সখীপুরে স্ত্রীর দাবি নিয়ে তরুণের বাড়িতে নারী, গাছে বেঁধে মারধরের অভিযোগ
Published: 26th, September 2025 GMT
টাঙ্গাইলের সখীপুরে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবি করায় এক নারীকে (৩০) গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে এক তরুণ ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার একটি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মারধরের ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে।
এ ঘটনায় আজ শুক্রবার দুপুরে ওই নারীর বাবা বাদী হয়ে সখীপুর থানায় একটি মামলা করেছেন। এতে মূল অভিযুক্ত করা হয়েছে আবদুর রশিদ (২১) নামের এক তরুণকে। এ ছাড়া তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যদের বিরুদ্ধেও অভিযোগ আনা হয়েছে।
মামলার এজাহার ও স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দার সূত্রে জানা যায়, ফেসবুকে পরিচয়ের সুবাদে বছরখানেক আগে ওই নারীর সঙ্গে রশিদের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মাস ছয়েক আগে তাঁরা আদালতে গিয়ে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে বিয়ে করেন। হঠাৎ করে কিছুদিন আগে ওই নারীর সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন রশিদ। একপর্যায়ে তাঁকে বিয়ে করার বিষয়টি অস্বীকার করেন রশিদ। পরে স্ত্রীর স্বীকৃতির দাবিতে গতকাল সকাল ১০টার দিকে রশিদের বাড়িতে গিয়ে অনশনে বসেন ওই নারী। একপর্যায়ে দুপুরের দিকে ওই নারীকে একটি গাছের সঙ্গে বেঁধে মারধর করেন রশিদ ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। এতে ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে রক্তাক্ত জখম হয়।
খবর পেয়ে স্থানীয় একজন গণমাধ্যমকর্মী ঘটনাস্থলে গেলে ওই নারীকে গাছের সঙ্গে বাঁধা অবস্থায় রেখে দ্রুত সটকে পড়েন অভিযুক্ত ব্যক্তিরা। পরে ভিডিওটি মুহূর্তেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ভিডিওটি দেখে ওই নারীকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যান তাঁর বাবা।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ওই নারী আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, ‘স্ত্রীর মর্যাদা ফিরে পেতে রশিদের বাড়িতে অনশনে বসেছিলাম। তাঁর পরিবারের সদস্যরা আমাকে একটি গাছের সঙ্গে রশি দিয়ে বেঁধে কঞ্চি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেন। আমাকে ৩০ মিনিট ধরে পেটানো হয়েছে। আমি এই নির্যাতনের বিচার দাবি করছি।’
ওই নারীকে গাছের সঙ্গে বাঁধার বিষয়টি স্বীকার করেছেন আবদুর রশিদ। তবে মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি মুঠোফোনে বলেন, ‘ওই নারী আমার সঙ্গে প্রেম করার সময় তাঁর বয়স, আগের বিয়ে, দুই সন্তানের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গোপন রেখে প্রতারণা করেছেন। মাস দুয়েক আগে বেড়াতে গেলে ওই নারীর বোনের জামাই পরিকল্পিতভাবে আমাকে আটক করে কাবিননামায় স্বাক্ষর রাখেন। আমার চেয়ে ওই নারী ১০ বছরের বড়। কয়েক দিন আগেও আমাদের বাড়িতে উঠেছিল। বারবার বিরক্ত করায় তাঁকে গাছে বেঁধেছিলাম। কিন্তু কোনো ধরনের নির্যাতন করিনি। মেয়েটির ভয়ে আমরা বাড়িতে তালা দিয়ে পালিয়েছি।’
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সখীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কালাম ভূঁইয়া। তিনি জানান, আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত আছে।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র পর ব র র ওই ন র ক ওই ন র র ম রধর র কর ছ ন
এছাড়াও পড়ুন:
২৬ টুকরো লাশ উদ্ধার: প্রধান আসামিসহ গ্রেপ্তার ২
ঢাকার জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছ থেকে দুটো ড্রামের ভেতর থেকে ব্যবসায়ী আশরাফুলের মরদেহের ২৬ টুকরো উদ্ধারের ঘটনায় প্রধান আসামিসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার দুজন হলেন, আশরাফুলের বন্ধু জরেজুল ইসলাম ও তার প্রেমিকা শামীমা আক্তার।
কুমিল্লার দাউদকান্দি থেকে জরেজুলকে গ্রেপ্তার করে ঢাকার ডিবি পুলিশ। আর শামীমাকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব। তাঁর কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডের আলামত উদ্ধার করা হয়েছে বলে র্যাব জানিয়েছে।
শুক্রবার (১৪ নভেম্বর) রাতে ডিএমপি গণমাধ্যম শাখার উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান এ তথ্য জানান।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) দুপুরে মিন্টু রোডের ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবেন ডিবি প্রধান।
অন্যদিকে, খুদে বার্তায় শুক্রবার রাতে র্যাব সদরদপ্তর থেকে জানানো হয়, প্রাথমিকভাবে জানা গেছে পরকীয়ার কারণে এ হত্যাকাণ্ড হয়েছে। এ বিষয়ে পরে বিস্তারিত জানানো হবে।
শুক্রবার নিহত আশরাফুল হকের বোন আনজিরা বেগম বাদী হয়ে শাহবাগ থানায় জরেজুল ইসলামকে প্রধান আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
নিহত আশরাফুল হক (৪৩) দিনাজপুরের হিলি বন্দর থেকে পেঁয়াজ, রসুন, মরিচ, আলুসহ কাঁচামাল সরবরাহ করতেন। তার গ্রামের বাড়ি রংপুর।
ডিবি সূত্রে জানা গেছে, আশরাফুল ও মালায়েশিয়াপ্রবাসী জরেজুল বাল্যবন্ধু। তাদের বাড়ি রংপুরের একই গ্রামে। তিন বছর আগে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ‘বিগো লাইভে’ কুমিল্লার এক প্রবাসীর স্ত্রী শামীমা আক্তারের সঙ্গে জরেজুলের পরিচয় হয়। শামীমা দুই সন্তান নিয়ে কুমিল্লায় বসবাস করেন। একপর্যায়ে জরেজুল ও শামীমা সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। জরেজুল মাঝেমধ্যেই মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসতেন এবং শামীমার সঙ্গে সময় কাটাতেন। এই সম্পর্কের কথা জরেজুল তার বন্ধু আশরাফুলকে জানিয়েছিলেন। একসময় জরেজুলের কাছ থেকে আশরাফুল শামীমার ফোন নম্বর নেন। তিনিও শামীমার সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এরপর তাদের মধ্যে দুজনের মধ্যেও সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর জরেজুল মালয়েশিয়া থেকে দেশে আসেন। এরপর ঢাকার দক্ষিণ দনিয়া এলাকায় একটি বাসা ভাড়া নেন। ওই বাসায় তিনি শামীমাকে নিয়ে ওঠেন। শামীমা তার দুই সন্তানকে কুমিল্লায় রেখে আসেন। গত মঙ্গলবার জরেজুল তার বন্ধু আশরাফুলকে সঙ্গে নিয়ে ওই বাসায় আসেন। একপর্যায়ে জরেজুল বুঝতে পারেন, শামীমার সঙ্গে আশরাফুল সম্পর্কে জড়িয়েছেন।
এ ঘটনার জেরে আশরাফুলকে হত্যা করা হয় এবং লাশ গুমের জন্য ২৬ টুকরো করে দুটি নীল রঙের ড্রামের ভেতর ভরে হাইকোর্টসংলগ্ন জাতীয় ঈদগাহ মাঠের গেটের কাছে ফেলে দেওয়া হয় বলে ডিবি পুলিশ জানায়। নিহতের ফিঙ্গারপ্রিন্টের মাধ্যমে পরিচয় শনাক্ত করা হয়।
ঢাকা/এমআর/ইভা