Prothomalo:
2025-10-02@22:36:29 GMT

৯৫ শতাংশ সাবানই দেশে তৈরি হয়

Published: 30th, September 2025 GMT

শিল্পবিপ্লবের পর অন্যান্য পণ্যের মতো সাবান–বাণিজ্যেও অগ্রগতি দেখা যায়। ১৭০০ সালে শুধু যুক্তরাজ্যের লন্ডন শহরেই ৬৩টি সাবান কোম্পানি ছিল। সে সময় দ্রুতই চাঙা হয়ে উঠছিল ঔপনিবেশিক বাণিজ্য পরিস্থিতি। সরাসরি সাবান আদান-প্রদান ছাড়াও সাবান তৈরির উপকরণ এবং প্রণালির আদান-প্রদান হচ্ছিল দেশগুলোর মধ্যে। ১৭৯১ সালে সাধারণ লবণ থেকে সোডা অ্যাশ তৈরির সহজ উপায় বের করেন ফরাসি বিজ্ঞানী নিকোলা লেব্লাঙ্ক। এর সঙ্গে সঙ্গেই পড়ে যায় সাবানের দাম। কারখানার যুগে ছোট ছোট কারখানায় বড় বড় মেশিনে একসঙ্গে হাজার হাজার সাবান তৈরি হতে লাগল।

বাংলাদেশে সাবানশিল্পের সূচনা

১৯০৩ সালে ঢাকার গেন্ডারিয়াতে ‘বুলবুল সাবান ফ্যাক্টরি’ নামে একটি সাবানের কারখানা স্থাপন করা হয়। ১৯০৪ সালে কলকাতায় ‘বেঙ্গল সাবান ফ্যাক্টরি’ স্থাপন করা হয়। সে সময় অখণ্ড ভারতের অলিগলি থেকে শোনা যাচ্ছিল ব্রিটিশ শাসনবিরোধী আওয়াজ। বিদেশি পণ্য বর্জনের ডাক ভাসছিল বাতাসে। নিজ ভূমিতে তৈরি শিল্প এবং পণ্য ব্যবহারে সচেতনতা নিয়ে ১৯০৫ সালে শুরু হয় স্বদেশি আন্দোলন। এ সময় বিদেশি সাবান বাদ দিয়ে দেশি সাবান ব্যবহার করতে শুরু করেন উচ্চবিত্ত থেকে সাধারণেরা।

দেশীয় ব্র্যান্ডের উত্থান

ব্রিটিশরা চলে যাওয়ার পর ১৯৪৮ সালে ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় এ অঞ্চলের প্রথম সাবান কারখানা চালু করেন ব্যবসায়ী ফজলুর রহমান খান। প্রতিষ্ঠানের নাম কমান্ডার সোপ কোম্পানি লিমিটেড। শুরুতে একধরনের সাবান তৈরি হতো কারখানাটিতে। সবুজ মোড়কে আঁকা এক নারীর ছবি আর হলুদ কালিতে ছাপানো সাবানের নাম—কসকো। গ্লিসারিনযুক্ত সাবানটি জনপ্রিয় হয়ে উঠেছিল।

১৯৫৬ সালে ঢাকার তেজগাঁও শিল্প এলাকায় প্রতিষ্ঠা করা হয় ‘কোহিনূর কেমিক্যাল কোম্পানি’। দেশে প্রথমবারের মতো ব্যবসায়িক উপায়ে এবং শৈল্পিকভাবে সাবান ও প্রসাধনী তৈরি করতে শুরু করে প্রতিষ্ঠানটি।

স্কয়ার টয়লেট্রিজ লিমিটেড নারায়ণগঞ্জের রূপসী কারখানায় ১৯৯৯ সালে মেরিল দিয়ে সাবানশিল্পে স্কয়ারের যাত্রা শুরু। এরপর উপস্থিত হয় ব্রিটিশ-ডাচ বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান লিভার ব্রাদার্স (বর্তমানে ইউনিলিভার বাংলাদেশ)। ১৯৬৪ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে একটি সাবান কারখানা নির্মাণ করে প্রতিষ্ঠানটি।

৮০ বছর বয়সী গৃহিণী মাহমুদা হক। যিনি সংসারজীবন শুরু করেছিলেন ১৯৬০–এর দশকে। মাহমুদা বলেন, ‘ভালো মানের এক বালতি সাবানের দাম ছিল এক টাকা কি দুই টাকা। কাপড় ধোয়ার জন্য একই সাবান গলিয়ে নিতাম। গুঁড়া সাবান এসেছে সম্ভবত ১৯৯০–এর দশকে।’

