দিয়েছিল, তা ভোটে জিততে ব্যবহার করা হয়েছে। এই অর্থ থেকেই নীতীশ কুমারের সরকার ‘মুখ্যমন্ত্রী রোজগার যোজনা’ প্রকল্পের মাধ্যমে ১ কোটি ২৫ লাখ নারীকে ১০ হাজার রুপি দিয়েছে।
দলের জাতীয় সভাপতি উদয় সিংহ বলেন, “নির্বাচনের ফলাফলকে কেনা হয়েছে। ২১ জুন থেকে ভোটের দিন পর্যন্ত ৪০ হাজার কোটি রুপি খরচ করা হয়েছে। জনগণের অর্থ ব্যবহার করে জনগণের ভোট কেনা হয়েছে। আমি এটাও জানলাম যে, বিশ্বব্যাংকের কাছ থেকে পাওয়া রুপি নগদ অর্থবিলিতে ব্যবহার করা হয়েছে।”
চলতি সপ্তাহে বিহারের বিধানসভা নির্বাচনের ফল ঘোষণা করা হয়েছে। তাতে দেখা গেছে, বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপির নেতৃত্বাধীন জোট এনডিএ। ২৪৩ সদস্যের বিধানসভার মধ্যে এনডিএ ২০২টি আসন জিতেছে, যার মধ্যে বিজেপি ৮৯টি, জেডিইউ ৮৫টি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী চিরাগ পাসওয়ানের লোক জনশক্তি পার্টি (রাম বিলাস) ১৯টি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী জিতন রাম মাঝির হিন্দুস্তানি আওয়াম মোর্চা পাঁচটি এবং রাজ্যসভার সাংসদ উপেন্দ্র কুশওয়াহার জাতীয় লোক মোর্চা চারটি আসন পেয়েছে। আরজেডি-নেতৃত্বাধীন বিরোধী জোট মহাগঠবন্ধন মাত্র ৩৫টি আসন পেয়েছে।
তবে রাজ্যের নতুন দল জন সুরাজ পার্টি একটি আসনেও জয় পায়নি।
ঢাকা/শাহেদ