হাওরে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে জলেভাসা স্কুল
Published: 30th, September 2025 GMT
নদীর তীরে নোঙর করা আছে বড়সড় স্টিলের নৌকা। কাঠের তৈরি ছোট সিঁড়ি বেয়ে নৌকায় উঠছে শিক্ষার্থীরা। ছাউনি দেওয়া বড় নৌকার ভেতরে সারি সারি বেঞ্চ পাতা। সেখানেই পড়াশোনা করছে শিশুরা।
এটি আসলে ভাসমান বিদ্যালয়। প্রাক্-প্রাথমিক থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয় এখানে। পাঠদানের পাশাপাশি বিনা মূল্যে বই-খাতা, কলম, জ্যামিতি বক্স, স্কুল ড্রেস, ব্যাগ, জুতা, টিফিন ও স্বাস্থ্যসেবাও দেওয়া হয়ে থাকে। এভাবেই হাওরে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে নৌকায় ভাসা আটটি স্কুল। নৌকাগুলোয় শিক্ষার্থীদের বিনোদনের জন্য খেলাধুলারও আয়োজন করা হয়। কিশোরগঞ্জের নিকলীর ঘোড়াউত্রা নদীপারের দুটি ইউনিয়নের শিশুদের জন্য এসব কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে ভাসমান স্কুলগুলো।
কাদের জন্য ভাসমান স্কুলখোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঘোড়াউত্রা নদীপারের অনগ্রসর দুটি ইউনিয়নের নাম ছাতিরচর ও সিংপুর। দুই ইউনিয়নের অধিকাংশ মানুষ কৃষি ও মৎস্যজীবী। দারিদ্র্যসীমার নিচে তাঁদের বাস। আর্থিক সংকটের কারণে এক সময় অনেক পরিবারের ছেলেমেয়ে শিক্ষার আলো থেকে বঞ্চিত ছিল।
হাওরের এই প্রত্যন্ত অঞ্চলে কাজ করতে গিয়ে এমন নাজুক পরিস্থিতি নজরে আসে বেসরকারি সংস্থা পিপলস ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রাম ইমপ্লিমেন্টেশনের (পপি)। ২০১০ সালের দিকে শুরু করে সংস্থাটি পর্যায়ক্রমে ছাতিরচর ইউনিয়নে চারটি এবং সিংপুর ইউনিয়নে চারটি, মোট আটটি নৌকায় ভাসমান স্কুল প্রতিষ্ঠা করে। এর মধ্যে সাতটি স্কুল একতলা এবং একটি স্কুল দোতলা। এসব ভাসমান স্কুলগুলোয় শিশুশ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের মধ্যে বিনা মূল্যে শিক্ষা উপকরণসহ নানা সেবা প্রদানের দায়িত্ব নেয়।
নৌকাতেই চলে পাঠদান–খেলাধুলাসহ স্কুলের যাবতীয় কার্যক্রম.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
ফ্লোটিলা বহরে ভেসে চলা একমাত্র জাহাজ ম্যারিনেট কোথায়
ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা ত্রাণবাহী নৌবহর ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’-এর একটি মাত্র নৌযান এখনো আটক করতে পারেনি ইসরায়েলি বাহিনী। এই নৌযানটি হলো দ্য ম্যারিনেট।
পোল্যান্ডের পতাকাবাহী এই নৌযানে ছয়জন আরোহী রয়েছেন ।
ফ্লোটিলার লাইভ ট্র্যাকার অনুযায়ী, ম্যারিনেট আন্তর্জাতিক জলসীমায় ভেসে চলেছে। এর গতি ঘণ্টায় প্রায় ২.১৬ নট (ঘণ্টায় প্রায় ৪ কিলোমিটার) , গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে ম্যারিনেটের দূরত্ব প্রায় ১০০ কিলোমিটার।
বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে জাহাজটির ক্যাপ্টেন বলেন, ম্যারিনেটের ইঞ্জিনে সমস্যা হচ্ছিল। এটি এখন সারানো হয়েছে।
ফ্লোটিলা আয়োজকেরা বলছেন, ম্যারিনেট নৌযান এখনো স্টারলিঙ্কের মাধ্যমে সংযুক্ত। এটি যোগাযোগের আওতার মধ্যেই রয়েছে। লাইভস্ট্রিমও সক্রিয় আছে।
ইনস্টাগ্রামে দেওয়া এক পোস্টে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা জানিয়েছে, অন্য জাহাজগুলো আটক করলেও ম্যারিনেট এখনো ভেসে চলছে।
ম্যারিনেট ফিরে যাবে না বলেও ওই পোস্টে জানানো হয়েছে। পোস্টে বলা হয়েছে, ‘ম্যারিনেট শুধু একটি জাহাজ নয়। ম্যারিনেট হলো ভয়, অবরোধ ও সহিংসতার বিরুদ্ধে দৃঢ়তা।’
ফ্লোটিলা আয়োজকরা আরও লিখেছেন, ‘গাজা একা নয়।’ ‘ফিলিস্তিনকে কেউ ভুলে যায়নি। আমরা কোথাও যাচ্ছি না।’
ফ্লোটিলা বহরের প্রায় সব নৌযানে থাকা অধিকারকর্মীদের আটক করেছে ইসরায়েল। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন সুইডিশ অধিকারকর্মী গ্রেটা থুনবার্গ। ইসরায়েলের এমন পদক্ষেপকে ‘সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড’ উল্লেখ করে নিন্দা জানিয়েছে অনেক দেশ। বিভিন্ন দেশে বিক্ষোভও হয়েছে।
আরও পড়ুনগাজা অভিমুখী নৌবহরে ইসরায়েলি সেনাদের আক্রমণ, ধরে নেওয়া হলো অধিকারকর্মীদের৬ ঘণ্টা আগে