চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (চাকসু) নির্বাচনে ছাত্র অধিকার পরিষদ ও ইসলামী ছাত্র মজলিস যৌথভাবে ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী সংসদ’ নামে প্যানেল ঘোষণা করেছে। 

শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ঝুপড়ির সামনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এ প্যানেল ঘোষণা করা হয়।

আরো পড়ুন:

গকসু নির্বাচন: জাহিদের প্রচারণায় সবুজের ডাক

রাকসুতে শিবিরের ইশতেহার, ১২ মাসের ২৪ প্রস্তাবনা

প্যানেলে সহ-সভাপতি (ভিপি) পদে প্রার্থী হয়েছেন  শাখা বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী তামজিদ উদ্দিন।

সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন শাখা ইসলামী ছাত্র মজলিসের সভাপতি ও আরবি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী সাকিব মাহামুদ রুমি এবং সহ-সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) পদে প্রার্থী হয়েছেন শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদের সদস্য সচিব ও বাংলাদেশ স্টাডিজ বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মো.

রোমান রহমান।

প্যানেলের অন্যান্য পদে প্রার্থী হয়েছেন- খেলাধুলা ও ক্রীড়া সম্পাদক মো. সবুজ, সহ-সম্পাদক মো. জাহাঙ্গীর আলম, সাহিত্য, সংস্কৃতি ও প্রকাশনা সম্পাদক দেওয়ান আব্দুর, সহ-সম্পাদক সিয়াম আল ইহসান, দপ্তর সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম সাঈদ, সহ-সম্পাদক শাফিন রহমান, ছাত্রী কল্যাণ সম্পাদক সানজিদা আক্তার, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক মাজহারুল ইসলাম, গবেষণা ও উদ্ভাবন সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম সুহান, সমাজসেবা ও পরিবেশ সম্পাদক মেহেদী হাসান, স্বাস্থ্য সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতান্ত্রিক আন্দোলন সম্পাদক জিয়াউদ্দিন সায়েম, ক্যারিয়ার ডেভেলপমেন্ট ও আন্তর্জাতিক সম্পাদক নাজমুস সাদাত, যোগাযোগ ও আবাসন সম্পাদক মো. নাজমুস সাকিব, সহ-সম্পাদক রায়হান আব্দুল্লাহ, আইন ও মানবাধিকার সম্পাদক ইয়াছিন আরাফাত ও পাঠাগার সম্পাদক মো. মারুফ। 

এছাড়া কার্যনির্বাহী সদস্য পদে মো. মুজাহিদুল্লাহ, কাজী বেলাল হোসেন, আবিদ হাসান ও সালমান মোহাম্মদ সজিব প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন।

ঢাকা/মিজান/মেহেদী

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ল ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

আল-কায়েদাপন্থী সংগঠন যেভাবে মালি দখলের দ্বারপ্রান্তে

জেএনআইএম যোদ্ধাদের সশস্ত্র দল জ্বালানি ট্যাংকার চলাচলের প্রধান রুটগুলো অবরোধ করে রেখেছে, যার ফলে রাজধানী বামাকোসহ মালির বিভিন্ন অঞ্চলে জ্বালানি সরবরাহ ব্যাহত হয়েছে।

আল-কায়েদা সংশ্লিষ্ট জিহাদি সংগঠন জামা’আত নুসরাতুল ইসলাম ওয়াল মুসলিমিন (জেএনআইএম) ধীরে ধীরে মালির রাজধানী বামাকোর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। সাম্প্রতিক কয়েক সপ্তাহে হামলা বেড়ে গেছে, যার মধ্যে সেনাবাহিনীর বহরেও আক্রমণ রয়েছে। যদি শহরটির পতন হয়, তাহলে পশ্চিম আফ্রিকার দেশটি কঠোর শরিয়াহ আইনের অধীনে একটি ইসলামি প্রজাতন্ত্র হওয়ার দিকে এগিয়ে যাবে।

এতে করে জিহাদিদের লক্ষ্য পূর্ণ হবে—যেমনটি তালেবান শাসিত আফগানিস্তান বা সিরিয়ায় হয়েছে, যেখানে সাবেক বিদ্রোহী আহমেদ আল-শারা (যিনি আবু মুহাম্মদ আল-জোলানি নামে পরিচিত ছিলেন) এখন রাষ্ট্রপ্রধান। জেএনআইএমের নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ইতিমধ্যে পোশাক নিয়ে বিধিনিষেধ এবং শাস্তি কার্যকর করা হচ্ছে এমন আদালতের মাধ্যমে, যা ২০২৪ সালে প্রকাশিত হিউম্যান রাইটস ওয়াচের এক প্রতিবেদনে ‘ন্যায়সংগত বিচার মানদণ্ড মানে না’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

