বাবা নিখোঁজ, মা হুইলচেয়ারে বন্দী—মধ্যবিত্ত তরুণী সাবার জীবনসংগ্রামকে পর্দায় তুলে ধরেছেন মাকসুদ হোসাইন। নামভূমিকায় অভিনয় করেছেন মেহজাবীন চৌধুরী।
মেহজাবীন চৌধুরীর এটি প্রথম সিনেমা। তবে আগে মুক্তি পেয়েছে তাঁর দ্বিতীয় সিনেমা প্রিয় মালতী। গত বছরের সেপ্টেম্বরে টরন্টো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে হয় সাবার বিশ্ব প্রিমিয়ার। এরপর বুসান, রেড সি, গথেনবার্গ, সিডনি, রেইনড্যান্সসহ একাধিক আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এটি ঘুরেছে।
প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেহজাবীন বলেন, ‘ছবিটির গল্প শোনার পর থেকে নিজেই বুঝতে পারছিলাম, এটাই হবে আমার প্রথম ছবি। সেভাবেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। দীর্ঘ অপেক্ষার পর প্রথম ছবি হিসেবে এটি করার সিদ্ধান্ত যে ভুল ছিল না, সেটির প্রমাণ এখন পাচ্ছি।’
প্রথম সিনেমা। নিতে হয়েছে দীর্ঘ প্রস্তুতি। এ প্রসঙ্গে অভিনেত্রী বলেছিলেন, ‘অনেক রিহার্সাল করেছি। কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে। এটা একই সঙ্গে আমার পরিচালকের (মাকসুদ হোসাইন) শাশুড়ি ও চিত্রনাট্যকারের (ত্রিলোরা খান) মায়ের গল্প। যে কারণে অনেক গভীরভাবে চরিত্র সম্পর্কে আলোচনা করতে পেরেছি।’ সিনেমায় সাবার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন অভিনেত্রী রোকেয়া প্রাচী।
‘সাবা’ সিনেমার পোস্টার.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
রবীন্দ্রসরোবরে সুরে–ছন্দে জমজমাট নবান্ন উৎসব
অগ্রহায়ণের প্রথম দিনে নবান্ন উৎসব হলো রাজধানীতে। নাচ, গান, আবৃত্তি, আলোচনায় রোববার ধানমন্ডির রবীন্দ্রসরোবর উন্মুক্ত মঞ্চে উদ্যাপন করা হলো ঋতুভিত্তিক এই ঐতিহ্যবাহী উৎসব।
হেমন্তের বেলা শেষে ষড়ঋতু উদ্যাপন জাতীয় পর্ষদ আয়োজিত নবান্ন উৎসবের কার্যক্রম শুরু হয়েছিল সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে। এরপর ছিল ফারহানা করিমের নেতৃত্বে সমবেত নৃত্য।
নবান্নকথনে অংশ নেন আয়োজক সংগঠনের সভাপতি এহসান মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘আবহমানকাল থেকে আমাদের কৃষিপ্রধান দেশে অগ্রহায়ণে কৃষকের ঘরে নতুন ফসল ওঠে। নতুন ধান তাঁদের জীবনে নিয়ে আসে সচ্ছলতা। নিয়ে আসে আনন্দ। তবে নবান্ন কেবল ফসলের আনন্দই নয়, আমাদের লোকসংস্কৃতির একটি শক্তিশালী উপাদান। নাগরিক পরিবেশে ঋতুভিত্তিক এই উৎসবকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরতে নবান্ন উৎসবের আয়োজন করা হয়েছে। এর ধারাবাহিকতায় বসন্ত, বর্ষা, শরৎসহ ঋতুভিত্তিক উৎসবগুলো আয়োজন করা হবে।’
নবান্ন উৎসব উপলক্ষে রবীন্দ্রসরোবর মঞ্চ ও মঞ্চের চারপাশের স্থান বর্ণাঢ্যভাবে সাজিয়ে তোলা হয়। এর সঙ্গে ছিল ঐতিহ্যবাহী পিঠাপুলির স্টল।
আলোচনার পরে শুরু হয় গানের পালা। সাগর বাউল শুরু করেছিলেন ভবা পাগলার গান ‘বারে বারে আসা হবে না’ গেয়ে। এরপর তিনি পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘লোকে বলে লালন ফকির কোন জাতের ছেলে’ এবং রাধারমণ দত্তের গান ‘অবলারে কান্দাইয়া’। ঢোল, একতারার বাজনা, বাঁশির সুর আর লোকসাধকদের এসব মরমি গানে গানে সাগর বাউল শ্রোতাদের মাতিয়ে তোলেন।
অনুষ্ঠানে নজরুলসংগীত পরিবেশনের কথা ছিল শিল্পী ফেরদৌস আরার। তবে তিনি অসুস্থতার জন্য সংগীত পরিবেশন করতে পারেননি। এই চমৎকার অনুষ্ঠানের জন্য আয়োজকদের ধন্যবাদ ও শ্রোতাদের শুভেচ্ছা জানান।
লোকশিল্পী আলেয়া বেগম পরিবেশন করেন ‘মালা কার লাগিয়া গাঁথি’সহ বেশ কয়েকটি গান। গানের ফাঁকে ফাঁকে ছিল আবৃত্তি ও কবিদের কবিতা পাঠ। এই পর্বে অংশ নেন কবি রাসেল রায়হান, রিক্তা রিনি, সানাউল্লাহ সাগর, জব্বার আল নাইম, ইসমত শিল্পীসহ অনেকে।
সংগীতশিল্পীদের মধ্যে কোহিনূর আক্তার পরিবেশন করেন লালন সাঁইয়ের গান ‘তিন পাগলের হইল মেলা’। ডলি মণ্ডল পরিবেশন করেন ‘সব লোক কয় লালন কী জাত সংসারে’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ষড়ঋতু উদ্যাপন জাতীয় পর্ষদের সদস্যসচিব দীপান্ত রায়হান।
শীতের মৃদু পরশ লেগেছে রাজধানীর হাওয়ায়। হালকা কুয়াশাও জমছে আকাশে। নাতিশীতোষ্ণ পরিবেশে সুরে-ছন্দে বেশ খানিকটা রাত অবধি জমজমাট হয়ে উঠেছিল এই নাগরিক নবান্ন উৎসব।