মিরাজের ফেবারিট বোলারের নাম শুনলে চমকে যেতে পারেন
Published: 13th, August 2025 GMT
মেহেদী হাসান মিরাজ নিশ্চিত ছিলেন। সে কারণেই বারবার বলেছেন—পছন্দের বোলারের নামটা শুনলে চমকে উঠবেন। সবাইকে প্রস্তুত করার পরও তিনি যে নামটা বলেছেন তাতে বোধ হয় চমক একটুও কমেনি।
সিটি গ্রুপ–প্রথম আলো ক্রীড়া পুরস্কারে বর্ষসেরা রানারআপ হওয়ার পর উৎপল শুভ্রর সঙ্গে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সেই পছন্দের বোলারের নাম বলেছেন মিরাজ। আড্ডার ঢঙে দেওয়া এই সাক্ষাৎকারে মিরাজের সঙ্গী ছিলেন তাসকিন আহমেদও। তাঁর পছন্দের বোলারের নামটাও জানা গেছে সেদিন।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে মিরাজের উইকেট ৩৩৬টি। বয়স মাত্র ২৭, ক্যারিয়ার শেষে সংখ্যাটা তাই ৭০০-৮০০–ও হতে পারে। আর সেটা যদি মিরাজ পারেন, পরিসংখ্যানের বিচারে তাঁকে সর্বকালের অন্যতম সেরা অফ স্পিনারই বলতে হবে। যাঁর মধ্যে অন্যতম সেরা হওয়ার যোগ্যতা আছে, সেই মিরাজের আদর্শ কে? মুত্তিয়া মুরালিধরন? নাকি এখনো খেলা নাথান লায়ন, রবিচন্দ্রন অশ্বিন? সাক্ষাৎকারে উৎপল শুভ্রর করা মিরাজের পছন্দের অফ স্পিনারের প্রশ্নে হয়তো এসব নামই আপনার মাথায় এসেছিল।
আরও পড়ুন২০ বলের ১০টিই বাউন্ডারি, বেধড়ক পিটুনি খেয়ে রেকর্ড রশিদ খানের৫ ঘণ্টা আগেমিরাজ সব সম্ভাবনাকে উড়িয়ে দিয়ে বললেন একজন রমেশ পাওয়ারের কথা। ভারতের এই স্পিনারের আন্তর্জাতিক উইকেট মাত্র ৪০টি, মিরাজের চেয়ে প্রায় ৩০০টি কম। প্রশ্নটি ফেবারিট অফ স্পিনার নিয়ে করলেও মিরাজ স্পষ্ট করেই বলেছেন, ডানহাতি অফ স্পিনার রমেশ পাওয়ারই তাঁর পছন্দের বোলার।
কথাটা মিরাজের মুখেই শুনুন, ‘আমি যার কথা বলব, হয়তো অনেকে মনে মনে বলবে, এটা কীভাবে সম্ভব! সবাই অবাক হয়ে যাবেন। আমার পছন্দের বোলার রমেশ পাওয়ার।’
একটা মোটা মানুষ, চশমা পরে কী সুন্দর অ্যাকশনে বল করে, তাতে বড় টার্নও করে, ওর বোলিং দেখে আমার ভালো লাগল। তখনই সিদ্ধান্ত নেই ওর অ্যাকশনেই আমি বোলিং করব।রমেশ পাওয়ারকে নিয়ে মিরাজকেন রমেশ পাওয়ার সেই ব্যাখ্যাও দিয়েছেন মিরাজ, ‘২০০৬ সালে আমি যখন শুরু করি, তখন আমি সাইড আর্ম অ্যাকশনে বোলিং করতাম। একাডেমিতে অনুশীলন করি, তখন সাইড আর্ম অ্যাকশনে বোলিং করতে অনেক কষ্ট হতো। তখন বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ চলছিল, ২০০৭ বিশ্বকাপের পরপর। ওই সময় ওর খেলা দেখলাম। একটা মোটা মানুষ, চশমা পরে কী সুন্দর অ্যাকশনে বল করে, তাতে বড় টার্নও করে, ওর বোলিং দেখে আমার ভালো লাগল। তখনই সিদ্ধান্ত নেই ওর অ্যাকশনেই আমি বোলিং করব।’ সেই থেকে রমেশ পাওয়ার হয়ে গেলেন মিরাজের প্রিয় বোলার!
