নোংরামি সরিয়ে ক্রিকেটের বৃহৎ স্বার্থ দেখার আহ্বান
Published: 25th, September 2025 GMT
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের নির্বাচন যতটাই ঘনিয়ে আসছে ততটাই যেন নোংরামি বাড়ছে, এমনটাই মনে করছেন জাতীয় দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান। ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাব থেকে কাউন্সিলর নির্বাচিত হওয়া তামিম নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছেন। কিন্তু তার কাউন্সিলরশিপ নিয়ে আপত্তি উঠেছে।
নিজের কাউন্সিলরশিপের আপত্তির শুনানিতে আজ তাকে হাজির হতে হয়েছিল মিরপুর শেরেবাংলা জাতীয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে। এর আগে কেবল একটি পরিচয়ে তামিম গিয়েছেন মিরপুরে। চেনা আঙ্গিনায় তামিমের আজকের পরিচয় কেবল ক্রিকেট সংগঠক হিসেবে। নির্বাচনের আগে যা হচ্ছে তা অনুকল্পনা করেননি তিনি। তাইতো তার ভাষায় নোংরামি বাদ দিয়ে ক্রিকেটের বৃহৎ স্বার্থ দেখার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
আরো পড়ুন:
বিসিবি নির্বাচন: তামিমের কাউন্সিলরশিপসহ ৩০ আপত্তি জমা
বিসিবি নির্বাচন নিয়ে ক্রিকেটাররা একাট্টা
তামিমের কাউন্সিলরশিপ অবৈধ দাবি করে বলা হয়েছে, তিনি এখনো আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেননি। অথচ চলতি বছরের ১০ জানুয়ারি সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ঘোষণা দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়ান বাংলাদেশ দলের সাবেক এই অধিনায়ক। চিঠিতে তামিম ওল্ড ডিওএইচএস ক্লাবের কেউ নন বলেও উল্লেখ করা হয়।
নিজের অবস্থান ব্যাখ্যা করতে গিয়ে তামিম বলেছেন, ‘‘আমার নামে যিনি কমপ্লেইন করছেন, সেই তিনি বিভিন্ন জায়গায় বলে যাচ্ছেন, তিনি অভিযোগ করেন নাই। চিঠিতে উল্লেখ করা আছে যে, ওল্ড ডিওএইচএস-এর সাথে আমার কোনো সম্পর্ক নাই। ওল্ড ডিওএইচএস-এর কমিটিটা খুঁজে বের করে দেখেন আমি আছি কি নাই। আমার এটা লজ্জা লাগতেছে যে আজকে আমার এই জায়গায় এসে এই জিনিসগুলো এক্সপ্লেইন করতে হচ্ছে।’’
‘‘আমার বিপক্ষে অভিযোগ আনার আগে উনারা একটা জিনিস ভুলে যাচ্ছেন, গঠনতন্ত্রে কিন্তু দুইটা কথা উল্লেখ করা আছে: ‘‘অর্গানাইজার বা সাবেক ক্রিকেটার।’’ আমি যে অর্গানাইজার না, এটা কেউ প্রমাণ করতে পারবেন? তিনটা টিম ওন করি, দুইটা টিমের কমিটিতে আছি। দ্বিতীয় কথা হলো, ‘‘সাবেক ক্রিকেটার।’’ আপনারা গঠনতন্ত্রটা বের করে দেখেন, সাবেক ক্রিকেটারের কি কোনো ব্যাখ্যা দেওয়া আছে কিনা যে, আমার অফিসিয়ালি রিটায়ারমেন্ট ঘোষণা করতে হবে?’’
