নোয়াখালীতে চাঁদা না পেয়ে প্রবাসীর হাতের কব্জি কাটল সন্ত্রাসীরা
Published: 16th, August 2025 GMT
নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলায় দাবি করা চাঁদার টাকা না পাওয়ায় মো. সালাউদ্দিন রিদন (৩২) নামে এক প্রবাসীকে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এতে তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমসহ হাতের কবজি বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।
আহত মো. সালাউদ্দিন রিদন উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার আলীপুর এলাকার গনি বাড়ির লাকি বেগমের ছেলে। পরিবারের অভিযোগ, হামলাকারীরা এলাকার চিহ্নিত মাদক কারবারি।
শনিবার (১৬ আগস্ট) দুপুরে উপজেলার চৌমুহনী পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের চৌরাস্তার আলীপুরের কন্ট্রাক্টর পোলের সামনে এ ঘটনা ঘটে।
গুরুতর আহত অবস্থায় রিদনকে প্রথমে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।
ভুক্তভোগী প্রবাসী রিদনের মামা আব্দুল কাদের অভিযোগ করে বলেন, “রিদন তার মায়ের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকায় চাকরি করে জীবিকা নির্বাহ করেন। গত ১ বছর আগে তিনি দেশে আসেন। আগামী সেপ্টেম্বর মাসে তার নতুন করে কাতার যাওয়ার কথা ছিল। তার মা বর্তমানে দক্ষিণ আফ্রিকায় রয়েছেন। গত ৩-৪ মাস আগে রিদন তাদের আলীপুর গ্রামের নিজ বাড়ির কিছু পৈত্রিক সম্পত্তি বিক্রি করে দেন।”
তিনি বলেন, “ওই সম্পত্তি বিক্রির পর স্থানীয় রকি, সোহাগ, রাহাত, ফাহাদ ও জাকের রিদনের কাছে চাঁদা দাবি করে আসছে। তিনি চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তাদের সঙ্গে বিরোধ দেখা দেয়। একপর্যায়ে বিরোধ এড়াতে রিদন তার মায়ের পরামর্শে উপজেলার কন্ট্রাক্টর পোল এলাকায় বাসা ভাড়া নেন।”
তিনি অভিযোগ করে আরো বলেন, “শনিবার দুপুরে রিদন মোটরসাইকেলযোগে ভাড়া বাসা থেকে শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার পথে চৌমুহনী পৌরসভার চৌরাস্তার আলীপুরের জয়নাল আবেদিন স্কুল এলাকায় গতিরোধ করে রকি, সোহাগ, রাহাত, ফাহাদসহ তাদের সহযোগীরা রিদনকে এলাপাতাড়ি কুপিয়ে বাম হাতের কবজি কেটে দেয় এবং কনিষ্ঠা আঙ্গুল বিচ্ছিন্ন করে ফেলে। ওই সময় হামলাকারীরা তার সঙ্গে থাকা ৫ লাখ টাকা, একটি মোটরসাইকেল ও একটি মোবাইল ছিনিয়ে নেয়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়।”
অভিযুক্ত রকি, সোহাগ, রাহাত, ফাহাদ মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ করেন মামা আব্দুল কাদের।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে রকি, সোহাগ ও রাহাতের মুঠোফোনে কল দেওয়া হলেও সংযোগ পাওয়া যায়নি।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লিটন দেওয়ান বলেন, “খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে কিছু ভিডিও ফুটেজ সংগ্রহ করে। ভুক্তভোগীর পরিবার মামলা দিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
ঢাকা/সুজন/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র আল প র উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
বিপৎসীমার ওপরে দুধকুমারের পানি, ভাঙনে দিশেহারা নদীপাড়ের মানুষ
কুড়িগ্রামের পাটেশ্বরী পয়েন্টে দুধকুমার নদের পানি বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে পানি বাড়লেও এখনো বিপৎসীমার নিচে আছে। নিচু এলাকাগুলোতে প্রবেশ করছে বন্যার পানি। তবে, এখনো বাসবাড়িতে পানি প্রবেশ করেনি।
এদিকে, পানি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দুধকুমার, তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীপাড়ে ভাঙন দেখা দিয়েছে। দুধকুমারের ভাঙনে কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর, তিস্তার ভাঙনে উলিপুর উপজেলার থেতরাই ও ব্রহ্মপুত্রের ভাঙনে উলিপুরের বেগমগঞ্জ এলাকার মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অন্তত ৩০টি পয়েন্টে নদ-নদীর ভাঙন অব্যাহত আছে। এক সপ্তাহের নদীভাঙনে এসব এলাকার শতাধিক ঘর-বাড়িসহ মসজিদ, ফসলি জমি নদীতে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের হুমকিতে আছে আরো শত শত ঘর-বাড়ি, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ নানা স্থাপনা।
ভাঙনকবলিতরা জানিয়েছেন, নদীভাঙনের কবলে পড়ে ঘর-বাড়ি সরিয়ে নিচ্ছেন তারা। ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নিতে দীর্ঘদিন ধরে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগাযোগ করা হলেও কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ তাদের।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার যাত্রাপুর ইউনিয়নের বানিয়াপাড়া এলাকার লেবু মিয়া বলেছেন, দুধকুমারে পানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বানিয়া পাড়ার প্রায় ১ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তীব্র ভাঙন শুরু হয়েছে। যাদের ঘর-বাড়ি, গাছপালা নদের কিনারে পড়েছে, তারা সেগুলো সরিয়ে নিচ্ছেন। নদীভাঙন রোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে পুরো বানিয়া পাড়া গ্রাম নদীগর্ভে চলে যাবে।
কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলা বেগমগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বাবলু মিয়া জানিয়েছেন, বেগমগঞ্জের তিনটি পয়েন্টে ভাঙন অব্যাহত আছে। বার বার বলার পরও ভাঙন প্রতিরোধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কুড়িগ্রাম কার্যালয়ের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানিয়েছেন, কুড়িগ্রাম জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত দুধকুমার, তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্র নদীতে বন্যার পুর্বাভাস আছে। বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার তথ্য অনুযায়ী, দুধকুমারের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে বিপৎসীমার ৬ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ভাঙনকবলিত ৩০টি পয়েন্টের মধ্যে ২০টি পয়েন্টে জরুরি ভিত্তিতে বালুভর্তি জিও ব্যাগ ফেলা হচ্ছে।
ঢাকা/বাদশাহ্/রফিক