আরও পড়ুনসুদানে আরএসএফের গণহত্যায় আরব আমিরাত ইন্ধন দিচ্ছে কেন০২ নভেম্বর ২০২৫ষষ্ঠ অভ্যুত্থানের মুখে মালি

মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্র দপ্তর মালিতে অবস্থানরত তাদের নাগরিকদের উদ্দেশে এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় সতর্কতা জারি করে জানায়, ‘ব্যবসায়িক ফ্লাইট ব্যবহার করে অবিলম্বে দেশ ত্যাগ করুন।’ কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়, অবকাঠামোগত সমস্যা এবং বামাকোর নিরাপত্তা পরিস্থিতির ‘অনিশ্চয়তা’। বুধবার অস্ট্রেলিয়া, জার্মানি ও ইতালিও তাদের নাগরিকদের যত দ্রুত সম্ভব দেশ ছাড়তে বলেছে।

মালির ভেতরের ও বাইরের পর্যবেক্ষকেরা বলছেন, পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি ঘটতে পারে এবং যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা আরও ইঙ্গিত দিচ্ছে যে দেশটি পাঁচ বছরের মধ্যে তৃতীয় সফল অভ্যুত্থানের দ্বারপ্রান্তে। ১৯৬০ সালে ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর এটি হবে ষষ্ঠ অভ্যুত্থান।

মালির সাবেক এক মন্ত্রী গার্ডিয়ানকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আমি নাটকীয় কথা শোনাতে চাই না, কিন্তু দেশটা আমাদের চোখের সামনে ধসে পড়ছে। কয়েক দিনের মধ্যেই ক্ষমতার আরেকটি রদবদল হলে আমি অবাক হব না।’ তিনি যোগ করেন, ‘৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে সাহেল অঞ্চলে একটি অভ্যুত্থান ঘটবে; মালি প্রথমে পড়বে, তারপর ২০২০ থেকে ২০২৩ সালের মতো ডমিনোর মতো একের পর এক দেশ পড়ে যাবে।’

সাহেল অঞ্চলের জিহাদি গোষ্ঠীগুলো তাদের আধিপত্য বিস্তার করছে। বিভক্ত অঞ্চল কি প্রতিরোধ করতে পারবে?

মালি দুই সপ্তাহ ধরে জ্বালানিসংকটে ভুগছে। কারণ, জেএনআইএম আইভরি কোস্ট, মৌরিতানিয়া এবং সেনেগাল থেকে আসা ট্রাকগুলো অবরোধ করে রেখেছে। চালক এবং সৈন্যদের হয় অপহরণ করা হয়েছে, নয় হত্যা করা হয়েছে—কিছু ক্ষেত্রে দুটোই ঘটেছে।

আরও পড়ুনযে কারণে সুদানে আজ রক্তক্ষয়ী সংঘাত১৯ এপ্রিল ২০২৩

ভূমিবেষ্টিত দেশ মালি আমদানিনির্ভর অর্থনীতির ওপর টিকে আছে। জ্বালানি ট্রাক না থাকায় বামাকোর অধিকাংশ এলাকায় জীবনযাত্রা থমকে গেছে। ফিলিং স্টেশনে লম্বা লাইন এখন সাধারণ দৃশ্য। শহরের অনেক জায়গায় বিদ্যুৎ নেই। দোকানপাট ও সুপারমার্কেট বন্ধ, অনেক মানুষ ঘর থেকে বেরোতে পারছে না, খাদ্যদ্রব্যের দাম বাড়ছে। স্কুলগুলো অন্তত ৯ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ।

জার্মান থিঙ্কট্যাংক কোনরাড আদেনায়ের ফাউন্ডেশনের সাহেল প্রোগ্রামের বামাকোভিত্তিক প্রধান উলফ লেসিং বলেন, পরের সপ্তাহটাই হতে পারে বর্তমান জান্তার জন্য নির্ধারক সময়। তিনি বলেন, ‘আমার ধারণা, পরের সপ্তাহ খুব খারাপ হবে। কারণ, বর্তমান মজুত শেষ হয়ে যাবে। রাজধানীকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পুনরায় সরবরাহ করার উপায় দেখা যাচ্ছে না।’

গার্ডিয়ান যেসব বিশ্লেষকের সঙ্গে কথা বলেছে, অনেকে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান। কারণ, সরকার সমালোচনা সহ্য করছে না।

ইমাম দিকোর চাওয়া শরিয়া শাসন

উলফ লেসিং বলেন, ‘এখনো কেউ সরকারের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছে না। কারণ, মানুষ জানে যদি এই সরকার পতন হয়, তাহলে এর পরের সরকার হবে ইসলামপন্থী এবং এই পরিস্থিতি বর্তমান সরকারের অবস্থানকে আরও শক্তিশালী করছে।’

