বিদেশ থেকে এইচ–১বি ভিসায় দক্ষ কর্মী আনতে এক লাখ ডলার ফি আরোপ করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এর ফলে মেধাবীরা যুক্তরাষ্ট্রে না গিয়ে অন্য কোনো দেশকে কর্মক্ষেত্র হিসেবে বেছে নিতে পারেন।

ট্রাম্প প্রশাসন বলেছে, মার্কিন কোম্পানিগুলোকে বিদেশ থেকে দক্ষ কর্মী না এনে দেশের ভেতর থেকে কর্মী নিয়োগে উৎসাহ দিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

বাস্তবে এটি বিশেষ করে দেশটির বৃহৎ প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানগুলোর জন্য বড় ধাক্কা হয়ে এসেছে। কারণ, তারা বিদেশি দক্ষ কর্মীদের ওপর অনেকটাই নির্ভরশীল।

১৯৯০ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের আমলে যুক্তরাষ্ট্র এইচ–১বি ভিসা প্রকল্প চালু করে। বর্তমানে এই ভিসার মূল সুবিধাভোগী ভারতীয় প্রযুক্তি কর্মীরা।

গত বছর যে কোম্পানিগুলো এইচ–১বি ভিসায় সবচেয়ে বেশি কর্মী নিয়োগ দিয়েছে, সে তালিকায় অ্যামাজন, গুগল, মেটা, মাইক্রোসফট ও অ্যাপলের নাম আছে।

গত বছর এইচ–১বি ভিসার অনুমোদন পাওয়া ৭১ শতাংশই ছিলেন ভারতীয়। তাঁদের পরেই আছেন চীনের নাগরিকেরা। গত বছর তাঁদের সংখ্যা ছিল ১১ দশমিক ৭ শতাংশ।

এইচ–১বি ভিসা আবেদনে ফি আরোপের পর বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের অর্থনীতি দুর্বল হয়ে পড়তে পারে। কারণ, ব্যয় অনেকটা বেড়ে যাওয়ার ফলে মার্কিন কোম্পানিগুলোর জন্য বিদেশ থেকে মেধা অন্বেষণ করা কঠিন হয়ে পড়বে।

স্বল্প মেয়াদে এই সিদ্ধান্ত ‘মেধাসংকট’ পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে পারে বলেও আশঙ্কা করা হচ্ছে। কারণ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক করে বেরিয়ে আসা দক্ষ কর্মীদের যুক্তরাষ্ট্র ছেড়ে অন্য দেশে চলে যেতে হবে।

এইচ–১বি ভিসায় ফি আরোপের ঘোষণায় যা আছে

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিদেশ থেকে দক্ষ কর্মী আনতে (এইচ–১বি ভিসায়) এখন প্রতিটি আবেদনের জন্য এক লাখ মার্কিন ডলার ফি জমা দিতে হবে। ১৯ সেপ্টেম্বর ট্রাম্প প্রশাসন এইচ–১বি ভিসা–সংক্রান্ত নতুন এ নীতিমালা ঘোষণা করে। এ–সংক্রান্ত একটি নির্বাহী আদেশে সই করেছেন ট্রাম্প। ২১ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন ফি কার্যকর হয়েছে।

এর আগে ভিসার ফি দুই হাজার থেকে পাঁচ হাজার ডলারের মধ্যে ছিল। কোম্পানির আকারভেদে যা নির্ধারণ করা হতো।

এইচ–১বি ভিসায় মার্কিন প্রতিষ্ঠানগুলো প্রথমে সর্বোচ্চ তিন বছরের জন্য বিশেষ দক্ষতাসম্পন্ন বিদেশি কর্মী নিয়োগের সুযোগ পায়। ছয় বছর পর্যন্ত এ ভিসার মেয়াদ বৃদ্ধি করা যায়।

প্রতিবছর যুক্তরাষ্ট্র ৬৫ হাজার এইচ–১বি ভিসা দিয়ে থাকে। এই প্রকল্পের আওতায় এমন সব প্রতিষ্ঠানকে অনুমোদন দেওয়া হয়, যারা বিশেষায়িত ক্ষেত্রে অস্থায়ী ভিত্তিতে বিদেশ থেকে কর্মী আনে। এ ছাড়া আরও ২০ হাজার ভিসা দেওয়া হয় উচ্চতর ডিগ্রিধারী কর্মীদের জন্য। বিশেষ করে এসটিইএম (বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, প্রকৌশল ও গণিত) শিল্পে।

আরও পড়ুনদক্ষ কর্মী ভিসায় যুক্তরাষ্ট্রে গেলে বছরে ১ লাখ ডলার ফি দিতে হবে২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫১৯৯০ সালে প্রেসিডেন্ট জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের আমলে যুক্তরাষ্ট্র এইচ–১বি ভিসা প্রকল্প চালু করে। বর্তমানে এই ভিসার মূল সুবিধাভোগী ভারতীয় প্রযুক্তি কর্মীরা।

শুরুতে মার্কিন বাণিজ্যমন্ত্রী হাওয়ার্ড লুটনিক বলেছিলেন, এ ভিসা ফি বার্ষিক হিসেবে দিতে হবে। যদিও তখন তিনি ভিসা ফির শর্তগুলো ‘এখনো বিবেচনাধীন’ বলে জানিয়েছিলেন।

পরে হোয়াইট হাউস থেকে বিষয়টি পরিষ্কার করে বলা হয়, এটা বার্ষিক ফি নয়। এটা এককালীন, যা শুধু ভিসার আবেদনপত্রের বেলায় প্রযোজ্য।

হোয়াইট হাউস থেকে আরও বলা হয়, এসব নিয়ম বর্তমান এইচ–১বি ভিসাধারীদের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে না বা যাঁরা ২১ সেপ্টেম্বরের আগে আবেদন জমা দিয়েছেন, তাঁদের ক্ষেত্রেও নয়।

এইচ-১বি ভিসার ওপর বার্ষিক ফি নির্ধারণ করে শুক্রবার একটি নির্বাহী আদেশে সই করেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: য ক তর ষ ট র র স প ট ম বর র জন য

এছাড়াও পড়ুন:

আমার জীবনটা ট্র্যাজেডিতে ভরা

ছবি: দীপু মালাকার

সম্পর্কিত নিবন্ধ