নিয়োগকর্তার হস্তক্ষেপ অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে: শ্রম সচিব
Published: 15th, August 2025 GMT
অন্যায্য শ্রম অনুশীলন ও ইউনিয়নবিরোধী বৈষম্য বাংলাদেশের জন্য একটি বড় বাধা। শ্রমিক নেতাদের ভয়ভীতি, ইউনিয়ন কার্যক্রমে নিয়োগকর্তার হস্তক্ষেপ এবং বেআইনি বরখাস্তের মতো ঘটনাগুলো শিল্প-শান্তি ও জাতীয় অর্থনৈতিক উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করে।
শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এএইচএম সফিকুজ্জামান শুক্রবার গাজীপুরে "অন্যায্য শ্রম অনুশীলন ও ইউনিয়নবিরোধী বৈষম্যের প্রতিকার’ শীর্ষক একটি প্রশিক্ষণ কর্মশালা উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।
সচিব বলেন, “সামাজিক সংলাপের মাধ্যমে ন্যায্য শ্রমনীতি প্রণয়ন এবং শ্রমিক-মালিক সম্পর্ক শক্তিশালী করা সম্ভব। ট্রেড ইউনিয়নগুলোর কার্যকারিতা বৃদ্ধিতে শ্রমিক-মালিক ঐক্য অপরিহার্য।”
তিনি বলেন, “ডিসেম্বর ২০২৪-এ, সরকার শ্রমিক ও মালিক সংগঠনগুলোর সাথে অংশীদারিত্বে "উন্নত শিল্প সম্পর্ক ব্যবস্থা’ গড়ে তোলার ঘোষণা দেয়। আজকের কর্মশালা সেই লক্ষ্য বাস্তবায়নের আরেকটি পদক্ষেপ।”
সফিকুজ্জামান বলেন, “আইএলও কনভেনশন বাস্তবায়ন বাংলাদেশ আইএলও কনভেনশন সি-১৫৫ (পেশাগত নিরাপত্তা), সি-১৮৭ (অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ), এবং সি-১৯০ (কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি রোধ) অনুস্বাক্ষরের প্রক্রিয়ায় আছে। শ্রম অধিদপ্তর ট্রেড ইউনিয়ন রেজিস্ট্রেশন পদ্ধতি সম্পূর্ণ ডিজিটাল করছে এবং একটি ব্যবহারকারী-বান্ধব অ্যাপ উন্নয়নের কাজ চলছে।ভবিষ্যতে কলকারখানা পরিদর্শন অধিদপ্তরের সব সেবাও ডিজিটাল করা হবে। আইএলও এর ‘অ্যাডভান্সিং ডিসেন্ট ওয়ার্ক ইন বাংলাদেশ’ প্রকল্পের মাধ্যমে সরকার ট্রেড ইউনিয়ন নিবন্ধন, শ্রম বিরোধ নিষ্পত্তি এবং কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা প্রতিরোধে কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে।”
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক এ কে এম তরিকুল আলম।
এছাড়া সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আইএলও প্রতিনিধি নিরান রামজুঠান। অন্যান্যের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা, শ্রমিক ও মালিকপক্ষের প্রতিনিধি, শ্রম অধিদপ্তর এবং কলকারখানা ও প্রতিষ্ঠান পরিদর্শন অধিদপ্তরের কর্মকর্তা এবং আইএলও এর বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এসবি
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
শ্রম আদালতের মামলার জট নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়া হবে: শ্রম সচিব
শ্রম আদালতের মামলার জট নিরসনে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
তিনি বলেন, ‘‘শ্রম আদালতে যে মামলার জট রয়েছে তা দ্রুত আন্তরিকতার সহিত নিষ্পত্তি করতে হবে। শ্রম আদালতগুলিতে জনবল ঘাটতি পূরণসহ অন্যান্য প্রয়োজনীয় লজিস্টিক সাপোর্ট প্রদানে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় থেকে সকল পদক্ষেপ নেওয়া হবে।”
বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) আইএলও (ILO)-এর উদ্যোগে গাজীপুরে অনুষ্ঠিত শ্রম আদালতের বিভিন্ন বিচারকদের জন্য আয়োজিত এক প্রশিক্ষণে শ্রম সচিব এ কথা বলেন।
শ্রম আদালতের বিচারকদের অংশগ্রহণে ‘Labour Justice Source: A Training for Judges’ শীর্ষক চার দিনব্যাপী প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সচিব বলেন, “শ্রমিক-মালিক বিরোধ ও সংশ্লিষ্ট মামলাসমূহ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে বিচারকদের ভূমিকার গুরুত্ব তুলে ধরেন। এক্ষেত্রে বিভিন্ন জেলার শ্রম আদালতের বিচারকদের দ্রুত মামলা নিষ্পত্তির তাগিদ দেন।”
শ্রম আদালতে মামলা জট কমাতে আরও শ্রম আদালতের সংখ্যা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, “মামলার সংখ্যা কমাতে বিচারকদের উদ্দ্যোগী হওয়া প্রয়োজন। এরইমধ্যে পেশাগত স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আইএলও কনভেনশন C155, C187 এবং কর্মক্ষেত্রে নারীর প্রতি সহিংসতা ও হয়রানি বন্ধে C190 অনুস্বাক্ষরের প্রক্রিয়া চলছে।”
অনুস্বাক্ষরের পর কর্মক্ষেত্রে সহিংসতা ও হয়রানি বন্ধে আইনি কাঠামো দান করে পর্যায়ক্রমে বাস্তবায়ন করা হবে।
এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে শ্রম আইন ও ন্যায়বিচার প্রক্রিয়ার দক্ষতা বৃদ্ধি পেয়েছে বলে উপস্থিতরা বলেন। তারা আশাবাদ ব্যক্ত করেন, এ ধরনের প্রশিক্ষণ শ্রম খাতের উন্নয়ন ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রশিক্ষণে আইএলও-এর প্রতিনিধি, শ্রম আদালতের বিচারকবৃন্দ এবং সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।
ঢাকা/নঈমুদ্দীন/এস