‘‘যদি এই কেসই হয়, মোহাম্মদ আশরাফুল তো রিসেন্টলি ইংল্যান্ডে ক্রিকেট খেলে এসেছেন। আমিনুল ইসলাম বুলবুল ভাই, আমাদের প্রেসিডেন্ট, উনিও অফিসিয়ালি কোনো জায়গায় রিটায়ারমেন্ট ঘোষণা করেন নাই। যদি আপনারা আমাকে ঐভাবে ফাঁসাতে চান, তাহলে ওনারাও ফেঁসে যাবেন। আমি লাস্ট পাঁচ মাস আগে খেলেছি। আমি যদি নিজের মনের মধ্যেই চিন্তা করে রাখি যে, আমি আর ক্রিকেট খেলব না, তা আমি তো সাবেক হয়েই গেলাম। গঠনতন্ত্রে যদি এ কথাটা লেখা থাকে যে একদম স্পেসিফিকলি আপনাকে অমুক ডেটে ঘোষণা দিতে হবে, তাহলেই আপনার এই কাউন্সিলরশিপ বৈধ, তাহলে আমি মানতে পারি।’’ - যোগ করেন তামিম।
গতকাল জমা হওয়া ৩০টি আপত্তির মধ্যে বেশিরভাগই ছিল ক্লাব নিয়ে। দুদকের পর্যবেক্ষণে গত কয়েক বছরে তৃতীয় বিভাগ বাছাই থেকে ওঠা ১৮টি ক্লাবের বিরুদ্ধে তদন্তের সুপারিশ করা হয়েছে। এর মধ্যে আবার তৃতীয় বিভাগ বাছাইয়ে নেমে যাওয়া ৩টি ক্লাব ছাড়া বাকি ১৫টি ক্লাবকে এবার কাউন্সিলরশিপ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে নির্বাচন কমিশন। সেই ১৫টি ক্লাবের পক্ষে কথা বলেছেন তামিম। আইনের ঊর্ধ্বে গিয়ে ক্রিকেটের বৃহৎ স্বার্থ দেখার আহ্বান জানিয়ে তামিম বলেছেন, ‘‘এখানে ১৫টা ক্লাবের চেয়ে বড় বিষয় হলো আপনারা যে সিদ্ধান্তটা নিতে যাচ্ছেন, আপনার ৩০০টা ক্রিকেটারের কথা মাথায় রাখতে হবে। এই ১৫টা ক্লাব রেগুলারলি ক্রিকেট খেলে, বিভিন্ন ডিভিশনে ক্রিকেট খেলে এবং প্রত্যেকটা প্লেয়ারদেরকে পেমেন্ট করে। ওই টাকা দিয়েই কিন্তু তাদের একটা বছরের ৭০-৮০% আয় হয়। আর তাদের প্লেয়ারদের সাথে তাদের পরিবারেরও জড়িত। তো আপনারা যে সিদ্ধান্ত নিবেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় এই জিনিসটা আপনাদের মনে রাখতে হবে।’’
তামিরের প্রশ্ন, ‘‘কী কারণে এটা করা হচ্ছে এটা স্পষ্টভাবে ক্লিয়ার। আমি উনাদেরকে বলেছি, এই ১৫টা ক্লাব নিয়ে যে ইস্যু ছিল, ইস্যুটা তো লাস্ট ছয়-সাত মাস ধরে অনগোয়িং ইস্যু। এখনই আপনাদের এই কাজটা কেন করতে হলো? দ্বিতীয়ত, আপনাদের যদি কোনো অবজেকশন থাকতো, তাহলে আপনারা কাউন্সেলর ফর্মটা দিলেন কেন? এই ১৫টা কাউন্সিলরের মধ্যে আমি ধরে নিলাম তিনজন-চারজন যোগ্য কাউন্সিলর হতে পারে, যারা আসলে ক্রিকেটকে খুব ভালো একটা জায়গায় নিয়ে যেতে পারে। তাদের স্বপ্নও তো আপনি নষ্ট করে দিলেন। আজকে যদি এটা বিপক্ষে যায়, তাদের আর কোনো চান্সই নাই নতুন করে কাউন্সিলর হওয়ার। যদি আপনারা তাদেরকে বলতেন যে এই ক্লাব থেকে কাউন্সিলর হলে এরকম একটা ঘটনা ঘটতে পারে, তাহলে তো ওই ১৫টা কাউন্সিলরের একটা অপশন থাকত যে ওরা অন্য কোনো একটা ভাবে এসে কাউন্সিলর হতে পারত।’’
তার দাবী, ‘‘এই ক্রিকেট ক্লাবগুলোর একটা হিস্ট্রি আছে, পেমেন্ট রেকর্ড আছে। জিনিসগুলো কেন করা হচ্ছে, এটা ইলেকশনকে একটা সাইডকে উইক করার জন্য করা হচ্ছে, এটা সবাই জানে। এত খারাপ সময় এসে গেল যে জিতার জন্য বা নিজের ইচ্ছা পূরণ করার জন্য আপনারা ৩০০টা ক্রিকেটারের লাইফের সাথে খেলা শুরু করলেন। আমি ক্রিকেটের সিনিয়রদের থেকে শুনেছি, ক্রিকেট বোর্ডের ইতিহাসে কোনদিন এত নোংরামি তারা দেখেনি। যে জিনিসটা আপনারা করে যাচ্ছেন, করতেছেন, এটা কিন্তু একটা হিস্ট্রি হয়ে যাবে এবং পরবর্তীতেও কিন্তু এই জিনিসগুলোই ফলো করা হবে। সো আমার হাম্বল রিকোয়েস্ট যে এই জিনিসগুলো আপনারা কইরেন না। অনেস্ট ওয়েতে ইলেকশনটা করেন।’’
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ত ম ম ইকব ল এই জ ন ই ১৫ট আপন র আপত ত
এছাড়াও পড়ুন:
‘ভাষা আন্দোলনের তাত্ত্বিক বিষয় আমাকে আকর্ষণ করেছিল’
ছবি: প্রথম আলো