দক্ষিণ ভারতের অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ বিজয় থালাপতির রাজনৈতিক সমাবেশে পদদলিত হয়ে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৩৯ জনে পৌঁছেছে। এছাড়া পদদলিত হয়ে আহত হয়েছেন আরো ৪০ জন। শনিবার সন্ধ্যায় তামিলনাড়ুর করুর জেলায় এ মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে।

হিন্দুস্তান টাইমস জানিয়েছে, নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ১৭ জন নারী ও ৯ শিশু রয়েছেন। সমাবেশে হুড়োহুড়িতে এ দুর্ঘটনা ঘটে বলে মনে করা হচ্ছে।

আরো পড়ুন:

আসামের বৃদ্ধা সাকিনাকে ঢাকায় আদালতে পাঠাল পুলিশ

বাংলাদেশে পুশ ব্যাক করা ৬ ভারতীয়কে ফেরাতে কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশ

পুলিশের একটি সূত্র জানিয়েছে, থালাপতি বিজয় জনসভার মঞ্চে আসার পর তাকে কাছ থেকে দেখতে গিয়ে মঞ্চের ব্যারিকেডের দিকে চলে আসেন মানুষ। ওই সময় দমবন্ধকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে অনেকে জ্ঞান হারান। এরপরই পদদলনের ঘটনা ঘটে।

পুলিশের অপর একটি সূত্র হিন্দুস্তান টাইমসকে জানিয়েছে, জনসভায় ৩০ হাজার মানুষ জড়ো হবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে সেখানে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ জড়ো হয়ে যান। যা সেখানে বাড়তি চাপ ফেলে।

তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন বলেছেন, ৩৯ জন মারা গেছেন। আমাদের রাজ্যের ইতিহাসে, কোনো রাজনৈতিক দলের কোনো অনুষ্ঠানে এত সংখ্যক মানুষ কখনো প্রাণ হারাননি এবং ভবিষ্যতেও এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটা উচিত নয়।

প্রত্যক্ষদর্শীদের মতে, নিহত প্রাপ্তবয়স্করা বিজয়ের দল টিভিকের সমর্থক ছিল। তারা সকাল থেকে সমাবেশস্থলে ভিড় জমিয়েছিলেন এবং প্রায় ছয় ঘণ্টা অপেক্ষা করেছিলেন। বিজয়ের আগমন দেরি হওয়ায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়।

নিরাপত্তার উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে, পুলিশ তামিলাগা ভেত্রি কাজগমকে সমাবেশের জন্য ২৩টি শর্ত দিয়েছিল। এগুলোর মধ্যে ছিল- কনভয়, জনসাধারণের অভ্যর্থনা অনুষ্ঠানে যোগদানের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং গর্ভবতী মহিলা, বয়স্ক এবং প্রতিবন্ধীদের অনলাইনে সমাবেশে দেখার জন্য পরামর্শ।

বিজয়ের সমাবেশগুলোতে ব্যাপক লোকসমাগমের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। চলতি মাসের শুরুতে ত্রিচিতে প্রথম সমাবেশে বিমানবন্দর থেকে অনুষ্ঠানস্থলে তার কনভয়কে ঘিরে বিপুল জনতা উপস্থিত হয়েছিল, যার ফলে ২০ মিনিটের যাত্রা ছয় ঘন্টার যানজটে পরিণত হয়েছিল যা শহরকে স্থবির করে দিয়েছিল।

গত বছরের অক্টোবর মাসে বিজয় থালাপতির রাজনৈতিক দলের প্রথম সমাবেশে অন্তত ৬ জনের মৃত্যুর খবর দিয়েছিল স্থানীয় সংবাদমাধ্যম।

ঢাকা/ফিরোজ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র জন ত

এছাড়াও পড়ুন:

জনসভায় প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় কী বললেন থালাপতি বিজয়

ভারতের তামিলনাড়ু রাজ্যে জনসভায় পদদলিত হয়ে ৪১ জন নিহত হওয়ার পর প্রথমবারের মতো প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অভিনেতা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া থালাপতি বিজয়। আজ মঙ্গলবার এক্সে (সাবেক টুইটার) দেওয়া এক ভিডিও বার্তায় তিনি এ প্রতিক্রিয়া জানান।

৪ মিনিট ৪৫ সেকেন্ডের ভিডিওতে চলচ্চিত্রের ভঙ্গিমায় দীর্ঘ বিরতি দিয়ে দিয়ে বক্তব্যে থালাপতি বিজয় বলেন, ‘আমার জীবনে আগে কখনো এমন বেদনাদায়ক পরিস্থিতির সম্মুখীন হইনি।’ তিনি সমর্থকদের তাঁদের ‘অপরিসীম ভালোবাসা ও প্রত্যাশার’ জন্য ধন্যবাদ জানান। শোকাহত পরিবারগুলোর প্রতি সমবেদনা জানান।

বিজয় বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী মহোদয়, আপনি যদি আমাদের দোষ খুঁজে বের করতে মরিয়া হন, সেটা আমার সঙ্গে করুন। তাঁদের (আমার সমর্থকদের) এতে জড়াবেন না। আমি বাড়িতে বা অফিসে থাকব। আমার বিষয়ে যে সিদ্ধান্ত নিতে চান, তা-ই করুন।’

দক্ষিণের চলচ্চিত্রের এই শক্তিমান অভিনেতা বলেন, ‘আমার জীবনে আগে কখনো এতটা বেদনাদায়ক পরিস্থিতির মুখোমুখি হইনি। এটি সত্যিই বেদনাদায়ক। লোকজন আমার প্রতি বিশ্বাস ও ভালোবাসার কারণে সেখানে ভিড় করেছিলেন। আমি পুলিশ বিভাগকে নিরাপত্তার ব্যর্থতা নিয়ে তদন্তের জন্য অনুরোধ করব। এমন একটি দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় প্রাণহানির কারণে আমি গভীর শোকে আচ্ছন্ন।’

বক্তব্যের এক পর্যায়ে মর্মান্তিক এ ঘটনায় ভিড় নিয়ন্ত্রণের ব্যর্থতা নয়, বরং রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করেন থালাপতি। তিনি বলেন, ‘আমি অন্তত পাঁচটি জেলায় প্রচার চালিয়েছি। কিন্তু প্রাণহানির ঘটনা শুধু করুরেই ঘটল কেন? মানুষ সত্য ঘটনা জানে। মানুষ সব কিছু দেখছে। যখন করুরের মানুষ নিজেরাই সত্য উন্মোচন করা শুরু করল, তখন আমি অনুভব করলাম, যেন ঈশ্বর নিজেই সত্য বলছেন।’

থালাপতির বক্তব্যে কিছুটা শোক, অভিযোগ ও চ্যালেঞ্জের মিশ্রণ ছিল। তিনি বলেন, সমাবেশটি সরকার নির্ধারিত স্থানেই হয়েছিল। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘আমরা কিছুই ভুল করিনি।’

অভিনেতা থেকে রাজনীতিক বনে যাওয়া থালাপতি পুলিশের বিরুদ্ধে তাঁর দলকে অন্যায়ভাবে নিশানা করার অভিযোগ তোলেন। তিনি বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এমনকি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে থাকা বন্ধুদেরও নামেও মামলা করা হচ্ছে।’

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • জনসভায় প্রাণহানির ঘটনা নিয়ে প্রথম প্রতিক্রিয়ায় কী বললেন থালাপতি বিজয়