বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সভাপতি জাকারিয়া তাহের ও সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমান
Published: 27th, September 2025 GMT
প্রায় ১৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হলো কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সম্মেলন। তবে নেতৃত্ব নির্বাচনের সম্মেলন আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল। একক প্রার্থী হওয়ায় সভাপতি পদে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের (সুমন) এবং সাধারণ সম্পাদক পদে আশিকুর রহমান মাহমুদের (ওয়াসিম) নাম ঘোষণা করা হয়েছে। শীর্ষ পাঁচ পদের বাকি তিনটিতে নেতাদের নাম পাঁচ দিনের মধ্যে ঘোষণা করা হবে।
শনিবার বিকেলে কুমিল্লা নগরের টাউন হল মাঠে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। সম্মেলনের শেষাংশে বিএনপির কুমিল্লা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিম ভূঁইয়া শীর্ষ পাঁচটি পদের মধ্যে শুধু সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণা করেন। তবে বাকি তিনটি পদের কোনো ঘোষণা দেননি তিনি।
দলীয় সূত্র জানায়, ১৭ সেপ্টেম্বর এই সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর থেকেই উচ্ছ্বসিত ছিলেন দলটির নেতা-কর্মীরা। সম্মেলনকে ঘিরে সর্বত্র বিরাজ করে উৎসবের আমেজ। সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়ে পোস্টার, ব্যানার আর ফেস্টুনে ছেয়ে যায় কুমিল্লা নগরসহ জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলও।
সম্মেলনের সময় নির্ধারণের পর থেকেই নেতা–কর্মীদের প্রত্যাশা ছিল, এবার তাঁদের ভোটের মাধ্যমে শীর্ষ নেতৃত্ব পাবে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপি। ২৪ সেপ্টেম্বর সভাপতি পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক জাকারিয়া তাহের এবং সাধারণ সম্পাদক পদে মনোনয়নপত্র জমা দেন দক্ষিণ জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আশিকুর রহমান মাহমুদ। শীর্ষ দুটি পদে আর কোনো প্রার্থী না থাকায় আগেই তাঁদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া নিশ্চিত হয়ে যায়। সম্মেলনে তাঁদের নাম ঘোষণা করে কেবল আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করা হয়।
জাকারিয়া তাহের কুমিল্লা-৮ (বরুড়া) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য। বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কর্মসংস্থানবিষয়ক সম্পাদকের পদে রয়েছেন। সদস্যসচিব আশিকুর রহমান কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজ ছাত্রছাত্রী সংসদের সর্বশেষ ভিপি।
কেন্দ্রীয় বিএনপির নির্দেশনা অনুযায়ী সম্মেলনে শীর্ষ পাঁচটি পদে ভোট হওয়ার কথা ছিল। এ জন্য ৫ সদস্যের একটি নির্বাচন কমিশনও গঠন করা হয়েছে। সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক ছাড়া বাকি তিনটি পদে ১১ জন পদপ্রত্যাশী ছিলেন। এর মধ্যে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদে তিনজন, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক পদে চারজন এবং সাংগঠনিক সম্পাদক পদে চারজন মনোনয়ন জমা দেন। কিন্তু ওই তিনটি পদেও ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হয়নি কাউন্সিলরদের।
সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নাম ঘোষণার পর বিএনপি নেতা সেলিম ভূঁইয়া বলেন, আজ মোট পাঁচটি পদে নির্বাচন হওয়ার কথা। কিন্তু সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদক পদে এক প্রার্থী থাকায় ভোট হচ্ছে না। এ সময় তিনি কাউন্সিলদের (ভোটার) সমর্থন জানতে চান, এই সিদ্ধান্তে কারও কোনো আপত্তি আছে কি না? পরে উপস্থিত কাউন্সিলরা এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানান।
সেলিম ভূঁইয়া বলেন, বাকি তিনটি পদের প্রার্থীদের নিয়ে গতকাল (শুক্রবার) একটি সভা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত নেতাদের সবাই জাকারিয়া তাহের ও আশিকুর রহমানের ওপর আস্থা রাখেন। পদপ্রত্যাশীদের সবাই জানান, তাঁরা যেভাবে সিদ্ধান্ত নেবেন, সেটাই সবাই মেনে নেবেন। এ জন্য বাকি তিন পদেও ভোট হচ্ছে না। নবনির্বাচিত সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ জ্যেষ্ঠ নেতারা বসে আগামী পাঁচ দিনের মধ্যে বাকি পদগুলোতে নেতৃত্ব নির্বাচন করবেন।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আওতাধীন ১০টি উপজেলা ও ৪টি পৌরসভা মিলিয়ে মোট ১৪টি ইউনিট রয়েছে। প্রতিটি ইউনিট থেকে ১০১ জন কাউন্সিলর নির্ধারণ করা হয় সম্মেলনের জন্য। সে ক্ষেত্রে কোনো পদে ভোট হলে মোট ১ হাজার ৪১৪ জনের ভোটাধিকার প্রয়োগ করার কথা ছিল।
তিনটি পদের মধ্যে জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি পদে মনোনয়ন জমা দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো.
জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক পদে মনোনয়ন জমা দেন কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও চৌদ্দগ্রাম উপজেলার সভাপতি কামরুল হুদা, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার সাধারণ সম্পাদক সারওয়ার জাহান ভূঁইয়া (দোলন), দক্ষিণ জেলার যুগ্ম আহ্বায়ক মাহাবুব আলম চৌধুরী এবং কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সাবেক সহসভাপতি আমান উল্লাহ।
সাংগঠনিক সম্পাদক পদে প্রার্থী দক্ষিণ জেলা বিএনপির নজরুল হক ভূঁইয়া (স্বপন), মোস্তফা জামান এবং জ্যেষ্ঠ যুগ্ম সম্পাদক পদে মনোনয়ন জমা দেন সারওয়ার জাহান ভূঁইয়া ও মাহাবুব আলম চৌধুরী।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এনপ র ক উন স গঠন ক সদস য উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
“শিক্ষার শত্রু কাউছার” প্রতিবাদ সভায় ক্ষুব্ধ শিক্ষক, অভিভাবক ও এলাকাবাসী
সোনারগাঁ উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. কাউছার বিদ্যালয়ে হামলা, গেট ভাঙচুর, মালামাল আটকে রাখা এবং শিক্ষক–কর্মচারীদের হেনস্তা করেছেন এমন অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েছেন শিক্ষক–অভিভাবক ও এলাকাবাসী।
শনিবার (১৫ নভেম্বর) পঞ্চমীঘাট উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে আয়োজিত এক প্রতিবাদ সভায় তাঁকে “শিক্ষার শত্রু” আখ্যা দিয়ে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানানো হয়।
সভায় সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি মনিরুজ্জামান ভূঁইয়া লিটন।
তিনি বলেন, ূযে ব্যক্তি বাহিনী নিয়ে এসে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তাণ্ডব চালায়, সে সমাজের কল্যাণে নয় ধ্বংসাত্মক শক্তির অংশ। কাউছার-সহ যারা এই হামলার সাথে জড়িত তাদের আইনের আওতায় আনতেই হবে।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর আলম বলেন,বিদ্যালয়ের শান্ত পরিবেশ নষ্ট করতে এ ধরনের সন্ত্রাসী আচরণ ক্ষমার অযোগ্য। শিক্ষক শিক্ষার্থীরা আতঙ্কে পড়েছে। এমন ব্যক্তিদের কঠোর শাস্তি ছাড়া শিক্ষার পরিবেশ রক্ষা সম্ভব নয়।
সোনারগাঁ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সম্পাদক ও সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি কামরুজ্জামান ভূঁইয়া মাসুম আরও ক্ষুব্ধ কণ্ঠে বলেন,বিদ্যালয়ে হামলা মানে পুরো সমাজকে আঘাত করা।
কাউছার নামের ওই ব্যক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যে সন্ত্রাস সৃষ্টি করেছে, তা কোনোভাবেই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড নয় এটা সরাসরি অপরাধ। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে বৃহত্তর আন্দোলনে নামা ছাড়া উপায় থাকবে না।
প্রতিবাদ সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাদিপুর ইউনিয়ন বিএনপির সিনিয়র সহসভাপতি আলমগীর হোসেন, সহসভাপতি অধ্যাপক ইব্রাহিম মিয়া, যুগ্ম সম্পাদক বিল্লাল হোসেন, রফিকুল ইসলাম, যুব সম্পাদক এডভোকেট আল আমিন শাহ, এডভোকেট আনোয়ার হোসেন, ৫নং ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি নাসির উদ্দীন, ৮নং ওয়ার্ড সভাপতি শামসুল আলম, যুবদল নেতা আওলাদ হোসেন, সাবেক অভিভাবক সদস্য নাজিমউদ্দীন, এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক–অভিভাবকসহ স্থানীয় শতাধিক মানুষ।
বক্তারা একসঙ্গে ঘোষণা দেন,শিক্ষার শত্রু কাউছারকে অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে কেউ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে হামলার সাহস না পায়।