নেত্রকোনায় পরিত্যক্ত ভবন ভাঙার সময় ছাদ ধসে ৩ শ্রমিক নিহত
Published: 14th, August 2025 GMT
নেত্রকোনায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) সেচ কার্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত ভবনের ছাদ ভাঙার সময় ধসে পড়া ছাদের নিচে চাপা পড়ে তিনজন শ্রমিক নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার বিকেল পাঁচটার দিকে শহরের নাগড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে।
নেত্রকোনা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী শাহনেওয়াজ প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত শ্রমিকেরা হলেন জেলার আটপাড়া উপজেলার মাটিকাটা গ্রামের আবদুস সালাম (৪০), সদর উপজেলার হাটখলা গ্রামের আবদুল হান্নান (৪২) ও পলাশহাটি গ্রামের দিপু মিয়া (৪০)। এ ঘটনায় সাইফুল ও হাসান নামের আরও দুই শ্রমিক আহত হয়েছেন। তাঁদের নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন শ্রমিক বলেন, তাঁরা ৯ জন শ্রমিক একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের হয়ে বিএডিসি (সেচ) কার্যালয়ের একটি পরিত্যক্ত ভবন অপসারণের কাজ করছিলেন। বিকেল পাঁচটার দিকে ভাঙার সময় হঠাৎ ভবনের গ্যারেজের অংশের ছাদটি ধসে পড়ে। তখন পাঁচ শ্রমিক ছাদের নিচে চাপা পড়েন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয় লোকজন ছুটে এসে উদ্ধারকাজ চালান।
উদ্ধারকাজে অংশ নেওয়া নাগড়া এলাকার বাসিন্দা রুবেল মিয়া বলেন, হঠাৎ শব্দ শুনে তিনিসহ কয়েকজন দৌড়ে ঘটনাস্থলে যান। সেখানে গিয়ে দেখেন ছাদ ধসে পড়েছে। এ সময় ছাদের নিচে আওয়াজ শুনে তাঁরা দুজনকে টেনে বের করে মাথায় পানি ঢালেন। কিছুক্ষণ পর খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের লোকজন এসে আরও তিনজনকে উদ্ধার করেন। তাঁদের মধ্যে ঘটনাস্থলেই তিনজন মারা যান। অন্য দুজনকে হাসপাতালে নেওয়া হয়।
নেত্রকোনা ফায়ার সার্ভিসের কর্মকর্তা আজিজুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা তিনজনকে মৃত ও দুজনকে আহত অবস্থায় পেয়েছি। আহতদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠিয়েছি।’
নেত্রকোনা মডেল থানার ওসি কাজী শাহনেওয়াজ বলেন, নিহত ব্যক্তিদের সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে মর্গে পাঠানো হয়েছে। স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন জানিয়েছেন, ভবন ভাঙার নিয়োজিত শ্রমিকদের কারও কোনো সুরক্ষাসামগ্রী ছিল না।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে নেত্রকোনা সেচ ভবনের নির্বাহী প্রকৌশলী সারওয়ার জাহান বলেন, মেসার্স আল মোবারক নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে পাঁচ লাখ টাকা চুক্তিমূল্যে ভবনটি টেন্ডার দেওয়া হয়। ভবন ভাঙার সময় তিনজন শ্রমিকের মৃত্যু ও দুজন আহতের ঘটনায় আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খবর পেয়ে জেলা প্রশাসকের রুটিন দায়িত্বে থাকা অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) রাফিকুজ্জামান, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সুখময় সরকারসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
মালয়েশিয়ার স্থানীয় শ্রমিকদের মতো সুবিধা পাবেন বাংলাদেশিরা: প্রেস
প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বলেছেন, “মালয়েশিয়ায় শ্রমিকরা যেসব সামাজিক সুরক্ষা সুবিধা পায়, বাংলাদেশি শ্রমিকরা এখন থেকে একই সুবিধা সে দেশ থেকে পাবেন। এছাড়া মালয়েশিয়ায় যারা যান, তাদের ইংরেজি ভাষায় দুর্বলতা আছে বা অনেকে মালয় ভাষা খুব সহজে রপ্ত করতে পারেন না। তাদের জন্য বাংলা ভাষায় অভিযোগ দাখিলের সুবিধা প্রাপ্তির কথা প্রধান উপদেষ্টার সফরে আলোচনা হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) ঢাকায় ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠক নিয়ে আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
প্রধান উপদেষ্টার মালয়েশিয়া সফরের বিষয়ে প্রেস সচিব বলেন, “মালয়েশিয়া সফর খুবই ফলপ্রসূ ছিল। আমরা বলব, এটা একটা ল্যান্ডমার্ক ট্যুর ছিল। এর ফলে বাংলাদেশের সঙ্গে মালয়েশিয়ার যে সুসম্পর্ক ছিল, সেটি আরো শক্তিশালী হয়েছে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শ্রমিক কল্যাণ নিয়ে কথা হয়েছে। এটা নিয়ে আমাদের কিছু অগ্রগতি ছিল। মালয়েশিয়ায় যারা অবৈধ বা কাগজপত্রবিহীন শ্রমিক আছেন, তাদের বৈধ করার বিষয়ে প্রবাসী কল্যাণ উপদেষ্টা বৈঠকে জানিয়েছেন। এছাড়া আমাদের পক্ষ থেকে মালয়েশিয়ায় নিরাপত্তারক্ষী এবং কেয়ার গিভার নিয়োগের কথা বলা হয়েছে। আমরা আশা করছি, এ বিষয়ে সামনে অগ্রগতি দেখব। একইসঙ্গে মালয়েশিয়ায় বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের কাজের সুযোগ দিতে ‘গ্র্যাজুয়েট প্লাস’ প্রোগ্রামের কথা বলা হয়েছে। তারা বলেছেন, এটা নিয়ে কাজ করবেন।”
শফিকুল আলম বলেন, “আমরা খুব দ্রুত মালয়েশিয়ার সঙ্গে ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট করব। মালয়েশিয়া থেকে আমরা ৩ বিলিয়ন ডলারের খাদ্য ও অন্যান্য পণ্য আমদানি করি। আমাদের মধ্যে যেন বাণিজ্য আরো ত্বরান্বিত হয়, সেজন্য এফটিএ নিয়ে আলোচনা খুব দ্রুত করব। ইতোমধ্যে আমাদের সঙ্গে জাপান, সিঙ্গাপুরের এফটিএ নিয়ে আলোচনা হচ্ছে।”
ঢাকা/আসাদ/সাইফ