জীবনের পথচলায় আমরা প্রায়ই অতীতের ছায়ায় আটকে পড়ি। ভুল, ক্ষতি বা হারানো সুযোগের জন্য আফসোসে হৃদয় ভারী হয়ে ওঠে। বর্তমানে অসন্তোষ আর ভবিষ্যতের ভয় আমাদের শান্তি কেড়ে নেয়।

কিন্তু মুসলিমের জীবন এই আফসোসের শৃঙ্খলে বন্দী থাকার নয়। ইসলাম আমাদের শিক্ষা দেয় যে অতীতকে ছেড়ে দিয়ে বর্তমানকে আল্লাহর কদরে গ্রহণ করতে হবে এবং ভবিষ্যৎকে তাঁর রহমতের ওপর সমর্পণ করতে হবে।

কোনো বিপদ আল্লাহর অনুমতি ছাড়া আসে না। যে আল্লাহর ওপর ইমান আনে, তিনি তার হৃদয়কে পথ দেখান। আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞ।সুরা তাগাবুন, আয়াত: ১১

এ লেখায় আমরা দেখব কীভাবে ইমানের শক্তি আমাদের অতীতের বন্ধন থেকে মুক্ত করে, হৃদয়ে শান্তি নিয়ে আসে।

অতীতের আফসোস: মানসিক অশান্তির কারণ

জীবনের কোনো না কোনো মুহূর্তে আমরা অতীতের দিকে তাকাই। একটি ভুল সিদ্ধান্ত, হারানো সম্পর্ক বা উপেক্ষিত সুযোগ—এগুলো হৃদয়ে কাঁটার মতো বেঁধে। মাসের পর মাস, এমনকি বছরের পর বছর আমরা সেই কষ্টের স্মৃতি চিবিয়ে চলি। ‘যদি তখন এটা করতাম!’ বা ‘যদি সেটা ছেড়ে দিতাম!’—এই কথাগুলো মনে ঘুরপাক খায়।

এক প্রাচীন কবি বলেছিলেন, “আমার জানা নেই ‘যদি’ কোথায়?—এই ‘যদি’ আমাদের অন্ধকারে ডুবিয়ে দেয়।” (আলী সাল্লাবি, ইমান বিল কাযা ওয়াল কদার, দ্বিতীয় সংস্করণ, পৃ.

২৯০, দার আল-মা’রিফা, বৈরুত, ২০১১)

মনোবিজ্ঞানী ও সমাজকর্মীরা বলেন, অতীতের আফসোস ভুলে বর্তমানে বাঁচতে হবে, কারণ অতীত ফিরে আসে না।

আরও পড়ুনমুসলিম বিশ্বে আধুনিকতার ধারণা এল যেভাবে২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

যুক্তরাষ্ট্রের একজন অধ্যাপক তাঁর ছাত্রদের উদ্দেশে বলেছিলেন, ‘তোমাদের মধ্যে কে কাঠ কেটেছে?’ অনেকে হাত তুললেন। ‘আর কাঠের গুঁড়ো কেটেছে?’ কেউ হাত তুললেন না। তিনি বললেন, ‘কাঠের গুঁড়ো কাটা যায় না, কারণ তা ইতিমধ্যে অনেক বেশি কাটা। অতীতের আফসোসে ডুবে থাকা তেমনই অর্থহীন।’ (ডেল কার্নেগি, দুশ্চিন্তা ছেড়ে জীবন শুরু করুন, পৃ. ১৭৩)

এই আফসোস কেবল মুখে কুঞ্চনরেখা ফেলে বা পাকস্থলীতে ক্ষত সৃষ্টি করে, কোনো উপকার করে না।

অতীতকে ক্ষমা, বর্তমানকে গ্রহণ

মুসলিমের জীবন অতীতের অনুশোচনায় বন্দী থাকার নয়। ইমানের শক্তি তাকে অতীতের কষ্ট থেকে মুক্ত করবে, বর্তমানকে আল্লাহর পক্ষ থেকে বলে গ্রহণ করতে শেখাবে।

মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘শক্তিশালী মুমিন দুর্বল মুমিনের চেয়ে উত্তম এবং আল্লাহর কাছে প্রিয়তর। প্রতিটিতে কল্যাণ আছে। যা তোমার উপকারে আসে তার জন্য চেষ্টা করো, আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করো এবং অসহায় হয়ো না। যদি কোনো বিপদ আসে, তাহলে বলো, ‘নিয়তি আল্লাহর, তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন’। কারণ, ‘যদি’ শয়তানের কাজের দরজা খোলে।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৬৬৪)

কোরআন বলে, ‘কোনো বিপদ আল্লাহর অনুমতি ছাড়া আসে না। যে আল্লাহর ওপর ইমান আনে, তিনি তার হৃদয়কে পথ দেখান। আল্লাহ সবকিছু সম্পর্কে সর্বজ্ঞ।’ (সুরা তাগাবুন, আয়াত: ১১)

মুসলিমের স্লোগান হলো: ‘নিয়তি আল্লাহর, তিনি যা ইচ্ছা তাই করেন’, আলহামদু লিল্লাহি ‘আলা কুল্লি হাল’ (সব অবস্থায় আল্লাহর প্রশংসা)।

এক পারসি নেতা সাহাবিদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা কারা?’ তাঁরা বললেন, ‘আমরা আল্লাহর নিয়তি। তিনি আমাদের দিয়ে তোমাদের পরীক্ষা করেছেন, আর আমাদের তোমাদের দিয়ে।কেন অতীতের আফসোস অর্থহীন

অতীতের কষ্টে আটকে থাকা যেন ‘পিষে যাওয়া আটা পেষা’ বা ‘কাটা কাঠের গুঁড়ো কাটা।’ কবি বলেছেন, ‘যা চলে গেছে তা গেছে, আশা অদৃশ্য, তোমার কাছে আছে শুধু এই মুহূর্ত।’ (ইউসুফ আল–কারাজাভি, ইমান বিল কদার, পৃ. ১০১, দার আশ-শুরুক, কায়রো, ২০০০)

মনোবিজ্ঞানীরা বলেন, অতীতের দুশ্চিন্তা শুধু মুখে কুঞ্চনরেখা ফেলে বা পাকস্থলীতে ক্ষত সৃষ্টি করে। কিন্তু ইমানের দৃষ্টিতে, অতীতের প্রতিটি ঘটনা আল্লাহর কদরে ঘটে—এটি তাঁর পরীক্ষা। যার ইমান শক্তিশালী, তার হৃদয় আল্লাহর হাতে নিরাপদ।

ইসলামের ইতিহাসে একটি ঘটনা আছে, কোনো একটি অঞ্চল বিজয়ের সময় এক পারসি নেতা সাহাবিদের জিজ্ঞাসা করলেন, ‘তোমরা কারা?’ তাঁরা বললেন, ‘আমরা আল্লাহর নিয়তি। তিনি আমাদের দিয়ে তোমাদের পরীক্ষা করেছেন, আর আমাদের তোমাদের দিয়ে। তুমি যদি আকাশের মেঘেও থাকতে, আমরা তোমার কাছে উঠে যেতাম।’ (ইউসুফ আল–কারাজাভি, ইমান বিল কদার, পৃ. ১০১, দার আশ-শুরুক, কায়রো, ২০০০)

আরও পড়ুনমুসলিম বিশ্বে জ্ঞানচর্চার হারানো ঐতিহ্য ফিরে পাওয়ার উপায়২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫বর্তমানে জীবনযাপন মহানবীর (সা.) শিক্ষা

