তিন বছর বয়সেই শিশুটি ক্যালিগ্রাফি শিখে গেছে
Published: 28th, September 2025 GMT
চীনে তিন বছর বয়সী এক ছেলেশিশুর ক্যালিগ্রাফি দক্ষতা ইন্টারনেটে রীতিমতো মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে। একটি লম্বা লাল রঙের কাগজের ওপর এক মনে ক্যালিগ্রাফি করে যাচ্ছিল শিশুটি। সে এমনভাবে তুলি ধরেছে, যেন সেটি তুলি নয়, বরং একটি ফিডার।
তবে ছোট্ট হাতে লম্বা তুলিটি সে যেভাবেই ধরুক, তাতে তার ক্যালিগ্রাফি করায় কোনো সমস্যা হচ্ছে না।
চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল একটি ভিডিওতে দেখা যাওয়া ওই শিশুর ডাকনাম ল্যাংল্যাং। সে দক্ষিণ চীনের গুয়াংডং প্রদেশের বাসিন্দা।
ল্যাংল্যাংয়ের মা স্থানীয় সংবাদমাধ্যমকে বলেন, তাঁর ছেলে বাড়িতে বা অন্য কোথাও গিয়ে ক্যালিগ্রাফি শেখেনি। এমনকি এক মনে সে যেসব অক্ষর এঁকে চলেছে, সেগুলোর বেশির ভাগই সে চেনে না।
তবে ল্যাংল্যাংয়ের পরিবারের সদস্যরা ক্যালিগ্রাফির সঙ্গে জড়িত। পরিবারের ভেতরই সে ক্যালিগ্রাফি করতে দেখেছে। ল্যাংল্যাংয়ের মা নিজের নাম প্রকাশ করতে চাননি।
শিশুটির মা বলেন, ‘আমরা তাকে চীনা অক্ষর চেনাতে বা লেখা শেখাতে কোনো চেষ্টাই করিনি। সম্ভবত পারিবারিক পরিবেশ থেকে সে নিজে নিজেই এটা শিখে গেছে। আমাদের ক্যালিগ্রাফি লিখতে ভালো লাগে। সে কখনো কখনো কাছে বসে আমাদের লিখতে দেখেছে। এই বছরের শুরুতে সে নিজেই ক্যালিগ্রাফি করার চেষ্টা করতে চাইল।’
ভিডিওতে ল্যাংল্যাংকে লাল রঙের যে লম্বা কাগজে ক্যালিগ্রাফি করতে দেখা যায়, চীনা ভাষায় সেটিকে ‘চুনলিয়ান’ বলে। বসন্ত উৎসবে শুভকামনা জানাতে চুনলিয়ানে নানা বার্তা লেখা হয়।
চান্দ্র নববর্ষের ছুটির সময় চীনারা বাড়ির দরজায় শুভকামনার বার্তা লেখা চুনলিয়ান বাড়ির দরজায় টানান।
ভিডিওতে দর্শকদের সবচেয়ে বেশি অবাক করেছে ছেলেটির বিভিন্ন ধরনের ক্যালিগ্রাফি লেখার ক্ষমতা। সে সাধারণ ধরন থেকে জটিল ‘ক্যুরসিভ’ ধরনে ক্যালিগ্রাফি করতে পারে।
ল্যাংল্যাংয়ের ক্যালিগ্রাফির ওই ভিডিওর নিচে বহু মানুষ মন্তব্য করেছেন। একজন লেখেন, ‘সে সত্যি এক বিস্ময়কর প্রতিভা। অক্ষরগুলো কীভাবে লিখতে হবে, সে শুধু সেটাই মনে রাখেনি, বরং প্রতিবার তুলির টান কীভাবে দিতে হবে, সে সেটাও স্মরণে রেখেছে।’
আরেকজন লেখেন, ‘একজন প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে আমি যেভাবে লিখি, তা এই বালকের চেয়ে অনেক বেশি অসুন্দর।’
একজন দুঃখ করে বলেন, ‘দয়া করে এত ভালো ক্যালিগ্রাফি অনুশীলন কোরো না। একজন প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে আমাদের সম্মানে আঘাত লাগছে।’
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফিলিপাইনে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার ভূমিকম্পে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৬৯
ফিলিপাইনের মধ্যাঞ্চলে ৬ দশমিক ৯ তীব্রতার শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা বেড়ে ৬৯ জন হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ-সংশ্লিষ্ট একজন কর্মকর্তা আজ বুধবার এ খবর জানান। বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনা ও পানি-বিদ্যুতের সংযোগ আবার চালু করার চেষ্টা করছে ফিলিপাইন সরকার।
দেশটির সিভিল ডিফেন্স কর্মকর্তা রাফি আলেজান্দ্রো সাংবাদিকদের বলেন, স্থানীয় সময় গতকাল মঙ্গলবার রাত ১০টার আগে সেবু প্রদেশের উত্তরে বোগো শহরের কাছে ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয়। স্থানীয় হাসপাতালগুলো আহত মানুষের ভিড়ে রীতিমতো উপচে পড়ছে।
আঞ্চলিক সিভিল ডিফেন্স দপ্তরের তথ্য কর্মকর্তা জেন আবাপো বলেন, সেবুর প্রাদেশিক দুর্যোগ দপ্তরের কাছ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, ভূমিকম্পে নিহত হওয়ার সংখ্যা এখন পর্যন্ত ৬৯ জন। অন্য একজন কর্মকর্তা জানান, আহত হয়েছেন ১৫০ জনের বেশি।
দেশটির প্রেসিডেন্ট ফার্দিনান্দ মার্কোস জুনিয়র বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের দ্রুত সহায়তার আশ্বাস দিয়েছেন। তিনি জানান, মন্ত্রিপরিষদ সচিবেরা ত্রাণ কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। প্রিয়জন হারানো ব্যক্তিদের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি।
সেবু ফিলিপাইনের জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্যগুলোর একটি। সেখানে প্রায় ৩৪ লাখ মানুষের বসবাস। ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হলেও ম্যাকতান-সেবু আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের কার্যক্রম চালু রয়েছে। এটা ফিলিপাইনের দ্বিতীয় ব্যস্ততম বিমানবন্দর।
ভূমিকম্পে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সান রেমিগিও শহরটিও। উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সহায়তার জন্য এ শহরে ‘দুর্যোগপূর্ণ অবস্থা’ ঘোষণা করা হয়েছে। শহরের ভাইস মেয়র আলফি রেইনেস বলেন, উদ্ধারকর্মীদের জন্য খাবার ও পানি, সেই সঙ্গে ভারী সরঞ্জাম প্রয়োজন।
স্থানীয় ডিজেডএমএম রেডিওকে আলফি রেইনেস বলেন, ‘ভারী বৃষ্টি হচ্ছে। বিদ্যুৎ নেই। আমাদের সত্যিই সহায়তা দরকার। বিশেষ করে উত্তরাঞ্চলে পানির তীব্র সংকট রয়েছে। ভূমিকম্পে সেখানে সরবরাহ লাইন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
আরও পড়ুনফিলিপাইনে শক্তিশালী ভূমিকম্পে নিহত অন্তত ২৬, চলছে উদ্ধারকাজ৫ ঘণ্টা আগে