ইবিতে শিক্ষক-শিবির বিতণ্ডা: বিএনপিপন্থি শিক্ষক সংগঠনগুলোর নিন্দা
Published: 14th, August 2025 GMT
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) এক শিক্ষকের সঙ্গে শাখা ছাত্রশিবিরের নেতাদের বাকবিতণ্ডার ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বিএনপিপন্থি ইউনিভার্সিটি টিচার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ইউট্যাব) কেন্দ্রীয় ও ইবি শাখাসহ জিয়া পরিষদ।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) কেন্দ্রীয় সংগঠনের প্রেসিডেন্ট অধ্যাপক ড. এবিএম ওবায়দুল ইসলাম ও মহাসচিব অধ্যাপক ড.
এর আগে, গত বুধবার শাখা ইউট্যাব ও জিয়া পরিষদের নেতৃবৃন্দের স্বাক্ষরিত পৃথক প্রতিবাদলিপি দেওয়া হয়।
আরো পড়ুন:
রাবিতে নিয়োগ পাননি জামায়াত নেতার সুপারিশপ্রাপ্ত সেই প্রার্থী
কুবিতে র্যাগিং: ২ শিক্ষার্থী বহিষ্কারসহ বিভাগীয় প্রধান ও ছাত্র উপদেষ্টাকে শোকজ
ইউট্যাবের প্রেসিডেন্ট ও মহাসচিব এক বিবৃতিতে বলেন, ইবির লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক, বিএনপিপন্থি সাদা দলের আহ্বায়ক ও ইউট্যাবের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি ড. মতিনুর রহমান বুধবার (১৩ আগস্ট) তার পূর্বনির্ধারিত ক্লাসে উপস্থিত হন। সেখানে দেখেন, শ্রেণিবহির্ভূত কিছু শিক্ষার্থী রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালান করছে। এমতাবস্থায় অধ্যাপক মতিনুর রহমান তাদেরকে রাজনৈতিক কার্যক্রম স্থগিত করে কক্ষ ত্যাগ করতে বলেন। কিন্তু উল্টো ইসলামী ছাত্রশিবিরের কতিপয় উচ্ছৃঙ্খল নেতাকর্মী অধ্যাপক একেএম মতিনুর রহমানের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ ও তাকে লাঞ্ছিত করে এবং বাকবিতণ্ডায় লিপ্ত হয়। একপর্যায়ে অধ্যাপক মতিনুর রহমান তার পূর্বনির্ধারিত ক্লাস না নিয়ে সেখান থেকে চলে যান এবং ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।
তারা বলেন, এ ঘটনার প্রেক্ষিতে স্পষ্ট হয় যে, ছাত্রশিবির একজন সিনিয়র অধ্যাপকের সঙ্গে যে ধরনের আচরণ করেছে, তা অনাকাঙ্ক্ষিত এবং রাজনৈতিক শিষ্টাচার বহির্ভূত। আমরা এ ধরনের ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেইসঙ্গে অভিযুক্ত শিবির নেতাদের তাদের অন্যায় আচরণের জন্য অধ্যাপক মতিনুর রহমানের কাছে ক্ষমা প্রার্থনার আহ্বান জানাই।
তারা আরো বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস বাদ দিয়ে রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী না হয়েও বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাসরুমে রাজনৈতিক কার্যক্রম করা সম্পূর্ণরুপে বেআইনি এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেই আমরা মনে করি।
ইবি জিয়া পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফারুকুজ্জামান খান ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম এক বিবৃতিতে বলেন, একজন শিক্ষকের প্রতি যেকোনো ধরনের অবমাননাকর আচরণ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ, শিক্ষক-শিক্ষার্থী সম্পর্ক এবং সার্বিক পেশাদারিত্ব ও মর্যাদার পরিপন্থি।
এছাড়া ইউট্যাব ইবি শাখার সভাপতি অধ্যাপক ড. তোজাম্মেল হোসেন ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রশিদুজ্জামান একই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, পাঠদানের নির্দিষ্ট সময়ে শ্রেণিকক্ষে রাজনৈতিক কার্যক্রম পরিচালনা শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট করে এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীর সম্পর্কের জন্য হুমকিস্বরূপ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে এ ধরনের কর্মকাণ্ড বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের আহ্বান জানাই।
বিবৃতিতে জিয়া পরিষদ ইবি শাখা প্রশাসনের নিকট বেশকিছু দাবি জানান। দাবিগুলো হলো- বিশ্ববিদ্যালয়ের সব সংগঠনকে প্রাতিষ্ঠানিক নিয়ম-নীতি, প্রক্রিয়া-প্রকরণ ও সময়সূচি মেনে কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কর্তৃক প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা; বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের অধিকার ও সম্মান অক্ষুণ্ন রাখতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা; ক্যাম্পাসে রাজনৈতিক মতপার্থক্য যেন কখনোই শিক্ষার পরিবেশ নষ্ট না করে, সেই লক্ষ্যে কার্যকর মনিটরিং, সচেতনতা সৃষ্টি এবং প্রযোজ্য ক্ষেত্রে শাস্তি মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা।