বর্তমান বাজার

দিন যত যাচ্ছে, দেশের বাজারে সাবানের চাহিদা ততই বাড়ছে। কোহিনূর কেমিক্যালের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (ব্র্যান্ড) গোলাম কিবরিয়া সরকার বলেন, সাবানের বাজারের বার্ষিক প্রবৃদ্ধির হার ২ থেকে ৩ শতাংশ। দেশে সাবানের আনুমানিক বাজারমূল্য প্রায় ৩ হাজার কোটি টাকা। মোট চাহিদার প্রায় ৯৫ শতাংশ সাবানই দেশে তৈরি হয়।

 

প্রধান ব্র্যান্ডগুলোর অবস্থান

বর্তমানে সাবানের বাজারে ৫০টির বেশি দেশি–বিদেশি ব্র্যান্ড রয়েছে। দেশের সাবান সরবরাহকারী প্রধান প্রতিষ্ঠানগুলো হলো কোহিনূর কেমিক্যালস, স্কয়ার টয়লেট্রিজ, ইউনিলিভার বাংলাদেশ, মৌসুমী ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, ভিটাক্যান ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, কেয়া কসমেটিকস, এসিআই কসমেটিকস, রিমার্ক, কমান্ডার সোপ কোম্পানি এবং রেকিট বেঙ্কিজার।

বহুল ব্যবহৃত বিউটি সাবানগুলো হলো মেরিল, মায়া, কেয়া, স্যান্ডেলিনা স্যান্ডাল সোপ, তিব্বত, লাক্স, ডাভ,  ভিটাকেয়ার, আইসকুল, লিলি, কিউট, কসকো ইত্যাদি। জীবাণুরোধী সাবানের মধ্যে ডেটল, লাইফবয়, সেপনিল, ব্যাকট্রোল, স্যাভলন, অ্যাকনোল ইত্যাদি বেশ জনপ্রিয়। হাত ধোওয়ার তরল সাবানও তৈরি করছে ব্র্যান্ডগুলো। আরও আছে কাপড় ধোয়ার ডিটারজেন্ট পাউডার এবং তরল সাবান।

আড়ং-এর আড়ং আর্থ সেগমেন্টেও আছে বেশ কয়েক ধরনের ভেষজ সাবান। বাংলাদেশের ত্বকের যত্ন এবং সৌন্দর্যপণ্য প্রস্তুতকারক এবং রপ্তানিকারকদের সমিতির (এএসবিপিএমবি) সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বলেন, বছরে প্রায় ১০০ হাজার টন সাবান বিক্রি হয় দেশের বাজারে। প্রতিনিয়তই চলছে গ্রাহকদের কাছে নিজেকে আলাদা করে তুলে ধরার চেষ্টা করছে ব্র্যান্ডগুলো। চাহিদা অনুযায়ী পরিবর্তন হচ্ছে সাবানের রূপ। গ্রাহকের ভিন্ন ভিন্ন চাহিদা পূরণে সচেষ্ট হয়ে উঠছে ব্র্যান্ডগুলো।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

মোহাম্মদপুরে বিশেষ অভিযানে গ্রেপ্তার ২৯

রাজধানীর মোহাম্মদপুরের কয়েকটি অপরাধপ্রবণ এলাকায় বুধবার দিনভর বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অভিযোগে ২৯ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় তাঁদের কাছ থেকে তিনটি ছুরি, দুটি ধারালো চাকু, দুটি লোহার রড, একটি সাইকেল ও ৩০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়।

বৃহস্পতিবার ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের মধ্যে নিয়মিত মামলা, মাদক মামলা, পরোয়ানাভুক্ত আসামি ও বিভিন্ন অপরাধে জড়িত অপরাধী রয়েছে।

গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন হীরা (১৯), রফিক (২১), আবদুর রহমান (৩৯), নাবিদ হাসান ওরফে চয়ন (২৬), খোকন (৩১), মনসুর (৩৫), জুয়েল (৩২), সানজু (২২), মিলন (৪২), শাওন (৩৬), নোয়াজ শরীফ (২৮), সেলিম (৩৪), আসাদুজ্জামান ওরফে ইমন (২৩), আনোয়ার হোসেন (৩৬), সজল (৩০), বরকত গাজী (২৮), জুয়েল (৩৮), আরমান (৩০), বাদল (৩৮), কোরবান (২৮), নয়ন (২৭), মাসরুফ (২৩), আল আমিন (২৭), রাকিব (১৮), মিলন (২৫), ওয়াজিদ (৩৬), এরশাদ (২৫), ছালাম ওরফে সামাদ (৩৭) ও দিলসার (৩০)।

সম্পর্কিত নিবন্ধ