Prothomalo:
2025-11-17@09:24:24 GMT

রং

Published: 25th, September 2025 GMT

মায়ের আঙুলগুলোয় ধরে থাকা রংতুলি থেকে ধীরে ধীরে ছোপ ছোপ রং বেয়ে বেয়ে পড়ছে, তা দেখে শিশুটা মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে আছে। ছোট্ট সেই খামারঘেরা মফস্‌সল শহরে খুব সকালে চিকিৎসকের বউয়ের ঘুম ভাঙে। পাম আর কমলালেবুর ঝাঁজালো পরাগ উড়ে এসে সকাল সকাল তার চোখে জ্বালা ধরায়, সেই অ্যালার্জির বিরক্তিতে তার ঘুম ভেঙে যায়। আকাশে অন্ধকারের আঁচ থাকতে থাকতে খুব ভোরে সে বিছানা ছাড়ে। তারপর সকালের কফি না খেয়ে, পরিবারের ঘুমন্ত অন্য সদস্যদের দিকে খুব একটা নজর না দিয়ে, সোজা চলে যান কোনার দিকে ছবি আঁকার ইজেল আর ক্যানভাস দিয়ে ঘিরে আলাদা করা ঘরের অন্য প্রান্তে। ওখানে রোগীরা অপেক্ষায় রয়েছে। ওই দিকে যে জানালা রয়েছে, ওটা দিয়ে গোলাপি রঙের প্রকাণ্ড খাড়া পাহাড়টা দেখতে পাওয়া যায়। নিজের জায়গায় গিয়ে বসে মনোরম দৃশ্যটুকু নিজের আঁটসাঁট ক্যানভাসটার সঙ্গে সে মিলিয়ে নিতে থাকে। সেই চাহনিতে এমন এক সহিষ্ণুতা, যেন ঠিক সেই রোগীর মতো যে কিনা জেনে গেছে, তার শরীরে বাসা বাঁধা প্রাণঘাতী এই অসুখের কারণে শিগগিরই তার জীবনের ইতি ঘটতে চলেছে।

শিশুটাও তার মায়ের এই রং নিয়ে খেলা দেখে অবাক হয়। কেমন করে ওরা ক্যানভাসটার ওপর ছড়িয়ে পড়ছে আর পাহাড়ের নিচে আস্ত একটা শহর জায়গা করে নেওয়ার আগপর্যন্ত একের পর এক ধীরে ধীরে একেকটা আকার ধারণ করছে, সেটা দেখেও সে যারপরনাই বিস্মিত হয়। সেই শহরে রয়েছে কাদা আর রোদে পোড়া লাল লাল ইটের ঘর, কাঠের মেঝে আর টালির ছাদ। বাড়িগুলো ফুল আর ফলের বাগান দিয়ে ঘেরা। সেই শহরের সবুজ প্রান্তরজুড়ে ঢেউ খেলে যাচ্ছে প্রাণচঞ্চল মুক্ত বাতাস। তারই ভেতর দিয়ে বয়ে গেছে টলটলে জলে ভরপুর একটা নদী। সেই নদীর দুপাশে এখানে–ওখানে বুনো ঝোপঝাড়ে ফুটে থাকা অজানা ফুলের সুবাস ভেসে বেড়াচ্ছে। সকালে স্কুলের জন্য তৈরি হওয়ার সময় অনিচ্ছাসত্ত্বেও দুধ খেতে খেতে সে আরও বেশি অবাক হয়ে ভাবতে থাকে, জানালাটার বেশ অনেকখানি কাচের খণ্ড দিয়ে আড়াআড়ি আড়াল হয়ে থাকার পরও কেমন করে তার মা নিজের আঁকা ছবিতে শহরটাকে এমন জীবন্ত ফুটিয়ে তুলেছেন?

সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে, প্রতিদিনের মতো ক্লিনিকে প্রথম রোগী আসার পর থেকে, মায়ের দুর্বল ধীরস্থির চলাফেরা শুরু হয়। তারপর ওই জায়গা ছেড়ে উঠে আসার আগপর্যন্ত, ইজেল, রঙের টিউব আর তারপিন মাখানো ব্রাশ আর ক্যানভাস সবকিছু কেমন অসহায়ভাবে পেছনে পড়ে থাকে। বাইরের উঠোনে নিজের ভারে ঝুঁকে পড়া একটা রাবারগাছ, ওর পাশেই দাঁড়িয়ে রয়েছে মর্মর শব্দ করতে থাকা লম্বা একটা পামগাছ, যেটা বেয়ে উঠতে আস্ত দুটো মই দরকার হবে। এবং কাছেই মসজিদের উঠোনে অবিরাম কিচিরমিচির শব্দ করতে করতে অজুর জলে নানা ধরনের পাখি গোসল করে চলেছে।

ফিলিস্তিনি ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, কবি ও চলচ্চিত্র নির্মাতা লীয়ানা বেদের.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সম্মানসূচক অস্কার পেলেন টম ক্রুজ

ফিল্ম আইকন টম ক্রুজকে সম্মানসূচক অস্কার প্রদান করা হয়েছে। রবিবার (১৬ নভেম্বর) রাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে গভর্নর্স অ্যাওয়ার্ডের মঞ্চে এই পুরস্কার টম ক্রুজের হাতে তুলে দেন মেক্সিকান নির্মাতা আলেহান্দ্রো জি. ইনারিতু। 

তাছাড়া একই সম্মানসূচক পুরস্কার পেয়েছেন কোরিওগ্রাফার ও অভিনেত্রী ডেবি অ্যালেন, মিউজিক আইকন ডলি পার্টন এবং প্রোডাকশ ডিজাইনার উইন থমাস। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম দ্য হলিউড রিপোর্টার এ খবর প্রকাশ করেছে। 

আরো পড়ুন:

কনসার্টে গায়ক একনের পরনের প্যান্ট নিয়ে টানাটানি

চতুর্থ সন্তানের মা হলেন কার্ডি বি

টম ক্রজ বলেন, “সিনেমা আমাকে সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে দিয়েছে। ভিন্নবিষয়কে উপলদ্ধি করা ও সম্মান করতে এটি আমাকে সাহায্য করে। পৃথিবীর যেখান থেকেই আসি না কেন, থিয়েটারে আমরা একসঙ্গে হাসি, একসঙ্গে অনুভব করি, একসঙ্গে স্বপ্ন দেখি। আর এটাই এই শিল্পের শক্তি। এ কারণেই এটি গুরুত্বপূর্ণ, এ কারণেই এটি আমার কাছে অর্থবহ। তাই চলচ্চিত্র তৈরি করা শুধু আমার কাজ নয়, আমি কে, এটি তারই অংশ।” 

অ্যাকাডেমির সভাপতি জ্যানেট ইয়াং প্রেস বিজ্ঞপ্তি বলেন, “অ্যাকাডেমির বোর্ড অব গভর্নর্স এই মেধাবি শিল্পীদের সম্মান জানাতে পেরে গর্বিত। ডেবি অ্যালেন একজন পথপ্রদর্শক কোরিওগ্রাফার এবং অভিনেত্রী; যার কাজ প্রজন্মের পর প্রজন্মকে মুগ্ধ করেছে; বিভিন্ন ধারার সীমানা অতিক্রম করেছে। টম ক্রুজের চলচ্চিত্র, থিয়েট্রিক্যাল অভিজ্ঞতা এবং স্টান্ট আমাদের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছে।” 

চলচ্চিত্র শিল্প ও এমন ব্যক্তিকে এই পুরস্কার প্রদান করা হয়, যার মানবিক প্রচেষ্টা মানবকল্যাণে উন্নতী এবং বৈষম্য দূরীকরণে অবদান রেখে শিল্পের মর্যাদা বৃদ্ধি করেছে।

ঢাকা/শান্ত

সম্পর্কিত নিবন্ধ