মহানবী (সা.) আমাদের শিখিয়েছেন, উপকারী কাজের জন্য চেষ্টা করতে হবে, আল্লাহর সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে এবং অসহায় হওয়া যাবে না। তিনি বলেছেন, ‘শক্তিশালী মুমিন দুর্বল মুমিনের চেয়ে উত্তম এবং আল্লাহর কাছে প্রিয়তর। যা তোমার উপকারে আসে তার জন্য চেষ্টা করো, আল্লাহর সাহায্য চাও এবং অসহায় হয়ো না।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৬৬৪)

কোরআন আমাদের আল্লাহর ওপর নির্ভর করতে শেখায়: ‘আমরা তোমারই ইবাদত করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি।’ (সুরা ফাতিহা, আয়াত: ৫)

শক্তিশালী মুমিন দুর্বল মুমিনের চেয়ে উত্তম এবং আল্লাহর কাছে প্রিয়তর। যা তোমার উপকারে আসে তার জন্য চেষ্টা করো, আল্লাহর সাহায্য চাও এবং অসহায় হয়ো না।’সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২৬৬৪

কবি বলেছেন, ‘যদি আল্লাহর সাহায্য না থাকে, তবে মানুষের সব চেষ্টা বৃথা’ (আলি সাল্লাবি, ইমান বিল কাযা ওয়াল কদার, দ্বিতীয় সংস্করণ, পৃ. ২৯১, দার আল-মা‘রিফা, বৈরুত, ২০১১)

অতীত থেকে মুক্তির পথ

অতীতের আফসোস থেকে মুক্তির জন্য ইসলাম আমাদের কয়েকটি সহজ পথ দেখায়:

তকদিরে বিশ্বাস আনুন: সবকিছু আল্লাহর ইচ্ছায় ঘটে। অতীতের কষ্টকে তাঁর পরীক্ষা হিসেবে গ্রহণ করুন।

‘যদি’ এড়িয়ে চলুন: এই শব্দ শয়তানের ফাঁদ। পরিবর্তে বলুন, ‘নিয়তি আল্লাহর, তিনি যা ইচ্ছা তা–ই করেন’।

বর্তমানে কাজ করুন: উপকারী কাজে মনোনিবেশ করুন, আল্লাহর সাহায্য চান। অতীতকে ‘পিষে যাওয়া আটা’ হিসেবে ছেড়ে দিন।

দোয়া করুন: কোরআন তিলাওয়াত করুন, নামাজে আল্লাহর কাছে শান্তি প্রার্থনা করুন।

আসুন, আমরা তকদিরে সন্তুষ্ট হয়ে এবং বর্তমানে কাজ করে আল্লাহর কাছে শান্তি প্রার্থনা করি। আল্লাহ আমাদের হৃদয়ে শান্তি দিন, জীবনকে বরকতময় করুন।

আরও পড়ুনইসলামোফোবিয়া মোকাবিলায় মুসলিম নারীর করণীয়২৬ আগস্ট ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র জন য চ ষ ট ত র জন য র পর ক ষ আম দ র বল ছ ন আল ল হ অসহ য উপক র গ রহণ র ওপর

এছাড়াও পড়ুন:

গ্রাম ও শহর: বৈষম্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়া যেখানে চলমান

তথ্যে-উপাত্তে দেখা যাচ্ছে, আর্থসামাজিক সূচকে গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য কমছে। পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টারের (পিপিআরসি) ‘স্টেট অব দ্য রিয়েল ইকোনমি’ শীর্ষক জাতীয় সমীক্ষায় দেখা যায়, গ্রাম ও শহরের মধ্যে বৈষম্য কমিয়ে আনতে বাংলাদেশ ভালো অগ্রগতি অর্জন করেছে। সম্ভবত এ অগ্রগতির মূল উপাদান পাকা সড়ক নেটওয়ার্ক এবং দেশব্যাপী বিদ্যুৎ-সংযোগ। সেই সঙ্গে মানুষের মনে পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা। 

