নোবেল পুরস্কারের বিষয়ে জানতে নরওয়ের অর্থমন্ত্রীকে ট্রাম্পের ফোন
Published: 14th, August 2025 GMT
গত মাসে যখন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নরওয়ের অর্থমন্ত্রীকে বাণিজ্য শুল্ক নিয়ে আলোচনা করার জন্য ফোন করেছিলেন, তখন তিনি নোবেল শান্তি পুরস্কার সম্পর্কেও জিজ্ঞাসা করেছিলেন। নরওয়ের দৈনিক ড্যাগেনস নায়ারিংস্লিভ বৃহস্পতিবার এ তথ্য জানিয়েছে।
ইসরায়েল, পাকিস্তান ও কম্বোডিয়াসহ বেশ কয়েকটি দেশ শান্তি চুক্তি বা যুদ্ধবিরতির মধ্যস্থতার জন্য ট্রাম্পের নাম নোবেল শান্তি পুরস্কারের জন্য প্রস্তাব করেছে। ট্রাম্প নিজেই বলেছেন, তিনি নরওয়েজিয়ার দেওয়া সম্মাননা পাওয়ার যোগ্য।
অজ্ঞাত সূত্রের বরাত দিয়ে ড্যাগেনস নায়ারিংস্লিভ বলেছে, “অপ্রত্যাশিতভাবে, যখন অর্থমন্ত্রী জেন্স স্টলটেনবার্গ অসলোতে রাস্তায় হাঁটছিলেন, তখন ডোনাল্ড ট্রাম্প ফোন করেছিলেন। তিনি নোবেল পুরস্কার চেয়েছিলেন এবং শুল্ক নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছিলেন।”
হোয়াইট হাউস, নরওয়ের অর্থ মন্ত্রণালয় এবং নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধের জবাব দেয়নি।
প্রতি বছর শত শত প্রার্থীর মধ্য থেকে নরওয়েজিয়ান নোবেল কমিটি বিজয়ীকে নির্বাচিত করে। এই কমিটির পাঁচ সদস্যকে নিয়োগ দেয় নরওয়ের পার্লামেন্ট। অক্টোবরে অসলোতে নোবেল বিজয়ীদের নাম ঘোষণা করা হয়।
নরওয়েজিয়ান সংবাদপত্রটি জানিয়েছে, স্টলটেনবার্গের সাথে কথোপকথনে ট্রাম্প এই পুরস্কারের কথা প্রথমবারের মতো উল্লেখ করেননি। অর্থাৎ এর আগেও ট্রাম্প নোবেল পুরস্কারের বিষয়ে স্টলটেনবার্গের সঙ্গে আলাপ করেছিলেন।
স্টলটেনবার্গের উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী জোনাস স্টোয়েরের সাথে ট্রাম্পের ফোনালাপের আগে বাণিজ্য শুল্ক এবং অর্থনৈতিক সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা করার জন্য এই আহ্বান জানানো হয়েছিল।
ট্রাম্প নোবেল পুরস্কারকে একটি ইস্যু করেছেন কিনা জানতে চাইলে স্টলটেনবার্গ বলেন, “আমি কথোপকথনের বিষয়বস্তুতে আর যাব না।”
ঢাকা/শাহেদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ন ব ল প রস ক র প রস ক র র কর ছ ল ন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
‘আপনারে কে এখানে বসাইছে, আমি তাঁর কইলজা খুলিয়ালামু’
কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শামছুল ইসলাম এবং নাঙ্গলকোট উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ও সাবেক স্থানীয় সংসদ সদস্য আব্দুল গফুর ভূঁইয়ার মুঠোফোনে কথোপকথনের একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। অডিওতে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের উদ্দেশে আব্দুল গফুর ভূঁইয়াকে বলতে শোনা যায়, ‘আপনারে কে এখানে বসাইছে, আমি তাঁর কইলজা খুলিয়ালামু। আপনার কইলজাও খুলমু।’
আব্দুল গফুর ভূঁইয়া ২০০১ সালে কুমিল্লা-১১ আসনের (নাঙ্গলকোট) সংসদ সদস্য ছিলেন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে নাঙ্গলকোটের সঙ্গে কুমিল্লা আদর্শ সদর ও লালমাই উপজেলা নিয়ে কুমিল্লা-১০ আসন গঠিত হয়। মঙ্গলবার তাঁর কথোপকথনের অডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। অডিওটি প্রায় তিন মাস আগের বলে জানা গেছে।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, নাঙ্গলকোট উপজেলার ভোলাইন উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি পদ নিয়ে বোর্ড চেয়ারম্যানকে হুমকি দেন আব্দুল গফুর ভূঁইয়া। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটির সভাপতির পদে আছেন আব্দুল গফুর।