জুন ২০২০ সালে নাগরিক সমাজ, ধর্মীয় সংগঠন ও বিরোধী দলগুলো ‘জুন ৫ মুভমেন্ট–র‍্যালি অব প্যাট্রিয়াটিক ফোর্সেস’ (এম ৫–আরএফপি) নামে জোট গঠন করে দুর্নীতি ও নিরাপত্তাহীনতার অভিযোগে গণবিক্ষোভ শুরু করে। লক্ষ্য ছিল গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম বুবাকার কেইতা সরকারের পতন।

এ জোটের সবচেয়ে আলোচিত ব্যক্তিদের একজন ছিলেন প্রভাবশালী ও বিতর্কিত ইমাম মাহমুদ দিকো, যিনি ১৯৯১ সালে প্রেসিডেন্ট মুসা ত্রাওরেকে উৎখাতে ভূমিকা রাখেন। দিকোর সংগঠিত আন্দোলন কেইতা সরকারের পতনে মুখ্য ভূমিকা রাখে।

ইকোভাসের (আফ্রিকার একটি আঞ্চলিক জোট) সঙ্গে এককেইতা বলেন, ‘ইমাম দিকো চান মালি ইসলামি শরিয়াহ আইনের দেশ হোক।’ কথা শুনে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। দুই মাসের মধ্যে তরুণ ক্যাপ্টেন আসিমি গোয়িতার নেতৃত্বে সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখল করে সংসদের পরিবর্তে ন্যাশনাল ট্রানজিশনাল কাউন্সিল (এনটিসি) গঠন করে। এক বছরের মধ্যে দ্বিতীয় অভ্যুত্থানের ফলে গোয়িতা রাষ্ট্রপ্রধান হন। কিন্তু জান্তার প্রতিশ্রুতির বেশির ভাগই পূরণ হয়নি। জান্তার অন্যতম নেতা কর্নেল মালিক দিয়াও–এর নেতৃত্বাধীন এনটিসি ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন করার কথা দিয়েও বারবার পিছিয়ে যাচ্ছে।

এদিকে বিদ্রোহে মৃতের সংখ্যা দ্রুত বেড়েছে; আফ্রিকা সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক স্টাডিজের তথ্য অনুযায়ী, ২০১২ সাল থেকে মোট নিহত ১৭ হাজার ৭০০ ছাড়িয়েছে, যার দুই-তৃতীয়াংশ ২০২০ সালের পর। অপহরণের মুক্তিপণ থেকে অর্থ পাওয়ায় জেএনআইএম এখন বেনিন, নাইজেরিয়া পর্যন্ত বিস্তার করছে।

মানবাধিকার সংস্থাগুলো অভিযোগ করেছে, ভাড়াটে বাহিনী ও সরকার–সমর্থক মিলিশিয়া গণগ্রেপ্তার ও নিপীড়নের সঙ্গে যুক্ত।

পথের শেষ কোথায়?

মালির জান্তা সরকার প্রায় নিঃসঙ্গ হয়ে গেছে। বুরকিনা ফাসো ও নাইজারের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার চুক্তি করেছে। কিন্তু তার ফল কী হবে, তা এখনো পরিষ্কার নয়। ইকোভাসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করায় তারা এ অঞ্চলের সামরিক সহায়তাও পাচ্ছে না।

বিদেশি কূটনৈতিক মিশনের উপস্থিতি কমে আসছে; জান্তা তাদের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে অনেক কর্মীকে বহিষ্কার করেছে। সেনাবাহিনীর মধ্যেও অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। প্রথম অভ্যুত্থানে জড়িত পাঁচ কর্নেলের মধ্যে দুজন—দিয়াও এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী সাদিও কামারা—আসিমি গোয়িতার সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে আলোচনায় আছেন।

এদিকে দিকো যিনি সরকারের সঙ্গে বিরোধে জড়িয়ে ২০২৩ সালে কূটনৈতিক পাসপোর্ট হারিয়ে আলজেরিয়ায় নির্বাসনে আছেন, দেশে ফিরবেন বলে আশা করা হচ্ছে।

একটি সূত্র জানিয়েছে, কিছু জেএনআইএম সদস্য চাইছে নির্বাসিত থাকা ইমাম দিকো দেশে ফিরুক, যাতে তারা মালির সরকারের বদলে তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে পারে। এটাই তাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য—মালিকে একটি ইসলামি রাষ্ট্রে পরিণত করা এবং তাঁরা এখন খুব কাছাকাছি।

এরোমো এগবেজুলে গার্ডিয়ানের পশ্চিম আফ্রিকার সংবাদদাতা

দ্য গার্ডিয়ান থেকে নেওয়া। ইংরেজি থেকে অনুবাদ।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আল-কায়েদাপন্থী সংগঠন যেভাবে মালি দখলের দ্বারপ্রান্তে