শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগের ১৯ নেতা-কর্মী আজীবন ও ১৫ জন সাময়িক বহিষ্কার
Published: 28th, September 2025 GMT
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সন্ত্রাসী হামলা, হলের কক্ষে অস্ত্র ও মাদক রাখার অভিযোগে সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের নিষিদ্ধঘোষিত ছাত্রলীগের ১৯ নেত–কর্মীকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোখলেসুর রহমান এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
একই অভিযোগে ৮ শিক্ষার্থীকে চার সেমিস্টার, একজনকে তিন সেমিস্টার, ১১ জনকে দুই সেমিস্টার, ১৫ জনকে সাময়িক বহিষ্কার এবং ৮ জনকে সতর্ক করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
প্রক্টর মোখলেসুর রহমান বলেন, ‘সিন্ডিকেটের ২৩৭তম সভায় কর্তৃপক্ষ বহিষ্কারের এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাময়িক শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদেরকে স্থায়ীভাবে কেন বহিষ্কার করা হবে না—এটা উল্লেখ করে কারণ দর্শানোর চিঠি দেওয়া হবে। পরে তাঁদের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
গত বৃহস্পতিবার সিন্ডিকেটের ওই সভা হয়। এতে গত বছর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগে শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আজীবন বহিষ্কৃতরা হলেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ও সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী খলিলুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক এবং বন ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সজীবুর রহমান, সহসভাপতিদের মধ্যে পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিমুল মিয়া, পরিসংখ্যান বিভাগের হাবিবুর রহমান হাবিব, বাংলা বিভাগের ইউসুফ হোসেন, সাংগঠনিক সম্পাদক জৈব রসায়ন ও আণবিক জীববিদ্যা (বিএমবি) লোকমান হোসেনকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
এ ছাড়া ছাত্রলীগকর্মীদের মধ্যে সমাজবিজ্ঞানের তারেক হাসান, পদার্থবিজ্ঞানের সৈয়দ মা’জ জারদি, সিয়াম খান, পেট্রোলিয়াম ও খনি প্রকৌশল বিভাগের মুজাহিদুল ইসলাম সায়মন, হলে অস্ত্র ও মাদক রাখার দায়ে সহসভাপতি ও পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী আশিকুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক ও পরিসংখ্যান বিভাগের অমিত সাহা, ছাত্রলীগকর্মীদের মধ্যে ব্যবসায় প্রশাসন বিভাগের তরিকুল ইসলাম, পরিসংখ্যান বিভাগের মাহবুবুর রহমান, সমুদ্রবিজ্ঞানের মারবিন ডালি রিকি, সমাজবিজ্ঞানের শান্ত তারা আদনান ও লোক প্রশাসনের মামুন মিয়াকে আজীবন বহিষ্কার করা হয়েছে।
ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী ফারহান হোসেন চৌধুরী (আরিয়ান) বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হামলা ও হলে অস্ত্র-মাদক রাখার অভিযোগে আজীবন বহিষ্কার হয়েছেন।
সাময়িক বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা হলেন—রসায়ন বিভাগ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মেহেদী হাসান (স্বাধীন), ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটির সহসভাপতিদের মধ্যে অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী মামুন শাহ, লোকপ্রশাসনের সাইমন আক্তার, পলিটিক্যাল স্টাডিজ ফারহান রুবেল, সমাজকর্ম বিভাগের আয়াজ উদ্দিন, বাংলা বিভাগের আইরিন আক্তার (লিনজা), নূর মোহাম্মদ (শৈশব), যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও লোকপ্রশাসন বিভাগের ইমামুল হাসান (হৃদয়), লোকপ্রশাসন বিভাগের সুমন মিয়া, ইংরেজি বিভাগের আজিজুল ইসলাম (সীমান্ত), সাংগঠনিক সম্পাদক ও পলিটিক্যাল স্টাডিজ বিভাগের শুভ সাহা, ছাত্রলীগকর্মী ও বন ও পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মুজাহিদুল ইসলাম (সাজ্জাদ), লোকপ্রশাসনের সায়মন আক্তার, আমিনুল ইসলাম, সমাজবিজ্ঞানের মোহাম্মদ আলী মঈন ও সমাজকর্মের এম এন রাখায়াত হোসেন (নাবিল)।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: পল ট ক য ল স ট ড জ র রহম ন ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
নার্সদের অমর্যাদাকর অবস্থানে রাখা হয়েছে: ফরহাদ মজহার
বাংলাদেশে জনগণের স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিশ্চিত করাটা অত্যন্ত জরুরি হলেও এখানে পেশা হিসেবে নার্সদের অমর্যাদাসম্পন্ন একটা অবস্থানে রাখা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন কবি ও রাষ্ট্রচিন্তক ফরহাদ মজহার।
ফরহাদ মজহার বলেন, ‘নার্সদের ডাক্তারি ব্যবস্থার অধীন একটা পেশা হিসেবে যে দেখা হয়, আমরা মনে করি এটা ভুল। এখান থেকে মুক্ত হতে হবে। নার্স সেবাটা স্বাস্থ্যসেবার একটা মৌলিক দিক। ফলে তাঁদের স্বাধীনভাবে এই পেশাকে চর্চা করবার সুযোগ–সুবিধা দিতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা বলেন ফরহাদ মজহার। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএনএ) ও স্বাস্থ্য আন্দোলন। স্বাস্থ্য আন্দোলনের পক্ষে বক্তব্য দেন ফরহাদ মজহার।
সরকার স্বাস্থ্যকে এখন আর জনগণের অধিকার হিসেবে স্বীকার করছে না বলে অভিযোগ করেন ফরহাদ মজহার। তিনি বলেন, ‘এখন স্বাস্থ্যকে অধিকার নয়, বাজারজাত পণ্য বানানো হয়েছে। টাকা থাকলে চিকিৎসা পাবেন, টাকা না থাকলে নয়।’
নার্সদের স্বাধীন পেশাগত চর্চা, পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ, ন্যায্য বেতন ও মর্যাদা নিশ্চিতের জন্য জাতীয় নার্সিং কমিশন গঠনের দাবি জানিয়ে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সদেরকে ডাক্তারদের হুকুমমতো চলতে হবে—এই ধারণা ভাঙতে হবে। স্বাস্থ্য মানে শুধু প্রেসক্রিপশন নয়, প্রতিরোধও একটি বড় দিক। নার্সদের মর্যাদা ও স্বাধীনতা নিশ্চিত হলে জনগণ প্রকৃত স্বাস্থ্যসেবা পাবে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, নার্সিং স্বাস্থ্যসেবার এক মৌলিক দিক। কিন্তু আমাদের সমাজে চিকিৎসাকে ডাক্তারিকরণ বা মেডিক্যালাইজেশন করা হয়েছে। অনেক রোগে ডাক্তার কিংবা ওষুধের প্রয়োজনই হয় না। এ জায়গায় নার্সরা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন।
সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ নার্সেস অ্যাসোসিয়েশনের (বিএনএ) সভাপতি মো. শরিফুল ইসলাম। এক মাসের মধ্যে নার্সিং কমিশন গঠনের এক দফা দাবি বাস্তবায়ন না হলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে কঠোর কর্মসূচি দেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনের সঞ্চালনা করেন বিএনএর সহসভাপতি মাহমুদ হোসেন তমাল। এতে উপস্থিত ছিলেন স্ট্যান্ডিং কমিটির চেয়ারপারসন জরিনা খাতুন, সহসভাপতি মনির হোসেন ভূঁইয়া এবং সংগঠনের অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা-কর্মী।