তাসকিনের আদর্শ বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুর্তজা। এ কথা তিনি ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই বলে এসেছেন। আর কোন পেসার তাসকিনের মনে ধরেছে। নিজের পছন্দের বোলার নিয়ে তাসকিন বলেছেন, ‘আমার পছন্দ মরনে মরকেল। আমি ওর বাউন্সের বড় ভক্ত, লেংথ বল এত সুন্দর ক্যারি করত। আর দেশে ছোট থেকেই আমরা সবাই মাশরাফি ভাইকেও আইডল মনে করতাম। এখনো তিনি আমাদের একজন কিংবদন্তি। এই দুজনকেই আমার সব সময় ভালো লাগে।’
সাবেক স্পিনার রমেশ পাওয়ার।.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পছন দ র ব ল র র র পছন দ র ব ল র অফ স প ন র অ য কশন বল ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র
প্রাচীন গল্পে আছে, ইকারাস মোমের ডানা নিয়ে সূর্যের খুব কাছে উড়ে গিয়েছিল। তখন মোম গলে গেলে ইকারাস নিচে পড়ে যায়। সৃজনশীল এক ফটোগ্রাফার সম্প্রতি সূর্যের দারুণ এক ছবি তুলে সেই দৃশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় একজন স্কাইডাইভার মাত্র এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশের জন্য সূর্যের সামনে দিয়ে নেমে যান। ঠিক তখনই তাঁকে ক্যামেরাবন্দী করেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি। জ্বলন্ত সূর্যের মুখের ওপর দিয়ে যেন এক মানব প্রতিকৃতি নিচে নেমে গেল, এমন দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরা লেন্সে। দৃষ্টিবিভ্রমের এক অসাধারণ কীর্তি তৈরি করেছেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি নিখুঁতভাবে তাঁর ক্যামেরা দিয়ে একজন স্কাইডাইভারকে ক্যামেরার সংকীর্ণ ফিল্ড অব ভিউয়ের মধ্য দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় ধারণ করেন। ছবিটি বেশ পরাবাস্তব এক অনুভূতি তৈরি করেছে। ইকারাসকে নিয়ে প্রাচীন মিথের সঙ্গে ছবিটি তুলনা করেছেন অনেকেই।
অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি চাঁদ ও সূর্যের অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছবি তোলার জন্য পরিচিত। তিনি সূর্যের সামনে স্কাইডাইভারের এই একটি মাত্র ছবির জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সূর্যের ছবি তোলা এমনিতেই কঠিন কাজ। সেখানে সূর্যের সামনে গতিশীল একটি বিমান বা একজন পতিত মানবকে একই ফ্রেমে আনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিমানটির গতিপথ, সূর্যের কোণ, ক্যামেরার অবস্থান ও স্কাইডাইভারের অবতরণের মতো সব বিষয়কে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে এক করে কাজটি হয়েছে।
অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি বলেন, ‘বলা যায়, একেবারে অযৌক্তিক একটি কাজ করেছি। যদিও চূড়ান্ত ছবিটি দারুণ এক অনুভূতি দেয়। স্কাইডাইভার ছিলেন ইউটিউবার ও সংগীতজ্ঞ গ্যাব্রিয়েল সি ব্রাউন। সে সূর্যের উত্তাল হলুদ পৃষ্ঠের বিপরীতে একটি কালো সিলুয়েট বা ছায়ামূর্তি হিসেবে ছবিতে চলে এসেছে। সূর্যের অবস্থান ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে হলেও ক্যামেরায় দারুণভাবে দেখা যাচ্ছে সব। ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করা ছবি অসম্ভব বলে মনে হয়। আগুনের মতো সৌর ক্রোমোস্ফিয়ারের আবহের বিপরীতে একটি সত্যিকারের মানব চিহ্ন আমাদের মুগ্ধ করে। দেখে মনে হবে যেন, মহাকাশে কেউ নিচে পড়ে যাচ্ছে।’
স্কাইডাইভাররা ব্রাউনের ৩ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে পতন শুরু করলে প্রায় ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে প্যারাসুট খোলার আগে ছবি তোলার সুযোগ মেলে। ম্যাককার্থি একটি লুন্ট ৬০ মিলিমিটার এইচ–আলফা ক্যামেরায় তার ফ্রি ফলের ছবি তোলেন। একটি এএসআই ১ হাজার ৬০০ মিলিমিটারে একক এক্সপোজার ধারণ করা হয়। আসলে এই বিভ্রমের মূল কারণ হচ্ছে দূরত্বের সামঞ্জস্য। ব্রাউন একটি ছোট বিমান থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ফুট ওপর থেকে লাফ দেন। আর ম্যাককার্থি প্রায় আট হাজার ফুট দূরে অবস্থান করেছিলেন। স্কাইডাইভার অবশ্যই সূর্যের কাছে ছিলেন না। শুধু ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত অবস্থানের কারণে স্কাইডাইভারকে অসম্ভব কাছাকাছি দেখাচ্ছিল। আসলে লাফ দেওয়ার আগে বিমানটিকে সঠিক অবস্থানে আনার জন্য ছয়বার চেষ্টা করতে হয়েছে। স্কাইডাইভারকে ফ্রেমে ধরার জন্য মাত্র একবারের সুযোগ ছিল। ম্যাককার্থি তাঁর মনিটরে সেই ক্ষুদ্র অবয়বটিকে সূর্যের আলোর সঙ্গে মিলিয়ে একটি নিখুঁত অবয়ব ধারণ করেন।
এই ছবিকে অনেকেই পৌরাণিক রূপকথার সঙ্গে তুলনা করছেন। গ্রিক মিথের ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ম্যাককার্থির এ ছবিটি সেই আখ্যানকেই একটি আধুনিক ও স্পষ্ট রূপে যেন তুলে ধরছে।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া