জাকসুর মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমাদানে সময় বৃদ্ধির দাবি
Published: 17th, August 2025 GMT
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) নির্বাচনের ঘোষিত তফসিলে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের জন্য মাত্র দুইদিন সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন সময় বাড়ানোর দাবি জানিয়েছে।
ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী, আগামী ১৮ ও ১৯ আগস্ট সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত প্রার্থীরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমা দিতে পারবেন। তবে মাত্র দুদিনের এ স্বল্প সময়ে প্রার্থীদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা কঠিন হয়ে পড়বে বলে মনে করছেন বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড.
আরো পড়ুন:
ডাকসু নির্বাচন: ষষ্ঠ দিনে ৬৪ জনের মনোনয়ন সংগ্রহ
মাদক সেবনরত অবস্থায় ৪ ঢাবি শিক্ষার্থী আটক
জাকসু নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের জন্য মাত্র দুইদিন সময় নির্ধারণ করায় অধিকাংশ শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। অন্যদিকে, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই প্রক্রিয়ায় কমিশন নিজে চারদিন সময় নিচ্ছে—যা ছাত্র সংগঠনগুলোর সমালোচনার জন্ম দিয়েছে।
তাদের অভিযোগ, প্রার্থীদের ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ করা হলেও নির্বাচন কমিশন নিজের কাজে পর্যাপ্ত সময় নিচ্ছে। শিক্ষার্থীদের দাবি এতো কম সময় দিলে অনেক প্রার্থী নানা জরুরি পরিস্থিতির কারণে মনোনয়ন সংগ্রহ করতে না পেরে নির্বাচনী প্রক্রিয়া থেকে বঞ্ছিত হতে পারেন।
বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) জাবি শাখার আহ্বায়ক আরিফুজ্জামান উজ্জল বলেন, “যেখানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমাদানের জন্য সাতদিন সময় দেওয়া হয়েছে, সেখানে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে মাত্র দুইদিন- এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়। কেউ যদি গুরুতর অসুস্থ হয়ে যায় বা হঠাৎ পরিবারের কেউ মারা যায়, তাহলে কি সে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ হারাবে? মনোনয়ন সংগ্রহ ও জমাদানের সময়সীমা অন্তত ৪-৫ দিন পর্যন্ত বাড়ানো উচিত। এতে প্রার্থীরা প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করার যথেষ্ট সুযোগ পাবেন।”
তিনি বলেন, “মনোনয়নপত্র বিতরণ ও জমাদান দুইদিনে শেষ করা এবং যাচাই-বাছাইয়ে চারদিন সময় নেওয়া—এটা কখনোই যুক্তিসংগত নয়? মনোনয়নের জন্য মাত্র দুইদিন আর যাচাই-বাছাইয়ে এত সময়—এটার যৌক্তিকতা কোথায়?”
জাবি শাখা ছাত্রশিবিরের সভাপতি মুহিবুর রহমান মুহিব বলেন, “জাকসু নির্বাচনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ ও জমাদানের জন্য মাত্র দুইদিন সময় নির্ধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য নানা ধরনের সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। অনেকেই হয়তো ওই দুইদিন ক্লাস, পরীক্ষা বা জরুরি কোনো কাজে ব্যস্ত থাকতে পারেন। কারো গুরুতর অসুস্থতা হতে পারে বা হঠাৎ পারিবারিক জরুরি পরিস্থিতি দেখা দিতে পারে, যা তাদের মনোনয়ন সংগ্রহে বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে।”
তিনি বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরে থাকা শিক্ষার্থীদের এত অল্প সময়ে এসে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করাও কষ্টসাধ্য। ফলে যোগ্য অনেক প্রার্থী এই গুরুত্বপূর্ণ প্রক্রিয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকবেন।”
বহু প্রতীক্ষিত জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৫। বিশ্ববিদ্যালয়ে সর্বশেষ জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ১৯৯১ সালে। প্রায় তিন দশক পর এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
ঢাকা/আহসান/মেহেদী
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর প রক র য় ন সময় ন দ ন সময় আগস ট
এছাড়াও পড়ুন:
আট দিনে এনসিপির ১ হাজার মনোনয়নপত্র বিক্রি, লক্ষ্য ৩ হাজার
ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করার পর গত আট দিনে ১ হাজার ১১টি মনোনয়নপত্র বিক্রি করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। মনোনয়নপত্র বিতরণের পূর্বঘোষিত সময় শেষ হলেও তা আরও সাত দিন বাড়ানো হয়েছে। ২০ নভেম্বর পর্যন্ত এনসিপির মনোনয়নপত্র কেনা যাবে।
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর বাংলামোটরে দলের অস্থায়ী কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক এবং কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী।
এ সময় তিন হাজার মনোনয়নপত্র বিক্রির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে উল্লেখ করে এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক বলেন, ‘আগামী কয়েক দিনে আমরা এই লক্ষ্যমাত্রা ইনশা আল্লাহ ছুঁতে পারব।’
নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী বলেন, ‘আমরা জনগণের জনপ্রতিনিধিদের সংসদে পাঠানোর জন্য দলীয় মনোনয়নপত্র ছেড়েছিলাম। ইতিমধ্যে ১ হাজার ১১টি মনোনয়নপত্র বিক্রি হয়েছে। আমরা মানুষের কাছ থেকে অনেক ভালো সাড়া পেয়েছি। চিকিৎসক, আইনজীবী, পেশাজীবী থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী, আলেম-ওলামা, শিক্ষক—সব জায়গা থেকে আমরা আবেদন পাচ্ছি। জনগণের উদ্দীপনা ও আগ্রহ দেখে আমরা এই সময়সীমা আরও বাড়িয়েছি। এটা আগামী ২০ নভেম্বর পর্যন্ত চলবে।’
বাংলামোটরের রূপায়ণ ট্রেড সেন্টারের দ্বিতীয় তলায় এসে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে। এ ছাড়া অনলাইন থেকেও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করা যাবে বলে জানান এনসিপির কেন্দ্রীয় নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান।
সাংবাদিকদের মধ্যে যাঁরা সংসদে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করতে চান, তাঁদেরও এনসিপির মনোনয়নপত্র কেনার আহ্বান জানান নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। তিনি বলেন, ‘কারণ, আপনাদের যে মজুরি, এটা বাংলাদেশে এখনো ঠিক হয়নি। আপনারা সংসদে গিয়ে আপনাদের মজুরি, মালিকদের নিষ্পেষণ-নিপীড়ন নিয়ে কথা বলার জন্য মনোনয়নপত্র তুলবেন।’
এনসিপির মুখ্য সমন্বয়ক আরও বলেন, ‘ইনশা আল্লাহ পুরো বাংলাদেশের মানুষকে আমরা জানাতে চাই, আমরা দক্ষ ও যোগ্য প্রতিনিধি সংসদে পাঠাতে চাই। আমরা কোনো গডফাদারকে সংসদে পাঠাতে চাই না, চাঁদাবাজদের পাঠাতে চাই না, সন্ত্রাস যারা করে, তাদের পাঠাতে চাই না। আমরা কিছু ভালো মানুষকে পাঠাতে চাই।’
এর আগে ৬ নভেম্বর সন্ধ্যায় দলীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এনসিপির মনোনয়নপত্র বিতরণের প্রক্রিয়ার উদ্বোধন করেন নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী। প্রতিটি মনোনয়নপত্রের মূল্য ১০ হাজার টাকা। তবে জুলাই যোদ্ধা এবং স্বল্প আয়ের ব্যক্তিদের জন্য মনোনয়নপত্রের দাম ২ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।