ইসলামে নাম বিকৃতি করার পরিণতি
Published: 30th, September 2025 GMT
নাম মানুষের পরিচয়ের অন্যতম প্রধান অংশ। একটি সুন্দর ও অর্থবহ নাম শুধু দুনিয়াতে নয়, আখিরাতেও মর্যাদা বয়ে আনে। ইসলাম নামের গুরুত্বকে অত্যন্ত জোর দিয়ে উল্লেখ করেছে।
রাসুল (সা.) সন্তানের সুন্দর নাম রাখতে বলেছেন এবং অনেকের নাম পরিবর্তনও করেছেন, যদি তাতে মন্দ অর্থ বা বিকৃত ধ্বনি থাকে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে আমাদের সমাজে প্রায়ই নাম বিকৃতি বা নাম বিকৃতভাবে উচ্চারণ করার প্রবণতা দেখা যায়, যা ইসলামি শিক্ষার পরিপন্থী।
সঠিক নামে ডাকার গুরুত্বকোরআন ও হাদিসে বারবার বলা হয়েছে, মানুষকে তার নিজস্ব নামেই ডাকা উচিত।
আল্লাহ বলেন: “তোমরা একে অপরকে উপহাস করো না, একে অপরকে মন্দ নামে ডেকো না। ঈমানের পর মন্দ নামকরণ অতি নিকৃষ্ট।” (সুরা হুজুরাত, আয়াত: ১১)
রাসুল (সা.
নাম বিকৃতির অনেক রূপ হতে পারে, তবে সবচে’ খারাপ হলো, নামকে খারাপ অর্থে বা মন্দ ইঙ্গিত করে ডাকা। বা শারীরিক বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে মিলিয়ে নাম বিকৃত করে ডাকা।
এগুলো কেবল সামাজিকভাবে অশোভনই নয়, বরং ইসলামে নিষিদ্ধ। এতে ইসলামের অনেকগুলো বিধানের লঙ্ঘন হয়, যেমন:
১. অপমান ও ব্যঙ্গ – এটি অন্যকে কষ্ট দেওয়ার সমতুল্য, যা ইসলামে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ।
২. অর্থের বিকৃতি – নামের মূল অর্থ পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে, যেমন “আব্দুল্লাহ” থেকে “আবু” বানালে দাসত্বের অর্থ হারিয়ে যায়।
৩. পরিচয়ের বিভ্রান্তি – সামাজিক ও আইনগত দিক থেকেও নাম বিকৃতি সমস্যার সৃষ্টি করে।
৪. আল্লাহর অপ্রসন্নতা – কোরআনেই সরাসরি বলা হয়েছে, কারও নাম বিকৃত করা ঈমান পরবর্তী অবস্থায় বড় গুনাহের কাজ।
আরও পড়ুনআল্লাহর ৯৯ নাম ও তার ফজিলত২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫নবীজির নির্দেশনারাসুল (সা.) শুধু কু-অর্থবাহী নাম পরিবর্তনই করেননি, বরং বিকৃত বা অশোভন নামের পরিবর্তে সুন্দর নাম দিয়েছেন। এক সাহাবির নাম ছিল “হুযন” (কষ্ট), নবীজি তা পরিবর্তন করে “সাহল” (সহজ) রেখেছিলেন। (সহিহ বুখারি, হাদিস: ৬১৯০)
তিনি বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে কিয়ামতের দিনে সবচেয়ে অপছন্দনীয় ব্যক্তি সে, যার নাম ‘খবীস’ (অশুভ বা মন্দ)।” (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ২১৩৬)
এ থেকে বোঝা যায়, ইসলাম নাম বিকৃতি বা মন্দ অর্থবাহী নাম ব্যবহারকে নিরুৎসাহিত করেছে।
মনীষীদের অভিমতইবনে হাজার আসকালানি (রহ.) বলেন, নাম বিকৃত করা মানুষের আত্মমর্যাদার উপর আঘাত হানে, যা ইসলামের নৈতিকতার পরিপন্থী। (ইবনে হাজার, ফাতহুল বারি, ভলিউম ১০, পৃ. ৫৭২, দারুল মাআরিফ, কায়রো, ১৯৫৯)
ইমাম নববী (রহ.) বলেন: মন্দ নামে কাউকে ডাকা, এমনকি মজা করার জন্য হলেও হারাম। (নববী, শারহ সহিহ মুসলিম, ভলিউম ১৬, পৃ. ১৭৮, দারুল ফিকর, বৈরুত, ১৯৯৫)
ইসলামে নাম বিকৃতি করা শুধু শিষ্টাচারবিরোধী নয়, বরং একটি গুরুতর গুনাহ। কোরআন ও হাদিসে স্পষ্ট নির্দেশনা রয়েছে—মুসলিমদের উচিত পরস্পরকে সুন্দর নামে ডাকা এবং কারও নাম বিকৃত বা ব্যঙ্গার্থে ব্যবহার না করা। আমাদের সামাজিক জীবনে এ বিষয়টি গভীরভাবে উপলব্ধি করা দরকার।
আরও পড়ুনইসলাম অনুসারে সন্তানের আধুনিক নাম৩০ জুলাই ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: স ন দর ন ম ক রআন ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় পেট্রল ঢেলে আগুন
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন শাখা কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার ভোরে গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখা ভবনের বারান্দায় পেট্রল আগুন দেওয়া হয়। এতে ব্যাংকের বৈদ্যুতিক তার পুড়ে গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ছাড়া বারান্দায় একটি ব্যানার, ক্যারম বোর্ড ও আসবাব আগুনে পুড়ে যায়।
ধুনট থানা-পুলিশ ও গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, আজ ভোরে দুর্বৃত্তরা গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখার কার্যালয়ের বারান্দায় পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বালু ও পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর-ধুনট সার্কেল) সজীব শাহরীন ও ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ব্যাংকের নৈশপ্রহরী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে বারান্দায় সতর্ক অবস্থায় ছিলাম। রাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎ বারান্দায় আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পাই। দুর্বৃত্তরা পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।’
শাখাটির ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, রাতে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকা নৈশপ্রহরী সামান্য সময়ের জন্য বারান্দা থেকে একটি কক্ষের ভেতরে যান। এ সুযোগে দুর্বৃত্তরা বারান্দায় অগ্নিসংযোগ করে দ্রুত পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে বড় রকমের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আগে থেকেই বালু ও পানি মজুত ছিল। আজ সকাল থেকে যথারীতি ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে।
ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব শাহরীন বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধুনট থানার পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।