বাকি টাকা চাওয়ায় বাগ্বিতণ্ডা, পরে বাড়ি থেকে পিস্তল এনে চা–দোকানিকে গুলি
Published: 13th, August 2025 GMT
গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে নাশতার বিলসহ বাকি টাকা চাওয়া নিয়ে বাগ্বিতাণ্ডার জেরে বাড়ি থেকে পিস্তল এনে চা–দোকানিকে গুলি করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গুরুতর আহত চা-দোকানিকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তিনি যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছেন। আজ বুধবার সকালে উপজেলার ইদিলপুর ইউনিয়নের নাপিতের বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
ইদিলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চকদাড়িয়া গ্রামের গোলাপ প্রামাণিক (৩১) নামের এক যুবক এই গুলি ছুঁড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ব্যক্তিরা। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, গাইবান্ধা-৩ (পলাশবাড়ী-সাদুল্লাপুর) আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষক লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক উম্মে কুলছুমের ঘনিষ্ঠ ছিলেন গোলাপ প্রামাণিক। দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক ছত্রচ্ছায়ায় থেকে তিনি মাদকসহ বিভিন্ন অপকর্ম করে আসছেন। তাঁর নামে একাধিক মামলাও রয়েছে।
গুলিতে আহত চা-দোকানির নাম ওয়াসিম (১৮)। ইদিলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ চকদাড়িয়া গ্রামে তাঁদের বাড়ি। ওয়াসিম ও তাঁর বাবা সিদ্দিক আকন্দ মিলে নাপিতের বাজার এলাকায় চা-নাশতার দোকানটি পরিচালনা করেন।
পুলিশ, হাসপাতাল ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল সাড়ে ১০টার দিকে নাপিতের বাজারে আসেন গোলাপ প্রামাণিক। তিনি সিদ্দিক আকন্দের দোকানে খাজা (একপ্রকার নাশতা) খান। খাবার পর বিল না দিয়ে চলে যেতে চান। এ সময় সিদ্দিক আকন্দ তাঁর কাছে টাকা চান। গোলাপ টাকা দিতে পারব না বলে জানিয়ে দেন। এ নিয়ে কথা–কাটাকাটির এক পর্যায়ে সিদ্দিককে ধাক্কা দেন গোলাপ। এ সময় ওয়াসিম তাঁর বাবা ও গোলাপকে সরিয়ে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে গোলাপ ওয়াসিমকে ধাক্কা দিয়ে চলে যান।
কিছুক্ষণ পর গোলাপ বাড়ি থেকে পিস্তল এনে ওয়াসিমকে গুলি করেন। এতে ওয়াসিমের বাঁ পায়ের ওপরের দিকে ঊরুতে গুলি লেগে পাশ দিয়ে চলে যায়। এ সময় ওয়াসিমকে বাঁচাতে এগিয়ে এলে গোলাপ তাঁর ভাবি সেলিনা বেগমকে গুলি করেন। গুলি সেলিনার পায়ে লেগে এক পাশ দিয়ে চলে যায়। ফলে তিনিও আহত হন।
এদিকে হইচই শুনে আশপাশের লোকজন এগিয়ে এলে গোলাপ ফাঁকা গুলি ছুড়ে পালিয়ে যান। পরে আহত অবস্থায় ওয়াসিম ও সেলিনা বেগমকে গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। দুপুরের পর সেলিনা বেগম হাসপাতাল ছেড়ে চলে যান। ওয়াসিম হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
গুলিবিদ্ধ ওয়াসিম আকন্দ বলেন, ‘গোলাপ আমাদের দোকানে খেয়ে টাকা দেন না। তাঁর কাছে অনেক টাকা পাই। টাকা চাইলেই তিনি হুমকি দেন। ভয়ে আমরা টাকা চাইতে পারি না। আজ টাকা চেয়ে গুলিবিদ্ধ হলাম। তিনি আজ তিনটি গুলি করেছেন। আমি তাঁর বিচার চাই।’
ওয়াসিমের বাবা সিদ্দিক আকন্দ জানান, ‘আমরা গরিব মানুষ। বাজারে চায়ের দোকান দিয়ে সংসার চালাই। আমার ছেলে কী দোষ করেছিল, তাকে গুলি করা হলো। আমি এই ঘটনার বিচার ও সন্ত্রাসী গোলাপকে গ্রেপ্তার দেখতে চাই।’
এই ঘটনার পর থেকে গোলাপ প্রামাণিক পলাতক। তাঁর মুঠোফোন বন্ধ রয়েছে। তাই তাঁর বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
গাইবান্ধা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) মোহাম্মদ আসিফ বলেন, গুলির ক্ষতে সাধারণত বার্ন থাকে। ওয়াসিমের ঊরুতে যে ক্ষত হয়েছে, তাতে বার্ন বা পুড়ে যাওয়ার চিহ্ন রয়েছে। তবে ওয়াসিম আশঙ্কামুক্ত। তাঁকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।
সাদুল্লাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তাজউদ্দিন খন্দকার বলেন, এ ঘটনা শোনার পরপরই ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। অপরাধীকে ধরতে অভিযান চলছে। ঘটনার সময় তিনি পিস্তল, বন্দুক নাকি অন্য কোনো অস্ত্র ব্যবহার করেছেন, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এ ছাড়া তাঁর কোনো রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা আছে কি না, তা তদন্ত করা হচ্ছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স দ দ ক আকন দ
এছাড়াও পড়ুন:
পর্যটকে পরিপূর্ণ কুয়াকাটা
দুর্গাপূজা ও সাপ্তাহিক ছুটির তৃতীয় দিন শুক্রবার (৩ অক্টোবর) পর্যটকে কানায় কানায় পরিপূর্ণ হয়ে উঠেছে পটুয়াখালীর পর্যটনকেন্দ্র কুয়াকাটা। ২২ কিলোমিটার দীর্ঘ সৈকতের তিন নদীর মোহনা, লেম্বুর বন, শুটকি পল্লী, ঝাউবাগান, গঙ্গামতি, চর গঙ্গামতি ও লাল কাঁকড়ার চড়ে এখন পর্যটকদের সরব উপস্থিতি। তাদের নিরাপত্তায় তৎপর রয়েছে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্যরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, আগত পর্যটকরা সৈকতের বালিয়াড়িতে উচ্ছ্বাসে মেতেছেন। তাদের অনেকে সমুদ্রের ঢেউয়ে গা ভিজিয়ে এবং ওয়াটর বাইকে চড়ে আনন্দ করছেন। অনেকে আবার সৈকতের বেঞ্চিতে বসে প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপভোগ করছেন। পর্যটকদের কেউ কেউ মোটরসাইকেল কিংবা ঘোড়ায় চরে বিভিন্ন পর্যটন স্পট ঘুরে দেখছিলেন। সব মিলিয়ে সৈকতের উৎসব মুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।
আরো পড়ুন:
চার দিনের ছুটিতে কক্সবাজার রুটে চলবে ‘ট্যুরিস্ট স্পেশাল’ ট্রেন
১ অক্টোবর থেকেই কেওক্রাডং যেতে পারবেন পর্যটকরা, মানতে হবে ৬ নির্দেশনা
পাবনা থেকে আসা হোসেন শহীদ ও সোনিয়া দম্পতি জানান, পূজা ও সরকারি ছুটি থাকায় তারা কুয়াকাটায় এসেছেন। সমুদ্রের ঢেউ উপভোগ করেছেন তারা। এই দম্পতির অভিযোগ, হোটেল ভাড়া কিছুটা বেশি রাখা হয়েছে।
বরিশালের কাউনিয়া থেকে আসা সম্রাট বলেন, “কয়েকটি পর্যটন স্পট ঘুরে দেখেছি। বৃহস্পিতবার বিকেলে বৃষ্টির মধ্যে লাল কাকড়ার চড়, গঙ্গামতি ও লেম্বুর বন ঘুরেছি। দারুন এক অনুভূতি হয়েছে।”
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশ জোনের সহকারী পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান বলেন, “পর্যটকদের নিরপত্তা নিশ্চিতে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। বিভিন্ন পর্যটন স্পটে ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্য মোতায়েন রয়েছে।”
ঢাকা/ইমরান/মাসুদ