পিপিআরসির ওই সমীক্ষায় উল্লেখিত অগ্রগতি মানুষের পরিবর্তনের আকাঙ্ক্ষা ও উদ্যোগ প্রমাণ করেছে। এই অর্জিত অগ্রগতি ধরে রাখতে হবে। জুলাই-পরবর্তী অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে রাজনৈতিক সংস্কার যতটা গুরুত্ব পেয়েছে, অর্থনৈতিক সংস্কার ততটা পায়নি। জুলাই আন্দোলন কেবল রাজনৈতিক ছিল না, এর গভীরে ছিল অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তির আকাঙ্ক্ষা।

ব্যবসায় ভীতিকর অবস্থা

দেশের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, আইনশৃঙ্খলার অবনতি, চাঁদাবাজি, লুটপাট, ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান দখল বা মালিকানার হাতবদল বৃহৎ, মাঝারি ও প্রান্তিক ব্যবসায়ীদের ভীতিকর পরিস্থিতিতে ফেলেছে। অনেকে ব্যবসা-বাণিজ্য গুটিয়ে নিয়েছেন বা সংকুচিত করেছেন। এ কারণে স্থানীয় পর্যায়ে টাকার প্রবাহ কমেছে। দ্বিতীয়ত, কিছুসংখ্যক ব্যাংকের নাজুক অবস্থার কারণে প্রান্তিক বিনিয়োগকারীরা বেশ বিপাকে পড়েছেন। তৃতীয়, সরকারি অনেক প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়েছে, নতুন প্রকল্পের সংখ্যা কমে এসেছে। ফলে প্রান্তিক পর্যায়ে শ্রমজীবী মানুষের কাজের সুযোগ কমেছে।

পিপিআরসির সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে, গণ-অভ্যুত্থানের পর মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে অর্থাৎ টাকার দাম কমেছে। সার্বিক অর্থনীতির গতি শ্লথ হয়েছে। গ্রামীণ অর্থনীতি চাপে পড়েছে, গ্রামের মানুষ কাজের সন্ধানে শহরে এসে অনানুষ্ঠানিক খাতে যুক্ত হচ্ছেন। গ্রাম-শহরের মধ্যে নানা সূচকের বৈষম্য কমলেও গণ-অভ্যুত্থানপরবর্তী অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপের অভাবে সেই অগ্রগতি পেছনের দিকে ফিরতে শুরু করেছে। যেমন বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) খানা আয় ও ব্যয় জরিপ ২০২২-এ দেখা গেছে, দেশে দারিদ্র্যের হার ছিল ১৮ দশমিক ৭। আর পিপিআরসির ২০২৫-এর সমীক্ষায় দেখা যাচ্ছে, সে হার বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৭ দশমিক ৯৩ শতাংশে। 

পিপিআরসির সমীক্ষায় পরিলক্ষিত গ্রাম-শহর বৈষম্যের বিশেষ কয়েকটির দিকে নজর দেওয়া যাক। গৃহ ক্যাটাগরিতে দেখা যাচ্ছে, গ্রামের ১৬ দশমিক ৬ এবং শহরের ৩৭ দশমিক ৮ শতাংশ উত্তরদাতা পাকা বাড়িতে বাস করেন। গ্রামের ৪৩ দশমিক ৬ শতাংশ ও শহরের ২৯ দশমিক ২ শতাংশ উত্তরদাতা টিনশেড বাড়িতে বাস করেন। গ্রাম এলাকার ৯১ দশমিক ৫ ভাগ উত্তরদাতা ও শহরের ৫৯ দশমিক ৮ ভাগ উত্তরদাতা নিজগৃহে বাস করেন। এসব তথ্য থেকে সম্পদের মালিকানা বৃদ্ধির একটি বিশেষ দিক উঠে এসেছে। 

