বর্জ্যের ‘পাহাড়ে’ তিন পরিবারের বসবাস, যেভাবে দিন কাটে তাঁদের
Published: 15th, August 2025 GMT
চারদিকে বর্জ্যের পাহাড়, মাঝে ছোট এক টুকরা জায়গায় পাশাপাশি তিনটি টিনের ঘরে থাকেন তিন পরিবারের ৭ শিশুসহ অন্তত ১৫ জন নারী-পুরুষ। ওই জায়গায় যেতে হয় ৪৫ ফুট উঁচু বর্জ্যের স্তূপ ডিঙিয়ে। স্থানীয় লোকজনের ভাষায় ময়লার পাহাড়।
বসতভিটায় সারা দিন মশা-মাছির উৎপাত, কাক, কুকুর ও পোকামাকড়ের রাজত্ব। ঘরের ভেতরেও মশা-মাছির ভনভন শব্দ, পোকামাকড়ের ঘরবসতি। সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যায় ঘর। তখন রান্নাবান্না, খাওয়াদাওয়া, গোসল কোনোমতে সামলানো গেলেও ঘুমানো যায় না। কিলবিল করে ছুটতে থাকে পোকামাকড়। কক্সবাজার শহরের প্রাণকেন্দ্র বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাট হতদরিদ্র তিন পরিবার এমন দুর্বিষহ জীবন যাপন করতে বাধ্য হচ্ছে।
কক্সবাজার শহরের প্রধান নদী বাঁকখালী এখন দখল-দূষণে মৃতপ্রায়। উচ্চ আদালতের নিষেধাজ্ঞা থাকা সত্ত্বেও শহরের ময়লা-আবর্জনা ফেলে কস্তুরাঘাট এলাকার নদীর তলদেশ ভরাট চলছে।
পোকামাকড়ের ঘরবসতি
কস্তুরাঘাট বদরমোকাম জামে মসজিদ থেকে দুই লেনের সদ্য নির্মিত পাকা সড়ক ধরে বাঁকখালী সেতুর দিকে ৫০০ থেকে ৬০০ ফুট গেলে সামনে পড়ে তিন রাস্তার মোড়। তার পূর্ব পাশে আড়াই বর্গ একর ভূমিতে দাঁড়িয়ে আছে গোলাকৃতির ৪০ থেকে ৪৫ ফুট উঁচু বর্জ্যের পাহাড়।
গত সোমবার দুপুরে ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, পৌরসভার দুটি ট্রাকে ফেলা হচ্ছে ময়লা-আবর্জনা। একটি খননযন্ত্র দিয়ে সেই বর্জ্য চাপা দেওয়া হচ্ছে। বর্জ্যের স্তূপ ডিঙানো ছাড়া তিন পরিবারের বসতবাড়িতে যাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু স্তূপে পা রাখলেই বৃষ্টির পানিতে পচে নরম হওয়া আবর্জনার গভীরে ঢুকে যায়। ওই অবস্থায় কোনোমতে ঘরগুলোতে গিয়ে যা দেখা গেল, তা রীতিমতো অবর্ণনীয়। ময়লার গাদায় ঘরের সামনে-পেছনে খোলা জায়গাতে হাঁস-মুরগি, গরুর সঙ্গে খেলছে কয়েকটি শিশু। ঘরগুলোর এক পাশে ভাঙা একটি শৌচাগার।
আবর্জনার দুর্গন্ধ, পোকা–মাকড় আর নোংরা পানি ঢোকে বাড়িগুলোতে। এই অবস্থায় থাকতে বাধ্য হচ্ছেন তিন পরিবারের সদস্যরা। গত সোমবার কক্সবাজার পৌরসভার বাঁকখালী নদীর কস্তুরাঘাটে.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ত ন পর ব র র বর জ য র
এছাড়াও পড়ুন:
দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার
দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।
পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।