চীনে তিন বছর বয়সী এক ছেলেশিশুর ক্যালিগ্রাফি দক্ষতা ইন্টারনেটে রীতিমতো মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। একটি লম্বা লাল রঙের কাগজের ওপর এক মনে ক্যালিগ্রাফি করে যাচ্ছিল শিশুটি। সে এমনভাবে তুলি ধরেছে, যেন সেটি তুলি নয়, বরং একটি ফিডার।

 তবে ছোট্ট হাতে লম্বা তুলিটি সে যেভাবেই ধরুক, তাতে তার ক্যালিগ্রাফি করায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না।

চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাওয়া ওই শিশুর ডাকনাম ল্যাংল্যাং। সে দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশের বাসিন্দা।

ল্যাংল্যাংয়ের মা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তাঁর ছেলে বাড়িতে বা অন্য কোথাও গিয়ে ক্যালিগ্রাফি শেখেনি। এমনকি এক মনে সে যেসব অক্ষর এঁকে চলেছে, সেগুলোর বেশির ভাগই সে চেনে না।

তবে ল্যাংল্যাংয়ের পরিবারের সদস্যরা ক্যালিগ্রাফির সঙ্গে জড়িত। পরিবারের ভেতরই সে ক্যালিগ্রাফি করতে দেখেছে। ল্যাংল্যাংয়ের মা নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।

শিশুটির মা বলেন, ‘আমরা তাকে চীনা অক্ষর চেনাতে বা লেখা শেখাতে কোনো চেষ্টাই করিনি। সম্ভবত পারিবারিক পরিবেশ থেকে সে নিজে নিজেই এটা শিখে গেছে। আমাদের ক্যালিগ্রাফি লিখতে ভালো লাগে। সে কখনো কখনো কাছে বসে আমাদের লিখতে দেখেছে। এই বছরের শুরুতে সে নিজেই ক্যালিগ্রাফি করার চেষ্টা করতে চাইল।’

ভিডিওতে ল্যাংল্যাংকে লাল রঙের যে লম্বা কাগজে ক্যালিগ্রাফি করতে দেখা যায়, চীনা ভাষায় সেটিকে ‘চুনলিয়ান’ বলে। বসন্ত উৎসবে শুভকামনা জানাতে চুনলিয়ানে নানা বার্তা লেখা হয়।

চান্দ্র নববর্ষের ছুটির সময় চীনারা বাড়ির দরজায় শুভকামনার বার্তা লেখা চুনলিয়ান বাড়ির দরজায় টানান।

ভিডিওতে দর্শকদের সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে ছেলেটির বিভিন্ন ধরনের ক্যালিগ্রাফি লেখার ক্ষমতা। সে সাধারণ ধরন থেকে জটিল ‘ক্যুরসিভ’ ধরনে ক্যালিগ্রাফি করতে পারে।

ল্যাংল্যাংয়ের ক্যালিগ্রাফির ওই ভিডিওর নিচে বহু মানুষ মন্তব্য করেছেন। একজন লেখেন, ‘সে সত্যি এক বিস্ময়কর প্রতিভা। অক্ষরগুলো কীভাবে লিখতে হবে, সে শুধু সেটাই মনে রাখেনি, বরং প্রতিবার তুলির টান কীভাবে দিতে হবে, সে সেটাও স্মরণে রেখেছে।’

আরেকজন লেখেন, ‘একজন প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে আমি যেভাবে লিখি, তা এই বালকের চেয়ে অনেক বেশি অসুন্দর।’

একজন দুঃখ করে বলেন, ‘দয়া করে এত ভালো ক্যালিগ্রাফি অনুশীলন কোরো না। একজন প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে আমাদের সম্মানে আঘাত লাগছে।’

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র

প্রাচীন গল্পে আছে, ইকারাস মোমের ডানা নিয়ে সূর্যের খুব কাছে উড়ে গিয়েছিল। তখন মোম গলে গেলে ইকারাস নিচে পড়ে যায়। সৃজনশীল এক ফটোগ্রাফার সম্প্রতি সূর্যের দারুণ এক ছবি তুলে সেই দৃশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় একজন স্কাইডাইভার মাত্র এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশের জন্য সূর্যের সামনে দিয়ে নেমে যান। ঠিক তখনই তাঁকে ক্যামেরাবন্দী করেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি। জ্বলন্ত সূর্যের মুখের ওপর দিয়ে যেন এক মানব প্রতিকৃতি নিচে নেমে গেল, এমন দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরা লেন্সে। দৃষ্টিবিভ্রমের এক অসাধারণ কীর্তি তৈরি করেছেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি।

অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি নিখুঁতভাবে তাঁর ক্যামেরা দিয়ে একজন স্কাইডাইভারকে ক্যামেরার সংকীর্ণ ফিল্ড অব ভিউয়ের মধ্য দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় ধারণ করেন। ছবিটি বেশ পরাবাস্তব এক অনুভূতি তৈরি করেছে। ইকারাসকে নিয়ে প্রাচীন মিথের সঙ্গে ছবিটি তুলনা করেছেন অনেকেই।

অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি চাঁদ ও সূর্যের অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছবি তোলার জন্য পরিচিত। তিনি সূর্যের সামনে স্কাইডাইভারের এই একটি মাত্র ছবির জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সূর্যের ছবি তোলা এমনিতেই কঠিন কাজ। সেখানে সূর্যের সামনে গতিশীল একটি বিমান বা একজন পতিত মানবকে একই ফ্রেমে আনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিমানটির গতিপথ, সূর্যের কোণ, ক্যামেরার অবস্থান ও স্কাইডাইভারের অবতরণের মতো সব বিষয়কে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে এক করে কাজটি হয়েছে।

অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি বলেন, ‘বলা যায়, একেবারে অযৌক্তিক একটি কাজ করেছি। যদিও চূড়ান্ত ছবিটি দারুণ এক অনুভূতি দেয়। স্কাইডাইভার ছিলেন ইউটিউবার ও সংগীতজ্ঞ গ্যাব্রিয়েল সি ব্রাউন। সে সূর্যের উত্তাল হলুদ পৃষ্ঠের বিপরীতে একটি কালো সিলুয়েট বা ছায়ামূর্তি হিসেবে ছবিতে চলে এসেছে। সূর্যের অবস্থান ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে হলেও ক্যামেরায় দারুণভাবে দেখা যাচ্ছে সব। ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করা ছবি অসম্ভব বলে মনে হয়। আগুনের মতো সৌর ক্রোমোস্ফিয়ারের আবহের বিপরীতে একটি সত্যিকারের মানব চিহ্ন আমাদের মুগ্ধ করে। দেখে মনে হবে যেন, মহাকাশে কেউ নিচে পড়ে যাচ্ছে।’

স্কাইডাইভাররা ব্রাউনের ৩ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে পতন শুরু করলে প্রায় ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে প্যারাসুট খোলার আগে ছবি তোলার সুযোগ মেলে। ম্যাককার্থি একটি লুন্ট ৬০ মিলিমিটার এইচ–আলফা ক্যামেরায় তার ফ্রি ফলের ছবি তোলেন। একটি এএসআই ১ হাজার ৬০০ মিলিমিটারে একক এক্সপোজার ধারণ করা হয়। আসলে এই বিভ্রমের মূল কারণ হচ্ছে দূরত্বের সামঞ্জস্য। ব্রাউন একটি ছোট বিমান থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ফুট ওপর থেকে লাফ দেন। আর ম্যাককার্থি প্রায় আট হাজার ফুট দূরে অবস্থান করেছিলেন। স্কাইডাইভার অবশ্যই সূর্যের কাছে ছিলেন না। শুধু ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত অবস্থানের কারণে স্কাইডাইভারকে অসম্ভব কাছাকাছি দেখাচ্ছিল। আসলে লাফ দেওয়ার আগে বিমানটিকে সঠিক অবস্থানে আনার জন্য ছয়বার চেষ্টা করতে হয়েছে। স্কাইডাইভারকে ফ্রেমে ধরার জন্য মাত্র একবারের সুযোগ ছিল। ম্যাককার্থি তাঁর মনিটরে সেই ক্ষুদ্র অবয়বটিকে সূর্যের আলোর সঙ্গে মিলিয়ে একটি নিখুঁত অবয়ব ধারণ করেন।

এই ছবিকে অনেকেই পৌরাণিক রূপকথার সঙ্গে তুলনা করছেন। গ্রিক মিথের ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ম্যাককার্থির এ ছবিটি সেই আখ্যানকেই একটি আধুনিক ও স্পষ্ট রূপে যেন তুলে ধরছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে হঠাৎ কেন অবস্থান নিলেন ট্রাম্প
  • এশিয়ার প্রভাবশালী নারী ব্যবসায়ী কারা, কীসের ব্যবসা তাঁদের
  • করদাতা মারা গেলেও যে কারণে কর দিতে হয়, কীভাবে দেওয়া হয়
  • ৩ কোটি টাকা, ব্যক্তিগত উড়োজাহাজসহ আরও যা যা পান একজন মিস ইউনিভার্স
  • গায়িকা থেকে বিধায়ক, মৈথিলীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসারী চমকে ওঠার মতো
  • সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিলেন উপদেষ্টার এপিএস
  • বিএনপি নেতা খুন: অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী ফেসবুকে লিখলেন ‘আউট’
  • সাজা হলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘কনভিকশন ওয়ারেন্টের’ আবেদন করা হবে
  • সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র
  • আটকে গেল প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সনদ পাওয়া সেই বাংলা সিনেমা, নেপথ্যে কী