পটুয়াখালীতে ইলিশ চুরির অভিযোগ তুলে দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে মারধরের অভিযোগ
Published: 30th, September 2025 GMT
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলায় ইলিশ মাছ চুরির অভিযোগ তুলে দুই শিশুকে হাত-পা বেঁধে মারধরের অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও স্থানীয় এক মাছ ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে। গতকাল সোমবার উপজেলার চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরমহিরউদ্দিনে পাউবোর নতুন স্লুইসগেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় হাত-পা বেঁধে শিশুদের হাতে মাছ ধরিয়ে দিয়ে তোলা একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।
অভিযুক্ত ব্যক্তিরা হলেন চরবিশ্বাস ইউপির ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য হাসান সরদার ও মাছ ব্যবসায়ী ইমরান বয়াতি। ভুক্তভোগী শিশুদের একজন (১৪) চরবিশ্বাস ইউনিয়নের চরআগস্তি গ্রামের বাসিন্দা ও অন্যজনের (১০) বাড়ি জেলার মির্জাগঞ্জ উপজেলার মহিষকাটা গ্রামে। তাদের একজন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছে।
ভুক্তভোগী শিশুদের স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত রোববার রাতে স্থানীয় জেলে জয়নাল খাঁর সঙ্গে নদীতে মাছ ধরতে যায় শিশু দুটি। এরপর রাত গভীর হলে তারা নৌকায় রাত কাটায়। পরদিন সকালে স্থানীয় মাছ ব্যবসায়ী ইমরান বয়াতি শিশু দুটিকে ধরে তাঁর আড়তে নিয়ে যান। তিনি আড়ত থেকে ১০টি ইলিশ চুরি করার অভিযোগ তুলে শিশু দুটির হাত-পা বেঁধে মারধর করেন। তাদের রোদের মধ্যে বসিয়ে রেখে স্বীকারোক্তি আদায় করে হাতে ইলিশ দিয়ে ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়া হয়।
এক শিশুর নানা বলেন, গতকাল সকালে খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান। গিয়ে দুজনকে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় রোদের মধ্যে বসিয়ে রাখা অবস্থায় দেখতে পান। পরে মাছ ব্যবসায়ী ইমরান বয়াতি ও ইউপি সদস্য হাসান সরদারসহ স্থানীয়দের কাছে আকুতি জানিয়ে তাঁদের ছেড়ে দিতে অনুরোধ করেন। কিন্তু তাঁরা মাছ চুরির অভিযোগ তুলে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করেন। পরে মাছ চুরির টাকা বাবদ তাঁর কাছে ১০ হাজার ৫০০ টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করেন। এ সময় তাঁর কাছে নগদ টাকা না থাকায় সাদা কাগজে স্বাক্ষর রাখেন তাঁরা। এরপর তাঁর নাতিসহ দুই শিশুকে মুক্ত করে বাড়িতে ফেরেন। মারধরের কারণে তাঁর নাতির শরীরে ফোলা জখম হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে ইউপি সদস্য হাসান সরদার বলেন, ওই শিশুরা ইমরানের মাছের আড়ত থেকে ইলিশ চুরি করেছে। এটা শুনে তিনি ঘটনাস্থলে যান। পরে ক্ষতিপূরণ বাবদ শিশুর স্বজনদের কাছে মাছের টাকা চাওয়া হয়। স্বজনেরা তাৎক্ষণিকভাবে টাকা দিতে ব্যর্থ হলে সাদা কাগজে স্বাক্ষর রেখে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। শিশুদের মারধর করা হয়নি।
মাছ ব্যবসায়ী ইমরান বয়াতি বলেন, ওই শিশুরা রাতে তাঁর আড়ত থেকে মাছ চুরি করে করেছে। এ জন্য তিনি দুজনকে ধরে আনেন। তারা দৌড়ে পালানোর চেষ্টা করলে তাদের হাত-পা বেঁধে রাখা হয়। এ সময় চুরির প্রমাণ রাখতে তিনি ইলিশ মাছ দিয়ে ছবি তোলেন। তিনি বলেন, ওই দুজন আগেও চুরি করেছে, যা স্থানীয়ভাবে সালিস-মীমাংসা হয়েছে।
গলাচিপা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ম ছ ব যবস য় সদস য ম রধর উপজ ল
এছাড়াও পড়ুন:
দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার
দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।
পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।
পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।
স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।
পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।