সুপেয় পানি পাওয়ার ক্ষেত্রে শহরের তুলনায় গ্রাম সামান্য এগিয়ে আছে। গ্রামের উত্তরদাতাদের মধ্যে ৯৮ দশমিক ৬ শতাংশ সুপেয় পানি পান, অন্যদিকে শহরে এই হার ৯৭ দশমিক ৪ শতাংশ। বিদ্যুৎ–সেবা পাওয়ার ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য নেই। গ্রামে বিদ্যুৎ-সংযোগের হার ৯৮ দশমিক ৩, শহরের ৯৮ দশমিক ৭ শতাংশ। কিন্তু বিদ্যুৎ-সংযোগ শেষ কথা নয়। বিদ্যুৎ থাকা ও না-থাকার (লোডশেডিং) ক্ষেত্র গ্রাম ও শহরের চিত্র এক নয়। 

শহর ও গ্রামে চিকিৎসা ব্যয় বেশি

মাসিক আয়ের ক্ষেত্রে গ্রাম ও শহরের উত্তরদাতাদের মধ্যে পার্থক্য হলো যথাক্রমে ২৯,২০৫: ৪০,৫৭৮ টাকা। শহরের উত্তরদাতাদের মধ্যে আয়ের চেয়ে ব্যয় করার প্রবণতা বেশি; গ্রামের উত্তরদাতারা সঞ্চয়প্রবণ। উত্তরদাতাদের আয়ের বেশির ভাগ ব্যয় হয় খাবারের পেছনে। শহরবাসী ও গ্রামবাসী উভয় শ্রেণির উত্তরদাতাদের চিকিৎসার ব্যয় বেড়েছে। জীবনযাপনের ধরনের সঙ্গে সম্পর্কিত রোগ বেড়েছে উভয় শ্রেণিতেই—ব্লাড প্রেশার, ডায়াবেটিস, ক্যানসার ও হৃদ্​রোগের বৃদ্ধি লক্ষ করা গেছে। শিক্ষার ব্যয় শহরের তুলনায় গ্রামে বেশি।

পিপিআরসির ওই সমীক্ষায় তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহারে ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, স্মার্টফোন ব্যবহারের হার গ্রামে ৭১ শতাংশ, আর শহরে ৭৯ দশমিক ৬ শতাংশ। কম্পিউটার/ল্যাপটপ রয়েছে গ্রামের ২ দশমিক ৪ শতাংশ উত্তরদাতার। শহুরে উত্তরদাতাদের মধ্যে এর হার ৯ দশমিক ৬ শতাংশ। গ্রামের ৭৬ দশমিক ৮ এবং শহরের ৭৯ দশমিক ৮ শতাংশ খানার যুবকদের স্মার্টফোন রয়েছে। ইন্টারনেট ব্যবহার করেন গ্রামের ৬৫ দশমিক ৪১ শতাংশ উত্তরদাতা; শহরে এই হার ৭৬ দশমিক ৬৩ শতাংশ। এসব তথ্য প্রযুক্তিনির্ভর অর্থনীতির এক নতুন দিকের সন্ধান দিচ্ছে। ব্যয় ও ভোগের ধরনের ক্ষেত্রে বৈষম্য গ্রামের তুলনায় শহরে বেশি।  

বাংলাদেশে ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠীগত সম্পদের মালিকানা বাড়ছে। সিংহভাগ অর্থ পুঞ্জীভূত হচ্ছে কিছুসংখ্যক ব্যক্তি ও গোষ্ঠীর হাতে। বৈষম্য বৃদ্ধির প্রক্রিয়া চলমান। বিদ্যমান আইন, নীতি-পরিকল্পনা জনগণের স্বার্থ রক্ষার চেয়ে গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় অধিকতর কার্যকর। এ জটিল অর্থনৈতিক সমীকরণের মধ্যে গ্রাম-শহর সমতা বা অসমতার চিত্র কীভাবে দেখা হবে, তা এক কঠিন প্রশ্ন। 

কৃষি অর্থনীতির অন্যতম চালিকা শক্তি হলেও প্রান্তিক কৃষক বৈষম্যের শিকার

সম্পর্কিত নিবন্ধ