জয়পুরহাটে মাদ্রাসাশিক্ষককে মারধর, দুই ভাইয়ের ১৫ দিনের কারাদণ্ড
Published: 26th, September 2025 GMT
জয়পুরহাটের কালাই উপজেলায় এক মাদ্রাসা শিক্ষকের ওপর অতর্কিত হামলা চালিয়ে মারধরের দায়ে দুই সহোদরকে ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে কালাই পৌর শহরের কালাই আহলে হাদিস মসজিদ মার্কেটে ওই ঘটনার পর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে তাঁদের এই সাজা দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীমা আক্তার। এদিকে ওই শিক্ষককে মারধরের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষকের নাম সেলিম রেজা। তিনি উপজেলার হাতিয়র কামিল মাদ্রাসার আরবি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও কালাই পৌর শহরের আহলে হাদিস মসজিদের খতিব। অন্যদিকে দণ্ডপ্রাপ্ত দুই ব্যক্তির নাম আবদুল্লা আল মাহমুদ (৩৮) ও তাঁর ছোট ভাই নূর মোহাম্মদ (৩৫)। তাঁরা কালাই পৌর এলাকার থুপসাড়া মহল্লার বাসিন্দা।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, আবদুল্লা আল মাহমুদের স্ত্রী হাতিয়র কামিল মাদ্রাসা থেকে পড়াশোনা করছেন। গতকাল সকালে স্ত্রীর কামিল পাসের সার্টিফিকেট ও অন্যান্য কাগজপত্র নিতে মাদ্রাসাটিতে যান আবদুল্লা। এ সময় সেলিম রেজার সঙ্গে আবদুল্লার কথা–কাটাকাটি হয়। পরে সেখান থেকে চলে যান আবদুল্লা। একপর্যায়ে সেলিম রেজা মাদ্রাসা থেকে কালাই আহলে হাদিস মসজিদ মার্কেটে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে যান। সেখানে গিয়ে সেলিম রেজাকে মারপিট করেন আবদুল্লা। পরে আবদুল্লার ছোট ভাই নূর মোহাম্মদও সেখানে গিয়ে মারপিটে অংশ নেন। এতে সেলিম রেজা আহত হন। ঘটনাটি জানাজানি হলে বিক্ষুব্ধ জনতা ওই দুই হামলাকারীকে মার্কেটটির ভেতর অবরুদ্ধ করেন।
খবর পেয়ে ইউএনও শামীমা আক্তার, কালাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহিদ হোসেন ঘটনাস্থলে গিয়ে জনতাকে শান্ত করেন। পরে অভিযুক্ত আবদুল্লা ও নুর মোহাম্মদকে উদ্ধার করে ইউএনওর কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাঁদের ১৫ দিন করে কারাদণ্ড দেন।
ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায়, সেলিম রেজা দোকানে বসে আছেন। এক ব্যক্তি দোকানে গিয়ে কিছু জিজ্ঞাসা করার পর তাঁর গালে জোরে চড় মারতে থাকেন। এ নিয়ে উভয়ের মধ্য ধস্তাধস্তি হয়। একপর্যায়ে সেলিম রেজা দোকানের সামনে পড়ে পড়ে যান। এ সময়ও তাঁকে মারধর করা হয়।
এ বিষয়ে জানতে সেলিম রেজার মুঠোফোনে কল করা হলে জনি তালুকদার নামের এক ব্যক্তি নিজেকে তাঁর আত্মীয় পরিচয় দিয়ে বলেন, সেলিম রেজা হুজুর মারধরে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর একটি হাত ভেঙে গেছে। এখন হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে।
এদিকে সাজাপ্রাপ্ত ওই দুজনকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন কালাই থানার ওসি জাহিদ হোসেন।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার
দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।
পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।