জীবননগর সীমান্ত থেকে এক বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছে বিএসএফ
Published: 1st, October 2025 GMT
চুয়াডাঙ্গার জীবননগর উপজেলায় সীমান্তের শূন্যরেখা থেকে বদর উদ্দীন (৩৫) নামের এক বাংলাদেশিকে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) সদস্যরা ধরে নিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছে পরিবার।
বদর উদ্দীনের বাড়ি সীমান্ত ইউনিয়নের বেণিপুর গ্রামের স্কুলপাড়ায়। স্বজনেরা বলছেন, তিনি কৃষিকাজ করেন। তবে স্থানীয় বাসিন্দাদের কয়েকজনের ভাষ্য, তিনি অবৈধভাবে ভারতে লোক আনা–নেওয়ার সঙ্গে জড়িত।
প্রত্যক্ষদর্শী ও পরিবারের সদস্যরা বলছেন, আজ বুধবার বেলা ১১টার দিকে উপজেলার বেণিপুর গ্রামের সীমান্ত থেকে বদর উদ্দীনকে ধরে নিয়ে যান ভারতের পশ্চিমবঙ্গের নদীয়া জেলার নোনাগঞ্জ বিএসএফ ক্যাম্পের সদস্যরা।
কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শীর বরাতে বেণিপুর গ্রামের শিলন মিয়া নামের এক ব্যক্তি মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, সকাল ৯টার দিকে কয়েকজন বাংলাদেশি অবৈধভাবে ভারতে প্রবেশ করেন। সেখান থেকে বাংলাদেশে ফেরার সময় সীমান্তের শূন্যরেখায় বদর উদ্দীনসহ তিনজনকে ধরে ফেলে বিএসএফ। এরপর তাঁদের মধ্যে ধস্তাধস্তি শুরু হয়। এ সময় বদর উদ্দীন ছাড়া অন্য দুজন দৌড়ে দেশের ভেতরে চলে আসেন। আর বিএসএফ সদস্যরা বদর উদ্দীনকে রাইফেলের বাঁট দিয়ে উপর্যুপরি পিটিয়ে ফেলে রাখেন। পরে তাঁকে ভারতের ভেতরে নিয়ে যায় বিএসএফ। তাঁদের ধারণা, বিএসএফের পিটুনিতে বদর উদ্দীন মারা গেছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক গ্রামবাসী বলেন, বদর উদ্দীন ও তাঁর সঙ্গীরা বেণিপুর গ্রামের সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে পাঁচ থেকে ছয়জনকে সীমান্তের ওপারে পাঠাচ্ছিলেন। এই কাজ করতে গিয়ে বিএসএফের হাতে ধরা পড়েন তিনি।
এ বিষয়ে বিজিবির মহেশপুর ব্যাটালিয়নের (৫৮ বিজিবি) অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল রফিকুল আলম বলেন, ‘আমরা অসমর্থিত সূত্রে জানতে পেরেছি বিএসএফ সদস্যরা এক বাংলাদেশিকে ধরে নিয়ে গেছেন। এ ব্যাপারে আমরা বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করছি।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ব এসএফ
এছাড়াও পড়ুন:
সীমান্তের শূন্যরেখায় শেষবারের মতো মৃত বাবার মুখ দেখলেন মেয়ে
যশোরের শার্শা উপজেলায় সীমান্তের শূন্যরেখায় শেষবারের মতো ভারতীয় নাগরিক মৃত বাবাকে দেখেছেন বাংলাদেশে থাকা তাঁর মেয়ে ও স্বজনেরা। আজ বুধবার দুপুরে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে ওই ভারতীয় নাগরিকের মরদেহ শেষবারের মতো বাংলাদেশি স্বজনদের দেখানো হয়।
মৃত ব্যক্তির নাম জব্বার মণ্ডল (৭৫)। তিনি ভারতের পশ্চিমবঙ্গের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বাগদা থানার বাশঘাটা গ্রামের বাসিন্দা। জব্বার মণ্ডলের মেয়ে রিতু মণ্ডল ও তাঁর স্বজনেরা যশোরের শার্শা উপজেলার বেনাপোল গ্রামে বসবাস করেন। বাংলাদেশি স্বজনদের শেষবারের মতো মরদেহ দেখানোর পর কলকাতার উত্তর ২৪ পরগনায় নিয়ে ওই ব্যক্তিকে দাফন করা হয়।
বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, বার্ধক্যের কারণে গত মঙ্গলবার জব্বার মণ্ডলের মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে বাংলাদেশে অবস্থানরত তাঁর স্বজনেরা শেষবারের মতো মরদেহ দেখতে আবেদন করেন। বিষয়টি বিএসএফের মাধ্যমে বিজিবির কাছে পৌঁছালে পতাকা বৈঠকের আয়োজন করা হয়। বুধবার দুপুরে শার্শা সীমান্তের শূন্যরেখায় দুই বাহিনীর মধ্যে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে জব্বার মণ্ডলের মরদেহ তাঁর স্বজনদের দেখানো হয়। পরে মরদেহ ফিরিয়ে নিয়ে দাফন করা হয়।
কোম্পানি কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠকে বিজিবির পক্ষে নেতৃত্ব দেন সুবেদার মো. সেলিম মিয়া ও বিএসএফের পক্ষে নেতৃত্ব দেন এসি সঞ্জয় কুমার রায়। এ বিষয়ে যশোর বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক (৪৯ বিজিবি) সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী বলেন, সীমান্তের কোনো মানুষ মারা গেলে দুই দেশে তাঁদের আত্মীয়স্বজন থাকলে পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে শেষবারের মতো মরদেহ দেখানোর রীতি আছে। সেই অনুযায়ী পতাকা বৈঠকের মাধ্যমে জব্বার মণ্ডলের মরদেহ তাঁর মেয়েসহ স্বজনদের দেখানো হয়েছে। পতাকা বৈঠকে বিজিবি-বিএসএফের মধ্যে সর্বদা সুসম্পর্ক বজায় রাখার বিষয়ও আলোচনা হয়।