তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দেশের উত্তর জনপদের আরেক নদ দুধকুমারের পানিও ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বইছে। শুধু উত্তরের এসব নদ–নদীই নয়, বাড়ছে ব্রহ্মপুত্র, যমুনা ও পদ্মার পানিও। পানি বেড়ে যাওয়ার ফলে উত্তরের তিন জেলা নীলফামারী, কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাটের নদীসংলগ্ন বিভিন্ন এলাকা ইতিমধ্যে প্লাবিত হয়েছে। পদ্মা ও যমুনাপাড়ের জেলাগুলোর কিছু এলাকাতে পানি ঢুকে গেছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর এবং বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের মধ্যে টানা বৃষ্টি ও উজানের পাহাড়ি ঢলের কারণেই নদ–নদীগুলোতে পানি বাড়ছে।

বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান আজ বৃহস্পতিবার সকালে প্রথম আলোকে বলেন, তিস্তার ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপৎসীমার ১৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে আজ। আর দুধকুমারের পানি কুড়িগ্রামের পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আগামী ১২ ঘণ্টায় দুটির পানিই বাড়তে থাকবে। তবে আগামীকাল থেকে পরিস্থিতি স্থিতিশীল হতে থাকবে।

তিস্তা ও দুধকুমারের পানি বেড়ে যাওয়ার ফলে নীলফামারী, লালমনিরহাট ও কুড়িগ্রামের নদীসংলগ্ন এলাকায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। এলাকার নিম্নাঞ্চলে সাময়িক বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে জানায় বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র।

তিস্তা–দুধকুমারের পাশাপাশি বাড়ছে পদ্মা, যমুনা ও ব্রহ্মপুত্রের পানি। এসব নদ–নদীর পানি বাড়তে পারে আগামী তিন দিন—এমনটাই জানান সরদার উদয় রায়হান। তিনি বলেন, এসব নদ–নদীর কাছাকাছি এলাকার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হতে পারে।

ইতিমধ্যে সাগরে একটি লঘুচাপ দেখা দিয়েছে। এর প্রভাবে আজ, বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলের জেলাগুলোতে বৃষ্টি হতে পারে। গত দুই দিন থেকে রংপুর বিভাগের জেলাগুলোতে অপেক্ষাকৃত বেশি বৃষ্টি হয়। সর্বশেষ ১২ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয় রংপুর বিভাগের জেলা দিনাজপুরে, ৮৯ মিলিমিটার।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: স ন ট ম ট র ওপর দ য় নদ নদ

এছাড়াও পড়ুন:

ঘোষণার এক মাস পরও মাস্কের ‘আমেরিকা পার্টি’র দেখা নেই

বিশ্বের শীর্ষ ধনী ইলন মাস্ক গত ৫ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রে একটি নতুন রাজনৈতিক দল গঠনের ঘোষণা দিয়েছিলেন। নাম দিয়েছেন ‘আমেরিকা পার্টি’। তবে এখনো দলটির কোনো তৎপরতা দৃশ্যমান নেই।

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বহুল আলোচিত ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাস করার পর ক্ষুব্ধ হয়ে অনলাইনে একটি জরিপ চালিয়েছিলেন তাঁরই সাবেক ঘনিষ্ঠ মিত্র মাস্ক। জরিপের ফল দেখে রাজনৈতিক দল গঠনে উৎসাহিত হন তিনি।

মাস্ক তখন বলেছিলেন, তাঁর এ দল হবে মধ্যপন্থী মানুষের জন্য এবং মূলধারার রিপাবলিকান ও ডেমোক্রেটিক পার্টির বাইরে ভিন্ন এক রাজনৈতিক বিকল্প।

তবে মাস্কের ঘোষণার এক মাসের বেশি পার হলেও তিনি দল গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় কোনো আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নেননি। সাম্প্রতিক সপ্তাহগুলোতে দলের বিষয়ে প্রকাশ্যে কোনো মন্তব্যও করতে দেখা যায়নি তাঁকে।

আরও পড়ুনট্রাম্পের জন্য কীভাবে হুমকি হয়ে উঠতে পারে ইলন মাস্কের দল০৮ জুলাই ২০২৫

তবে মাস্কের এ উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন মার্কিন ব্যবসায়ী ও বিনিয়োগকারী মার্ক কিউবান। আর ডেমোক্রেটিক পার্টির প্রধান সতর্ক করে বলেন, মাস্কের এ প্রচেষ্টাকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া উচিত।

এদিকে বেশ কিছু জনমত জরিপে দেখা গেছে, অনেক মার্কিন তৃতীয় একটি রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন অনুভব করলেও মাস্কের দলের প্রতি তাঁদের আগ্রহ তুলনামূলক কম। চলতি সপ্তাহে সরকারি দক্ষতা বিভাগ (ডিওজিই) এবং এক্সএআইয়ে মাস্কের এক শীর্ষ সহকর্মী ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি নিজস্ব পডকাস্ট শুরু করতে যাচ্ছেন। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, মাস্কের দল গঠনের পরিকল্পনায় তাঁর কিছু সহকর্মীর আগ্রহ কমে এসেছে।

বর্তমানে ‘আমেরিকা পার্টি’ একটি ‘ধারণা’র পর্যায়ে রয়েছে। মাস্ক যদি সত্যিই তাঁর দলকে শক্তিশালী করতে চান, তবে তাঁকে এখনই আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নিতে হবে, প্রার্থীদের সমর্থন ও জনমত অর্জনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।

এদিকে মাস্ক তৃতীয় একটি দল গঠনের কথা ভাবলেও, এখনো রিপাবলিকান দলের একজন বড় দাতা হিসেবে রয়ে গেছেন তিনি। গত মাসের শেষে প্রকাশিত নির্বাচনী তহবিল রেকর্ড অনুযায়ী, তিনি মোট দেড় কোটি ডলার বিভিন্ন রিপাবলিকান সুপার প্যাকে দান করেছেন। এর মধ্যে ট্রাম্প–সমর্থিত প্রতিষ্ঠানগুলোও রয়েছে। নতুন দল গঠনের ঘোষণা দেওয়া ও ট্রাম্পের সঙ্গে বিবাদ শুরু হওয়ার আগে মাস্ক এসব অর্থ দিয়েছিলেন।

আরও পড়ুনযুক্তরাষ্ট্রে নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করার ঘোষণা দিলেন ইলন মাস্ক ০৬ জুলাই ২০২৫

বিশ্লেষকেরা বলছেন, নতুন রাজনৈতিক দল গঠন করা সহজ কাজ নয়। এর জন্য প্রয়োজন ফেডারেল নির্বাচন কমিশনে আনুষ্ঠানিক নথি জমা দেওয়া, বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যের ভোটারদের স্বাক্ষর সংগ্রহ করা, আগামী বছর কংগ্রেস নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন, এমন প্রার্থী নিয়োগ ও জনমত গঠন। এসব কাজ সম্পন্ন করা ছাড়া কোনো দল কার্যকরভাবে প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না।

বেশ কিছু জনমত জরিপে দেখা গেছে, অনেক মার্কিন তৃতীয় একটি রাজনৈতিক দলের প্রয়োজন অনুভব করলেও মাস্কের দলের প্রতি তাঁদের আগ্রহ তুলনামূলক কম। চলতি সপ্তাহে সরকারি দক্ষতা বিভাগ এবং এক্সএআইয়ে মাস্কের এক শীর্ষ সহকর্মী ঘোষণা দিয়েছেন যে তিনি নিজস্ব পডকাস্ট শুরু করতে যাচ্ছেন। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে, মাস্কের দল গঠনের পরিকল্পনায় তাঁর কিছু সহকর্মীর আগ্রহ কমে এসেছে।

বর্তমানে ‘আমেরিকা পার্টি’ একটি ‘ধারণা’র পর্যায়ে রয়েছে। মাস্ক যদি সত্যিই তাঁর দলকে শক্তিশালী করতে চান, তবে তাঁকে এখনই আনুষ্ঠানিক পদক্ষেপ নিতে হবে, প্রার্থীদের সমর্থন ও জনমত অর্জনের দিকে মনোযোগ দিতে হবে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মাস্কের আগ্রহ, সম্পদ ও নেতৃত্বের ক্ষমতার ওপর নির্ভর করবে নতুন এ দলের ভবিষ্যৎ রাজনৈতিক প্রভাব।

আরও পড়ুনমাস্কের নতুন রাজনৈতিক দল নিয়ে কী বললেন ট্রাম্প০৭ জুলাই ২০২৫আরও পড়ুনইলন মাস্ক কেন নতুন দল গঠন করছেন, কী করতে চান তিনি০৬ জুলাই ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