বাংলাদেশের শ্রম আইন সংস্কারে তাগিদ দিল ঢাকার মার্কিন দূতাবাস। তৈরি পোশাকশিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে বৈঠকে দূতাবাসের একটি প্রতিনিধিদল বলেছে, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও), ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ (ইইউ) সবার চাওয়া আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতি রেখে বাংলাদেশের শ্রম আইন সংস্কার করা হবে।

রাজধানীর উত্তরায় বিজিএমইএর কার্যালয়ে আজ বুধবার সংগঠনটির সভাপতি মাহমুদ হাসান খানের সঙ্গে বৈঠক করে শ্রম আইন সংস্কারে এই তাগিদ দেয় মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদল। শ্রম অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে দেশের আইনি সংস্কারের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রতিনিধিদলকে অবহিত করেন বিজিএমইএর সভাপতি। মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদলে ছিলেন লেবার অ্যাটাশে লীনা খান, ফরেন কমার্শিয়াল সার্ভিস অ্যাটাশে পল জি ফ্রস্ট ও ফরেন অ্যাগ্রিকালচারাল সার্ভিস অ্যাটাশে এরিন কোভার্ট।

বৈঠকে বিজিএমইএর সভাপতি ছাড়াও জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি ইনামুল হক খান, সহসভাপতি মো.

রেজোয়ান সেলিম, মিজানুর রহমান, ভিদিয়া অমৃত খান, পরিচালক মোহাম্মদ আব্দুর রহিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, শেখ হোসেন মোহাম্মদ মোস্তাফিজ উপস্থিত ছিলেন। বিজিএমইএর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানানো হয়।

মাহমুদ হাসান খান বলেন, তৈরি পোশাক খাতের শ্রম পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখা বিজিএমইএর অন্যতম অগ্রাধিকার। তাঁর নেতৃত্বে পর্ষদ দায়িত্ব নেওয়ার পরপরই সুষ্ঠু শিল্প সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্য ৮১টি শ্রমিক ফেডারেশনের সঙ্গে সংলাপ করেছে।

যুক্তরাষ্ট্র প্রশাসন পাল্টা শুল্কের নির্বাহী আদেশে বলা হয়, বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা তৈরি পোশাকে যদি কমপক্ষে ২০ শতাংশ যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহার করা হয়, তবে সেই পণ্যের ওপর নতুন আরোপ শুল্ক থেকে আনুপাতিকভাবে অব্যাহতি পাওয়া যাবে। বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিজিএমইএ নেতারা মার্কিন প্রতিনিধিদলের কাছে জানতে চান, রপ্তানি পণ্যে কী ফর্মুলায় বা প্রক্রিয়ায় যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহারের মূল্যায়ন এবং স্বচ্ছতা ও ট্রেসেবিলিটি নির্ণয় করা হবে। এ ব্যাপারে দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন তাঁরা।

যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানি বাড়াতে চট্টগ্রাম বন্দরের কাছে একটি গুদাম স্থাপনের সম্ভাব্যতা নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। তাঁরা বলেন এটি বাংলাদেশি উদ্যোগ বা মার্কিন উদ্যোগ বা যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠা করা যেতে পারে। এই গুদাম তৈরি পোশাক রপ্তানিতে লিড টাইম কমাতে ভূমিকা রাখবে।

বিজিএমইএ নেতারা বলেন, যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা আমদানির পাশাপাশি পলিয়েস্টার, নাইলনের মতো ম্যান মেইড ফাইবার আমদানি করতে আগ্রহী। এ ব্যাপারে বিস্তারিত তথ্য জানতে তাঁরা মার্কিন দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন। বিষয়টি নিয়ে ফরেন কমার্শিয়াল সার্ভিস অ্যাটাশে পল জি ফ্রস্ট বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকারের সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সঙ্গে কথা বলে তাঁরা বিস্তারিত জানাবেন।

মার্কিন দূতাবাসের প্রতিনিধিদল বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানি বাড়াতে আগামী মে মাসে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় উদ্যোগের সিলেক্ট ইউএসএর সম্মেলনে অংশগ্রহণের জন্য বিজিএমইএ নেতাদের পরামর্শ দেন। তাঁরা বলেন, এটি বাংলাদেশি তৈরি পোশাকশিল্পের উদ্যোক্তাদের যুক্তরাষ্ট্রে ব্যবসায়িক নেটওয়ার্কিং তৈরিতে সহায়তা করবে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র ব জ এমইএর

এছাড়াও পড়ুন:

“শিক্ষার শত্রু কাউছার” প্রতিবাদ সভায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী

সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কাউছার বিদ্যালয়ে হামলা, গেট ভাঙচুর, মালামাল আটকে রাখা এবং শিক্ষক–কর্মচারীদের হেনস্তা করেছেন এমন অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শিক্ষক–অভিভাবক ও এলাকাবাসী।

শনিবার (১৫ নভেম্বর) পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তাঁকে “শিক্ষার শত্রু” আখ্যা দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।

সভায় সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া লিটন।

তিনি বলেন, ূযে ব্যক্তি বাহিনী নিয়ে এসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাণ্ডব চালায়, সে সমাজের কল্যাণে নয় ধ্বংসাত্মক শক্তির অংশ। কাউছার-সহ যারা এই হামলার সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতেই হবে।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন,বিদ্যালয়ের শান্ত পরিবেশ নষ্ট করতে এ ধরনের সন্ত্রাসী আচরণ ক্ষমার অযোগ্য। শিক্ষক শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে পড়েছে। এমন ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি ছাড়া শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা সম্ভব নয়।

সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া মাসুম আরও ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন,বিদ্যালয়ে হামলা মানে পুরো সমাজকে আঘাত করা।

কাউছার নামের ওই ব্যক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে, তা কোনোভাবেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয় এটা সরাসরি অপরাধ। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা ছাড়া উপায় থাকবে না।

প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আলমগীর হোসেন, সহসভাপতি অধ্যাপক ইব্রাহিম মিয়া, যুগ্ম সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, রফিকুল ইসলাম, যুব সম্পাদক এডভোকেট আল আমিন শাহ, এডভোকেট আনোয়ার হোসেন, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দীন, ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি শামসুল আলম, যুবদল নেতা আওলাদ হোসেন, সাবেক অভিভাবক সদস্য নাজিমউদ্দীন, এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক–অভিভাবকসহ স্থানীয় শতাধিক মানুষ।

বক্তারা একসঙ্গে ঘোষণা দেন,শিক্ষার শত্রু কাউছারকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলার সাহস না পায়।


 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • “শিক্ষার শত্রু কাউছার” প্রতিবাদ সভায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী