বেঁচে ফিরেছে বানরটি, তবে সন্তান হারিয়ে বিষণ্ন
Published: 15th, August 2025 GMT
পাঁচতলা ভবনের ছাদে ঘুরে বেড়াত। হঠাৎ রাজধানীর গেন্ডারিয়ার ভবনটির ছাদ থেকে পড়ে গেল বানরটি। পেটের বাচ্চা বের হয়ে মারা গেল। গর্ভফুল অর্ধেক বের হয়ে ঝুলে ছিল। তবে চিকিৎসার পর এখন অনেকটাই সুস্থ, দ্রুতই নিজ ঠিকানায় ফিরবে বানরটি।
বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের দায়িত্বপ্রাপ্তরা গত ২১ জুলাই গুরুতর আহত বানরটিকে উদ্ধার করেন। আগারগাঁওয়ে অধিদপ্তরের নির্দিষ্ট কক্ষে রেখে প্রাথমিক পরিচর্যা করা হয়। পরে প্রাণী অধিকার নিয়ে কাজ করা বেসরকারি সংগঠন পিপল ফর অ্যানিমেল ওয়েলফেয়ার ফাউন্ডেশনের (‘প’ ফাউন্ডেশন) প লাইফ কেয়ার ক্লিনিকের ভেটেরিনারি চিকিৎসকদের মাধ্যমে চিকিৎসা শুরু হয়। তবে অধিদপ্তরে রেখে বানরটির যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। পরে মিরপুরে প লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে রেখেই চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার এ ক্লিনিকে গিয়ে দেখা যায়, একটি বড় খাঁচার মধ্যে বানরটিকে রাখা হয়েছে। সেখানকার কেয়ারগিভাররা বানরটির নাম দিয়েছেন ‘মনু’। পাকা আম, পেয়ারা আর বাদাম পছন্দের খাবার। কলা তেমন একটা পছন্দ না। প্রথম দিকে দুর্বলতার কারণে নিস্তেজ থাকলেও সুস্থ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মেজাজের মাত্রাটা দিনে দিনে বাড়ছে। খাঁচার কোন ফাঁক দিয়ে বের হওয়া যাবে, তা খুঁজে বের করার জন্য ব্যস্ত মনু। আকাশের দিকে উদাস হয়ে তাকিয়ে থাকে।
প ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারপারসন স্থপতি রাকিবুল হক বললেন, পানি খেতে দিলে মাঝেমধ্যে পানি ফেলে দিয়ে ওই বাটি মাথায় দিয়ে বসে থাকে মনু। পুরান ঢাকায় পাড়া দাপিয়ে বেড়াত, এখানে খাঁচায় বন্দী থাকতে ভালো লাগছে না, তা বানরটির আচরণ দেখেই বোঝা যাচ্ছে। এ ছাড়া সন্তান মারা যাওয়ায় এমনিতেও বিষণ্ন থাকে। বন অধিদপ্তরের দায়িত্বপ্রাপ্তদের মাধ্যমে দ্রুতই বানরটিকে পুরান ঢাকায় নিজ ঠিকানায় ছেড়ে দেওয়া হবে।
গেন্ডারিয়ায় একটি ভবনের ছাদ থেকে পড়ে গিয়ে গুরুতর আহত বানরটি এখন অনেকটাই সুস্থ।বন অধিদপ্তরের বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বন্য প্রাণী পরিদর্শক অসীম মল্লিক প্রথম আলোকে বলেন, বানরটি ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার পর ভবনের একজন বাসিন্দা বানরটিকে উদ্ধার করার জন্য ফোন দেন। সেদিন রাতেই উদ্ধার করে বন অধিদপ্তরে আনা হয়। বানরটির শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ ছিল। এ ধরনের গুরুতর আহত বানরকে চিকিৎসা দেওয়ার মতো সক্ষমতা অধিদপ্তরের নেই। তাই বেসরকারি সংগঠন প ফাউন্ডেশনের সহায়তা নেওয়া হয়। দুই দিন অধিদপ্তরে বানরটিকে রাখা হলেও চিকিৎসা সেভাবে দেওয়া সম্ভব হচ্ছিল না। সার্বক্ষণিক দেখভালের জন্য পরে বানরটিকে মিরপুরের ক্লিনিকে পাঠানো হয়।
গতকাল প ফাউন্ডেশনের প লাইফ কেয়ার ক্লিনিকের ভেটেরিনারি সার্জন আরিফা আক্তার ক্লিনিকের অস্ত্রোপচারকক্ষে নিয়ে বানরটিকে পরীক্ষা করে দেখেন। মনুর মেজাজ গরম থাকায় আরও দুজন মিলে ধরে রাখতে হচ্ছিল। মুখ দিয়ে অদ্ভুত ভাষায় রাগও দেখাচ্ছিল।
সব মিলে বানরটি এখন অনেকটাই সুস্থ। তবে ছেড়ে দেওয়ার আগে আলট্রাসাউন্ডসহ আরও কিছু পরীক্ষা করতে হবে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ঝালকাঠিতে রাতের আঁধারে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের পোস্টার
ঝালকাঠিতে ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ঝালকাঠি জেলা শাখার সদস্যরা শহরের বিভিন্ন স্থানে পোস্টার লাগিয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) রাতে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের পক্ষে বরিশাল-ঝালকাঠি আঞ্চলিক মহাসড়কের নলছিটি থানার বিসিক, প্রতাপ, বরইতলা, ভৈরবপাশা, ষাটপাকিয়া, শ্রীরামপুর, আমিরাবাদসহ সড়কের পাশে থাকা বিভিন্ন মাইলফলকে এসব পোস্টার লাগানো হয়।
শুক্রবার (১৫ আগস্ট) সকালে বিষয়টি সকলে নজরে আসে।
একাধিক সূত্র জানায়, রাতের আঁধারেই এসব পোস্টার লাগানো হয়। ঘটনার পরপরই ঝালকাঠি-পিরোজপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের ঝালকাঠি পেট্রোল পাম্প মোড়সহ শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো হয়। পাশাপাশি টহলে রয়েছে জেলা পুলিশের বিভিন্ন টিম। পুলিশের বিশেষ নজরদারি ও সন্দেহভাজনদের জিজ্ঞাসাবাদও চলছে।
জেলা বিএনপির সদস্য (দপ্তরের দায়িত্বে) অ্যাডভোকেট মো. মিজানুর রহমান মুবিন বলেন, ‘‘নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগ রাতের আঁধারে পোস্টারিং করে জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে। গণঅভ্যুত্থানের পর তাদের সাহস নেই প্রকাশ্যে রাজনৈতিক কর্মসূচি করার, তাই চোরের মতো রাতের আঁধারে পোস্টার লাগিয়েছে।’’
এদিকে, নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের ঝালকাঠি জেলা শাখার সভাপতি আব্দুল্লাহ আল মাসুদ মধু তার ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে পোস্টারের ছবি পোস্ট করে লিখেছেন, ‘‘১৫ আগস্ট জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ঝালকাঠি জেলা ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে ঝালকাঠির বিভিন্ন জায়গায় পোস্টার লাগানো হয়েছে। যারা পোস্টার লাগিয়েছে, তাদের আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা।’’
নলছিটি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবদুস ছালাম বলেন, “পোস্টারগুলো কারা লাগিয়েছে, সে বিষয়ে এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্ট কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টি অনুসন্ধান করে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘মহাসড়কে টহল পুলিশ কর্তব্য পালন করছে। হয়তো রাতের আঁধারে কেউ চোখ ফাঁকি দিয়ে পোস্টার লাগিয়েছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। একই সঙ্গে যারা এ কাজ করেছে, তাদের শনাক্তেরও চেষ্টা চলছে।”
ঢাকা/অলোক/এস