তবে আব্দুল গফুর ভূঁইয়া দাবি করেছেন, এটি তাঁর কল রেকর্ড নয়। এডিট করে রেকর্ড প্রচার করা হয়েছে। এর পর থেকেই তাঁর মুঠোফোনটি বন্ধ। তবে মঙ্গলবার রাতে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে কথোপকথনের বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের ১৮ মে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার প্রেস উইংয়ের সদস্য শামসুদ্দিন দিদারের বড় ভাই মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীনকে ভোলাইন উচ্চবিদ্যালয় ও কলেজের সভাপতি হিসেবে সুপারিশ করেন কুমিল্লার জেলা প্রশাসক। পরে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান তা প্রতিষ্ঠানপ্রধানের কাছে পাঠান। এর পরপরই আব্দুল গফুর ভূঁইয়া কল করে শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও নানা হুমকি দেন। ঘটনার পর চেয়ারম্যানের অনুরোধে মীর আবু সালেহ শামসুদ্দীন সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি নেন। এরপর আব্দুল গফুর ভূঁইয়া প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি হন।
ছড়িয়ে পড়া ১ মিনিট ৫২ সেকেন্ডের কল রেকর্ডে আব্দুল গফুর ভূঁইয়াকে উত্তেজিত অবস্থায় বলতে শোনা যায়, ‘মিডিয়া সেলের সদস্য এখন নাই, এখন নাই সে।’ এ সময় শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বলেন, ‘সে আমার কাছে এসে পরিচয় দিয়েছে।’ এরপর গফুর ভূঁইয়া বলে ওঠেন, ‘পরিচয় দেক, পরিচয় দিলেও একজন সংসদ সদস্যকে আপনি অপমান করতে পারেন না। আমি আপনার অফিসে আসি, আপনাকে অপমান করব। আপনার কত বড় কইলজা হইছে, আমি দেখমু আপনারে। আপনারে কে এখানে বসাইছে, আমি তাঁর কইলজা খুলিয়ালামু। আপনার কইলজাও খুলমু। বেয়াদবির একটা সীমা আছে। একটা টোকাইর ইয়া নিয়েছেন আপনে। সে একজন কো-অর্ডিনেটর, সে চাকরি করে এখানে, টোকাই।’
এ সময় শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে বলতে শোনা যায়, ‘উনি পরিচয় দিয়েছেন আমাকে উনি খালেদা জিয়ার প্রেস...’। এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গে গফুর ভূঁইয়া বলে ওঠেন, ‘ঠিক আছে, ঠিক আছে। আপনি আমাকে বলতেন যে এ রকম একটা তদবির আছে, ইয়া আছে, ওখানে তো সে ঢুকতে পারবে না। তার ভাই ঢুকতে পারবে না, আপনি ভেজাল লাগাইছেন। একজন ইয়া করি আপনি এটার দায়দায়িত্ব নিতে হবে। আমি কালকে আপনার বিরুদ্ধে মামলা করব। কত বড় সাহস আপনার, আমি দেখে নেব আপনাকে।...আপনাকে আমি বলছি আপনি এটা সুন্দরভাবে করেন, না হলে কিন্তু আপনার ক্ষতি হবে। আপনি অপমানিত হবেন। আমি আপনাকে দেখে নেব। আমি টোকাই না।’
জানতে চাইলে কুমিল্লা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মো. শামছুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঘটনাটি প্রায় তিন মাস আগের। আজকে কীভাবে কল রেকর্ডটি ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে, আমি বলতে পারব না। এ ছাড়া এ নিয়ে আমি আর কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কল রেকর্ডটি শুনেছি কিছুটা। এটা দলীয় কোনো বিষয় না। বিষয়টি একান্তই গফুর ভূঁইয়ার ব্যক্তিগত। তবে বিষয়টি দুঃখজনক।’