গণ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (গকসু) নির্বাচনে সাংগঠনিক পরিচয় গোপন রেখে ভোটে জেতার পর ইসলামী ছাত্রশিবিরের প্যানেল হিসেবে আত্মপ্রকাশকে প্রতারণামূলক বলে অভিযোগ তুলে জিএস ও এজিএস পদে পুনর্নির্বাচনের দাবি করেছে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রদল।

গকসু ভোটে জিএস পদে মো. রায়হান খান এবং এজিএস পদে সামিউল হাসান শোভন জয় পেয়েছেন।

আরো পড়ুন:

ছাত্রদলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের ‘সর্বজনীন শিক্ষার্থী ঐক্য পরিষদ’ প্যানেল ঘোষণা

জকসুতে ৯ সম্পাদকীয় পদ যুক্ত করার প্রস্তাব ছাত্রদলের

গকসুর গঠনতন্ত্রে রাজনৈতিক শিক্ষার্থীদের নির্বাহী পদে নির্বাচনে নিষেধাজ্ঞা থাকার বিষয়টি তুলে ধরে বিবৃতি দিয়েছেন গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল সভাপতি মো.

নির্জন ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুর রহমান বিজয়।

রবিবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সংগঠনটির দপ্তর সম্পাদক উল্লাস কুমার দত্ত আকাশের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, গকসুর গঠনতন্ত্রের ১, ১১ ও ১৭(খ) ধারা অনুযায়ী ছাত্রসংসদ সম্পূর্ণ অরাজনৈতিক।

“কোনো ব্যক্তি বা সংগঠনের রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা থাকলে তার সদস্যপদ বাতিল হওয়ার কথা। সে কারণে ছাত্রদল কোনো প্যানেল ঘোষণা করেনি, এমনকি মনোনয়ন সংগ্রহ করলেও সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। অরাজনৈতিক অবস্থান বজায় রেখেই প্রার্থীরা ভোটে অংশ নেন,” বলা হয়েছে বিবৃতিতে।

নির্জন ও বিজয়ের অভিযোগ, ভোটগ্রহণ ও ফলাফল ঘোষণার আগ পর্যন্ত কারো রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার বিষয়টি সামনে না এলেও ফল প্রকাশের পর জানা যায়, ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক গকসুর নির্বাচিত জিএস ও এজিএসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমেও বিষয়টি উঠে আসে। এতে প্রমাণিত হয়, শিবিরের প্যানেল গুপ্তভাবে নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল এবং বিজয়ের পর তা প্রকাশ করেছে।

এই কার্যক্রম শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতির পরিপন্থি নয়, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণাও বলে মন্তব্য করে বিবৃতিতে নেতারা বলেন, গকসুর গঠনতন্ত্রের ১৭.১ (খ) ধারায় স্পষ্ট বলা আছে, কোনো রাজনৈতিক সংগঠনে যোগ দিলে তার সদস্যপদ বাতিল হবে। একইভাবে ১১ ধারায় উল্লেখ আছে, দলীয় রাজনীতিতে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থী গকসুর নির্বাহী পদে নির্বাচনের অযোগ্য।

“আমরা দাবি জানাই, ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী প্রতিষ্ঠিত এই বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতার কারণে জিএস ও এজিএসের সদস্যপদ বাতিল করতে হবে এবং এই দুই পদে পুনর্নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে হবে,” বলা হয়েছে যৌথ বিবৃতিতে।

ছাত্রদলের নেতাদের ভাষ্য, অরাজনৈতিক ক্যাম্পাস নিশ্চিত করতে শিক্ষার্থীদের পাশে থেকে কাজ চালিয়ে যাবেন তারা।

ডাকসু-জাকসুর পর দেশের বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে গণ বিশ্ববিদ্যালয় প্রথম ছাত্রসংসদ নির্বাচন হয়। এতে সহ-সভাপতি নির্বাচিতন হন বাংলা বিভাগের শিক্ষার্থী ইয়াছিন আল মৃদুল দেওয়ান। রায়হান জিএস ও শোভন এজিএস হন।

২০১৩ সালে গকসুর প্রথম নির্বাচন হয়েছিল। সবশেষ ২০১৮ সালে তৃতীয়বারের মতো নির্বাচন হয়। এর প্রায় সাত বছর পর চতুর্থবারের মতো গকসু নির্বাচন হয়। 

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের দাবি অনুযায়ী, ভোটগ্রহণ, গণণা ও ফলাফল সবই শান্তিপূর্ণভাবে হয়েছে। নিরাপত্তার দায়িত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় চারশ সদস্য মোতায়েন করা হয়।