গত বুধবার লোকপ্রশাসন বিভাগের সভাপতির অনুমতি নিয়ে বিভাগের ২০২৪-২৫ বর্ষের নবীন শিক্ষার্থীদের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে ক্লাসরুমে যান শিবিরের প্রতিনিধি দল। ৫/৭ মিনিট পর শিডিউল ক্লাস নিতে আসেন বিভাগের অধ্যাপক ড. এ কে এম মতিনুর রহমান।
তিনি ক্লাসে এসে শিবির নেতাদের দেখে বের হয়ে যেতে বললে বাগবিতণ্ডা হয়। পরে বিভাগের শিক্ষক, প্রক্টরিয়াল বডি ও শিবির প্রতিনিধির সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে ওই শিক্ষকের নিকট শিবির নেতাদের ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে বিষয়টির মীমাংসা করা হয়।
ঢাকা/তানিম/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এনপ মত ন র রহম ন ইউট য ব পর চ ল ধরন র ইসল ম ঘটন র গ রহণ
এছাড়াও পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচনে বাম জোটের শীর্ষ ৩ পদে নেই নারী প্রার্থী
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে বামপন্থি সংগঠনগুলো জোট আকারে নির্বাচন করবে।
জোট থেকে ভিপি হিসেবে সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের একাংশের ঢাবি শাখার সভাপতি মোজাম্মেল হক, জিএস হিসেবে ছাত্র ইউনিয়নের একাংশের ঢাবি শাখার সভাপতি মেঘমল্লার বসু এবং এজিএস হিসেবে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাবির আহমেদ জুবেল নির্বাচন করবেন।
বামপন্থি একাধিক নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত দুইদিন ধরে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে শীর্ষ তিন পদে প্রার্থী চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল এখনো চূড়ান্ত হয়নি। এ নিয়ে আজ মঙ্গলবার আবারো আলোচনায় বসবে সংগঠনগুলো এবং আজকের আলোচনায়ই প্যানেল চূড়ান্ত করা হবে।
প্যানেল কবে ঘোষণা করা হবে এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সম্ভাব্য ভিপি পদপ্রার্থী মোজাম্মেল হক রাইজিংবিডি ডটকমকে বলেন, “আমরা বৃহস্পতিবারের মধ্যে দেওয়ার চেষ্টা করব। যদি না পারি, তাহলে রোববার নিশ্চিত।”
শীর্ষ তিন পদে কোনো নারী প্রার্থী না থাকাই নেতাকর্মীদের মধ্যে অসন্তোষ রয়েছে বলেও জানা গেছে। তবে এজিএস পদে নারী প্রার্থী দেওয়া হতে পারে বলেও মনে করছেন অনেক নেতাকর্মী। এক্ষেত্রে বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর ঢাবি শাখার সভাপতি নূজিয়া হাসিন রাশা ও সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের (একাংশ) সভাপতি মুক্তা বাড়ৈ আলোচনায় রয়েছেন।
বাম সংগঠনগুলোর পক্ষ থেকে ২০১৯ সালের মতো এবারো অধিকাংশ হল সংসদগুলোতে নেতাকর্মী সংকটের কারণে প্যানেল দিতে পারছে না বাম সংগঠনগুলো। জগন্নাথ হলে বাম সংগঠনগুলোর প্যানেল হতে পারে। যেকোনো হলের তুলনায় এই হলটিতে তুলনামূলক ভোট বেশি পাবে বলেই ধারণা তাদের।
শীর্ষ তিন পদে নারী প্রার্থীদের অনুপস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে মোজাম্মেল বলেন, “বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন, ব্যক্তিদের নিয়ে আমরা একটা সম্মিলিত প্যানেল করার জন্য আলাপ-আলোচনা করছি। নারী, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু, প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের আমরা যোগ্যতার ভিত্তিতে অগ্রাধিকার দেব।”
তফসিল অনুযায়ী আগামী ৯ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত হবে ডাকসু নির্বাচন। ইতোমধ্যে খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে। চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সোমবার।
এ নির্বাচনের মনোনয়নপত্র বিতরণ শুরু হয়েছে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) থেকে, চলবে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত। মনোনয়নপত্র গ্রহণের সবশেষ তারিখ ১৯ আগস্ট। পরদিন ২০ আগস্ট ও ২১ আগস্ট প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হবে।
মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিন ২৫ আগস্ট। প্রার্থীদের চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে ২৬ আগস্ট।
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী