জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) উত্তরাঞ্চলের মুখ্য সংগঠক সারজিস আলম বলেছেন, ‘আওয়ামী লীগ জনগণের হাজার হাজার কোটি টাকা লুট করে বিদেশে পাচার করেছে। সেই টাকা ফেরত পাঠিয়ে তারা মাঝে মাঝে সন্ত্রাসী কায়দায় টোকাই মিছিল দেওয়াচ্ছে।’

আজ শনিবার দুপুরে পঞ্চগড়ের মকবুলার রহমান সরকারি কলেজ মাঠে এক বিতর্ক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

সারজিস আলম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নাকি টোয়েন্টি-থার্টি পার্সেন্ট লোক, এই লোক কোনো কালেই ছিল না। আওয়ামী লীগ বিভিন্ন সময়ে ভাড়া করা লোক দিয়ে প্রোগ্রাম সাজিয়েছে। যদি আওয়ামী লীগের এত লোক থাকত, তাহলে জুলাই-আগস্টে যখন ছাত্র–জনতা রাজপথে নেমেছিল, তখন তারা কোথায় ছিল? এখন বিদেশ থেকে টাকা পাঠিয়ে টোকাই ভাড়া করে ভোরবেলা দু-একটা দৌড়ানি দিয়ে ভিডিও করে সোশ্যাল মিডিয়ায় দিয়ে ফাঁপর নিচ্ছে। বাংলাদেশের মানুষ বোঝে কোনটা আসল রাজনৈতিক কর্মসূচি আর কোনটা সাজানো। এই অভ্যুত্থানে যারা গণহত্যা চালিয়েছে, তাদের রাজনৈতিক বাস্তবতা এখানেই শেষ হয়ে গেছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের রাজনীতির অধ্যায় ক্লোজড।’

নির্বাচন কমিশন (ইসি) শাপলা প্রতীক না দেওয়ার বিষয়ে সারজিস আলম বলেন, ‘আসলে তাদের কাছে কারণ নাই। যৌক্তিক আইনগত কোনো কারণ নাই দেখেই তারা ব্যাখ্যা করতে পারছে না। আমরা মনে করি যেহেতু তাদের কাছে কোনো আইনগত কারণ নেই, নিশ্চয়ই তারা কোনো না কোনো কিছুর চাপে তাদের জায়গা থেকে মার্কাটা দিচ্ছে না। এই অভ্যুত্থান–পরবর্তী বাংলাদেশে নির্বাচন কমিশনের মতো একটা স্বাধীন প্রতিষ্ঠান যদি চাপের কাছে একটা প্রতীক দেওয়া নিয়ে পরাজিত হয় তাহলে নির্বাচনে তাদের কাছে স্বচ্ছতা কিংবা তাদের থেকে যে নিরপেক্ষতা আমরা প্রত্যাশা করি, সেটা নির্বাচন শুরুর আগেই প্রশ্নবিদ্ধ হচ্ছে।’

সারজিস আলম বলেন, ‘এই প্রতীকটা তাদের তালিকায় নেই, তালিকায় যুক্ত করার দায়িত্ব তো তাদের। আমরা আজকে থেকে কয়েক মাস আগে নিবন্ধনের আবেদন করেছি, তখনই তারা যুক্ত করত। তারপরও আমরা নতুন করে যুক্ত করার আবেদন করেছি। আমরা মনে করি যে তারা তাদের প্রতিষ্ঠানে স্বাধীনতা এবং পেশাদারত্বের পরিচয় দেবে। যেহেতু কোনো আইনগত বাধা নেই, সে ক্ষেত্রে এনসিপি তাদের জায়গা থেকে প্রতীক হিসেবে শাপলা পাবে।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

১২ দিনের নতুন কর্মসূচি দিল জামায়াত

জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন আয়োজনসহ পাঁচ দফা দাবিতে ১ থেকে ১২ অক্টোবর কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। এর আগে একই দাবিতে সেপ্টেম্বর মাসে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছিল দলটি।

মঙ্গলবার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জামায়াতের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের আল ফালাহ মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে নতুন কর্মসূচি ঘোষণা করেন দলটির সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

আরো পড়ুন:

কক্সবাজারে ছাত্রলীগ কর্মীর ছুরিকাঘাতে জামায়াতের যুব বিভাগের নেতা নিহত

ক্ষমতায় গেলে কাউকে দাবি নি‌য়ে রাস্তায় দাঁড়াতে হবে না: জামায়াতের আমির

পাঁচ দফা দাবিতে আন্দোলনের পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণার জন্য এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।

জামায়াত ঘোষিত কর্মসূচিগুলো হলো-
৫ দফা দাবির পক্ষে জনমত গঠনের লক্ষ্যে ১ অক্টোবর থেকে ৯ অক্টোবর পর্যন্ত সারা দেশে গণসংযোগ। এ উপলক্ষে মতবিনিময় সভা। গোলটেবিল বৈঠক। সেমিনার ইত্যাদি।

এছাড়া কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে ১০ অক্টোবর রাজধানীসহ সব বিভাগীয় শহরে গণমিছিল এবং ১২ অক্টোবর সারা দেশে জেলা প্রশাসকের কাছে  স্মারকলিপি পেশ।

যে পাঁচ দাবিতে কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছে সেগুলো হলো-জুলাই জাতীয় সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচন আয়োজন করা। আগামী জাতীয় নির্বাচনে উভয় কক্ষে পিআর পদ্ধতি চালু করা। অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড (সবার জন্য সমান সুযোগ) নিশ্চিত করা। ফ্যাসিস্ট সরকারের সব জুলুম-নির্যাতন, গণহত্যা ও দুর্নীতির বিচার দৃশ্যমান করা। স্বৈরাচারের দোসর জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করা।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার।

এতে বলা হয়, জামায়াতে ইসলামী জুলাই সনদকে আইনগত ভিত্তি দেওয়ার বিষয়ে জোরাল ভূমিকা পালন করে আসছে। জাতির ক্রান্তিলগ্নে ‘ডকট্রিন অব নেসেসিটি' হিসেবে অতীতের বিভিন্ন নজির ও উদাহরণ তুলে ধরে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তির বিষয়ে জামায়াতের অবস্থান বারবার ব্যক্ত করে আসছে। এ লক্ষ্যে জুলাই জাতীয় সনদের আইনগত ভিত্তি দেওয়ার জন্য আইন ও সংবিধান বিশেষজ্ঞদের মতামতের ভিত্তিতে জামায়াত ইতোমধ্যে সরকারের কাছে দুটি প্রস্তাব করেছে।

প্রথমত, জুলাই জাতীয় সনদের জন্য ‘সংবিধান আদেশ' জারি করা। দ্বিতীয়ত, এই সনদের অধিকতর আইনি ভিত্তি দেওয়ার জন্য নির্বাচনের আগে গণভোট করে জুলাই সনদ বাস্তবায়ন করা।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়েছে, সেটা না হলে জুলাই সনদের আইনগত ভিত্তি ছাড়া ছাত্র-জনতার রক্তের বিনিময়ে অর্জিত অভ্যুত্থান ও তার অর্জন ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে।

জনগণের দাবিগুলো কার্যকর করতে সরকার কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করছে না বলে জানিয়েছে জামায়াত।

জামায়াতের এর আগে ঘোষণা করা পাঁচ দফা জনগণের কাছে যৌক্তিক ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে বলে জানিয়েছে দলটি। তাই জনগণের পাঁচ দফা দাবি মেনে নিয়ে জুলাই সনদের ভিত্তিতে আগামী ফেব্রুয়ারিতে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আয়োজন করার দাবি জানিয়েছে জামায়াত।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল হালিম ও হামিদুর রহমান আযাদ, কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য সাইফুল আলম খান, মিডিয়া ও প্রচার বিভাগের প্রধান এহসানুল মাহবুব জুবায়ের, ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের আমির নূরুল ইসলাম বুলবুল প্রমুখ।

ঢাকা/রায়হান/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বৃদ্ধা মাকে তালাবদ্ধ করে ৮ দিন ধরে নির্যাতন করলো দুই ছেলে, উদ্ধার  
  • ১২ দিনের নতুন কর্মসূচি দিল জামায়াত
  • ১ থেকে ১২ অক্টোবর নতুন কর্মসূচি দিল জামায়াত