অবশ্য ভোটগণনার সময় প্রার্থী ও প্রার্থীদের এজেন্টের না রাখায় অসন্তোষ তৈরি হয়। গণনাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রবেশে কড়া বিধিনিষেধ আরোপ করায়, তা নিয়েও ক্ষোভ তৈরি হয়।

ঢাকা/সানজিদা/রাসেল

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ছ ত রদল ছ ত রদল জ এস ও সদস য গকস র

এছাড়াও পড়ুন:

পঞ্চগড় সদর ও পৌর যুবদলের নতুন কমিটি বাতিলের দাবি 

পঞ্চগড় সদর উপজেলা ও পৌর যুবদলের পূর্বের আহ্বায়ক কমিটি বিলুপ্ত করে সম্প্রতি নতুন কমিটি ঘোষণা করেছে কেন্দ্রীয় কমিটি। তবে এই কমিটি বিধিবহির্ভূত উল্লেখ করে তা বাতিলের দাবি জানিয়েছে আগের কমিটির নেতারা। 

রবিবার (১৬ নভেম্বর) পঞ্চগড় প্রেসক্লাব মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে যৌথভাবে এ দাবি তোলেন পঞ্চগড় সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মো. বশির, পৌর যুবদলের সাবেক ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক ময়নুল ইসলাম ও সদস্য সচিব নূর ইসলাম দিপু। 

আরো পড়ুন:

২৪ ঘণ্টার মধ্যে ব্রাকসুর তফসিল ঘোষণার দাবি

পে-স্কেল বাস্তবায়নের দাবিতে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন

তাদের অভিযোগ ত্যাগী, নির্যাতিত নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে দলের গঠনতন্ত্র উপেক্ষা করে বিধিবহির্ভূতভাবে তথাকথিত একতরফা ও পকেট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে। পঞ্চগড়-১ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী ব্যারিস্টার নওশাদ জমির কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ কমিটি অনুমোদন করেছেন।

তারা বলেন, মূলত উপজেলা ও পৌর যুবদলের কমিটি জেলা কমিটির অনুমোদন নিয়ে প্রস্তাবিত কমিটি কেন্দ্রে পাঠায়। কিন্তু নতুন কমিটির ব্যাপারে জেলার নেতারা কিছু জানে না। এখানে ত্যাগী ও বিগত দিনে আন্দোলন সংগ্রামে অংশ নেওয়া এবং নির্যাতিতদের বঞ্চিত করা হয়েছে। যাদের দিয়ে কমিটি করা হয়েছে, তারা কখনো যুবদলের রাজনীতিতে জড়িত ছিল না। তারা ছাত্রদল ও স্বেচ্ছাসেবক দলে ছিল। দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী পদ পেতে অন্তত তিন বছর যুবদলের রাজনীতিতে যুক্ত থাকতে হবে। কিন্তু তারা কেউ যুবদলের রাজনীতি করেনি।

বক্তব্যে পঞ্চগড় পৌর যুবদলের সাবেক সদস্য সচিব নুর ইসলাম দিপু বলেন, ‘‘নতুন কমিটিতে যাকে সভাপতি করা হয়েছে, তিনি স্বেচ্ছাসেবক দলের সঙ্গে যুক্ত। তিনি কখনোই যুবদলে ছিলেন না। আগামী তিন দিনের মধ্যে এই কমিটি বিলুপ্ত না করা হলে কঠোর আন্দোলনে যাবে ত্যাগী নেতারা।’’ 

সদর উপজেলা যুবদলের সাবেক আহ্বায়ক মো. বশির বলেন, ‘‘উপজেলার নতুন কমিটিতে যাকে সভাপতি করা হয়েছে, তিনি কখনো উপজেলা যুবদলে ছিলেন না। তার বাড়ি পৌরশহরে। পৌরসভায় বাড়ি হওয়া সত্ত্বেও বিধিবহির্ভুতভাবে উপজেলা কমিটিতে তাকে পদ দেওয়া হয়েছে।’’

পঞ্চগড় জেলা যুবদলের সভাপতি ফেরদৌস ওয়াহিদ রাসেল বলেন, ‘‘নতুন কমিটির বিষয়ে আমরাও জানতাম না। হঠাৎ করে জানতে পেরেছি কাগজের মাধ্যমে। কেন্দ্রের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেছি কিন্তু কেউ ফোন রিসিভ করেননি।’’ 

ঢাকা/নাঈম/বকুল 

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • পঞ্চগড় সদর ও পৌর যুবদলের নতুন কমিটি বাতিলের দাবি