ময়মনসিংহ জেলা পরিষদে ২০২৪-২৫ অর্থবছরের রাজস্ব বাজেটের ঐচ্ছিক কার্যাবলির আওতায় নেওয়া প্রকল্পে বরাদ্দ নিয়ে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। অস্তিত্ববিহীন প্রতিষ্ঠানের নামে বরাদ্দ, আবেদন না করেই অর্থ লাভ, একই ব্যক্তির একাধিক নামে বরাদ্দ বাগিয়ে নেওয়া এবং একটি ইউনিয়নে বেশি বরাদ্দ যাওয়া—গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও বরাদ্দের ক্ষেত্রে রাজনৈতিক প্রভাবচর্চা ও জবাবদিহিহীন সংস্কৃতির বিষয়টি আবারও সামনে এল এ ঘটনার মধ্য দিয়ে।

প্রথম আলোর প্রতিবেদনে জানা যাচ্ছে, জনস্বাস্থ্য উপখাতে ৪৭টি প্রকল্পের মধ্যে ১৭টিই ভাবখালী ইউনিয়নে দেওয়া হয়েছে। এই বিপুল বরাদ্দের নেপথ্যে রয়েছেন মো.

আইনুল হক নামের এক ব্যক্তি, যিনি জামায়াতের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত থাকার দাবি করেন এবং জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) কবির হোসেন সরদারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতার প্রমাণ দিয়েছেন। তাঁর নামে দুটি মাদ্রাসা ও একটি পারিবারিক কবরস্থানকে ‘সামাজিক গোরস্তান’ দেখিয়ে মোট সাত লাখ টাকা বরাদ্দ পাওয়ার ঘটনাটি স্পষ্টতই ক্ষমতার অপব্যবহার ও স্বজনপ্রীতির দিকে ইঙ্গিত করে। এমনকি একাধিক প্রতিষ্ঠান আবেদন না করা সত্ত্বেও তাদের নামে বরাদ্দ দিয়ে সে টাকা তুলে নেওয়ার অভিযোগটিও ভয়াবহ। যখন একজন প্রভাবশালী ব্যক্তি সরকারি কর্মকর্তার সঙ্গে সখ্যের সুযোগ নিয়ে ব্যক্তিগত বা রাজনৈতিক উদ্দেশ্য হাসিল করতে সরকারি অর্থ হাতিয়ে নেন, তখন তা জনগণের আস্থাকে চরমভাবে ক্ষুণ্ন করে।

জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সিইও কবির হোসেন সরদারের বক্তব্য, প্রকল্পগুলো মাঠপর্যায়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে কি না, তা প্রথম কিস্তি দেওয়ার আগে যাচাই করার সুযোগ নেই। তাহলে আবেদন ছাড়াই বরাদ্দ পাওয়া কীভাবে সম্ভব? অস্তিত্ববিহীন বা সাইনবোর্ডবিহীন প্রতিষ্ঠানের নামে টাকা দেওয়া হচ্ছে, সেই প্রকল্পই–বা কীভাবে বাস্তবায়িত হবে?

প্রকল্পে অনিয়মের অভিযোগ তদন্তে গত বুধবার জেলা পরিষদ কার্যালয়ে অভিযান চালায় দুদকের ময়মনসিংহ জেলা কার্যালয়ের চার সদস্যের একটি দল। তাদের অনুসন্ধানে অভিযোগের কিছু সত্যতাও পাওয়া গেছে।

স্থানীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প ও বরাদ্দের ক্ষেত্রে অনিয়ম ও দুর্নীতি নতুন নয়। সেখানে জবাবদিহিহীন সংস্কৃতির কারণে এ ধরনের অভিযোগ যেন প্রাতিষ্ঠানিক রূপ পেয়েছে, যে কারণে স্থানীয় সরকারের কাঠামোগত সংস্কারের দাবি উঠেছে বারবার। আমরা আশা করব, দুদকের প্রতিবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ময়মনসিংহে এ অনিয়মের অভিযোগের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জেলা পরিষদের কেউ জড়িত থাকলে তাঁর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক প্রশাসনিক ও আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে।

স্থানীয় সরকারের প্রকল্প বাছাই ও বিতরণের ক্ষেত্রে অনলাইন ডেটাবেজ, বাধ্যতামূলক সরেজমিন পরিদর্শন ও স্বচ্ছতা নিশ্চিতের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা তৈরি করতে হবে। বিশেষত, কোনো একটি ইউনিয়ন বা ব্যক্তির অনুকূলে অস্বাভাবিক বরাদ্দ কেন্দ্রীভূত হওয়া রোধে কঠোর বণ্টননীতি প্রণয়ন করা জরুরি।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রকল প বর দ দ সরক র

এছাড়াও পড়ুন:

আজ মুক্তি পাচ্ছে নতুন দুই সিনেমা, হলে আছে আরও ৭ সিনেমা

কুয়াকাটায় একদল ব্যাচেলর
করোনার সময় দীর্ঘদিন ঘরবন্দী ছিল মানুষ। বিধিনিষেধ শিথিল করা হলে কুয়াকাটায় ঘুরতে যায় একদল ব্যাচেলর। সেখানে নারীদের একটি দলের সঙ্গে তাদের দেখা হয়ে যায়। তাদের কেন্দ্র করেই রোমান্টিক, কমেডি ও থ্রিলারের মিশেলে তৈরি হয়েছে নাসিম সাহনিকের ‘ব্যাচেলর ইন ট্রিপ।’

সিনেমাটির শুটিং শুরু হয় ২০২২ সালের শেষ দিকে। প্রথম লটে এক সপ্তাহের মতো শুটিং করার কথা থাকলেও বাজেটের সমস্যায় দুই দিন পর শুটিং টিমকে রেখেই ঢাকায় চলে গেছেন পরিচালক—এমন একটা অভিযোগ সে সময় এনেছিলেন সিনেমার নায়িকা শিরিন শিলা। পরে তিনি আরও জানান, নায়ক-নায়িকাসহ শিল্পীদের থাকা, খাওয়া—সবকিছুতেই অব্যবস্থাপনা ছিল। এতে ইউনিটে অসন্তোষ তৈরি হয়। সে সময় কলাকুশলীরা ধরেই নিয়েছিলেন, এ সিনেমার শুটিং আর হবে না। দ্বন্দ্ব মিটিয়ে পরের বছর শেষ হয় শুটিং। ডাবিং ও পোস্টের কাজ শেষ করতে লেগে যায় আরও এক বছর।

সিনেমায় জুটি হয়েছেন শিরিন শিলা ও কায়েস আরজু। ছবি: কায়েসের সৌজন্যে

সম্পর্কিত নিবন্ধ