বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য ও দলের যুক্তরাজ্য শাখার সভাপতি এম এ মালিককে সতর্ক করে নোটিশ দিয়েছে বিএনপি। লন্ডন থেকে আসা ও ফেরার সময় ঢাকা ও সিলেট বিমানবন্দরে লোকসমাগম করে জনদুর্ভোগ সৃষ্টির অভিযোগে তাঁকে এ নোটিশ দেওয়া হয়।

‘বিমানবন্দরে দুর্ভোগ ও জনমনে বিরক্তি সৃষ্টি প্রসঙ্গে’ শিরোনামে আজ বুধবার এম এ মালিককে সতর্ক করে চিঠি দেওয়া হয়। বিএনপির কেন্দ্রীয় দপ্তরের দায়িত্বশীল সূত্র এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।

এম এ মালিক যখনই লন্ডন থেকে ঢাকায় পৌঁছান, আবার ঢাকা থেকে সিলেটে নিজ এলাকায় যান, তখনই দুই বিমানবন্দরে অনেক জনসমাগম হয়। দলের নেতা-কর্মীদের অনেকের অভিযোগ, তিনি আগে থেকে লোকজনকে বিমানবন্দরে সংগঠিত করেন, এতে বিমানবন্দরে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি হয়। সাধারণ যাত্রীরা বিরক্ত হন। সর্বশেষ গত ২৯ সেপ্টেম্বর এম এ মালিক লন্ডন থেকে সিলেট আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছালে তাঁর সমর্থক স্থানীয় নেতা-কর্মীরা তাঁকে স্বাগত জানান। বিমানবন্দরে তিনি সাংবাদিকদের সঙ্গে কথাও বলেন।

এম এ মালিক সিলেট-৩ আসন (দক্ষিণ সুরমা, ফেঞ্চুগঞ্জ ও বালাগঞ্জ) থেকে বিএনপির মনোনয়নে নির্বাচন করতে চান। এ লক্ষ্যে তিনি এলাকায় যাওয়া–আসা শুরু করেছেন।

এর আগে গত বছরের ১৩ অক্টোবর এম এ মালিক ১৬ বছর পর লন্ডন থেকে দেশে আসেন। তাঁর ফেরা উপলক্ষে ঢাকা ও সিলেট বিমানবন্দরে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী জড়ো করা হয়।

এম এ মালিককে সতর্ক করে বিএনপির নোটিশে বলা হয়েছে, ‘আপনি বিদেশ থেকে দেশে আসা-যাওয়ার সময় হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর বা সিলেট ওসমানী বিমানবন্দরে আপনাকে স্বাগত ও বিদায় জানানোর সময় অসংখ্য লোক সমাগম করেন, যা অপরিণামদর্শী কাজ এবং তাতে জনদুর্ভোগ তীব্রতর হয়। আপনার অবিবেচনাপ্রসূত এই কর্মকাণ্ডে বিমানবন্দরে অসংখ্য যাত্রীকে বিড়ম্বনা ও কষ্টকর পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হয়। ইতিপূর্বেও আপনি বিমানবন্দরে মাত্রাতিরিক্ত লোকসমাগম ঘটিয়ে বিমানবন্দর এলাকার আশপাশের সড়কগুলোতে তীব্র যানজটের সৃষ্টি করেন।’

নোটিশে আরও বলা হয়, দলের একজন দায়িত্বশীল নেতা হিসেবে এ ধরনের লোকসমাগম সাংগঠনিক নীতির পরিপন্থী, যা দৃষ্টিকটু ও জনমনে বিরূপ প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে।

নোটিশে এখন থেকে এম এ মালিককে দেশে আসা ও বিদেশে যাওয়ার সময় বিমানবন্দরে জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করে লোকসমাগম করলে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণের হুঁশিয়ারি জানানো হয়।

এম এ মালিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি তো কাউকে অর্গানাইজ করি না। নেতা-কর্মীরা আমাকে ভালোবেসে আসেন। কারণ, আমি বিএনপির একজন ত্যাগী কর্মী, একজন যোদ্ধা। আমি লন্ডনে শেখ হাসিনার চায়ের দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করেছিলাম। বিগত আন্দোলনে আমার ভূমিকার কারণে নেতা-কর্মীরা হয়তো আমাকে ভালোবাসেন। দল যেহেতু সতর্ক করেছে, ভবিষ্যতের জন্য এ বিষয়ে আমি সতর্ক থাকব।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: জনদ র ভ গ স ষ ট এম এ ম ল ক ব এনপ র র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র

প্রাচীন গল্পে আছে, ইকারাস মোমের ডানা নিয়ে সূর্যের খুব কাছে উড়ে গিয়েছিল। তখন মোম গলে গেলে ইকারাস নিচে পড়ে যায়। সৃজনশীল এক ফটোগ্রাফার সম্প্রতি সূর্যের দারুণ এক ছবি তুলে সেই দৃশ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন। যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় একজন স্কাইডাইভার মাত্র এক সেকেন্ডের ভগ্নাংশের জন্য সূর্যের সামনে দিয়ে নেমে যান। ঠিক তখনই তাঁকে ক্যামেরাবন্দী করেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি। জ্বলন্ত সূর্যের মুখের ওপর দিয়ে যেন এক মানব প্রতিকৃতি নিচে নেমে গেল, এমন দৃশ্য ধরা পড়ে ক্যামেরা লেন্সে। দৃষ্টিবিভ্রমের এক অসাধারণ কীর্তি তৈরি করেছেন অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি।

অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি নিখুঁতভাবে তাঁর ক্যামেরা দিয়ে একজন স্কাইডাইভারকে ক্যামেরার সংকীর্ণ ফিল্ড অব ভিউয়ের মধ্য দিয়ে নেমে যাওয়ার সময় ধারণ করেন। ছবিটি বেশ পরাবাস্তব এক অনুভূতি তৈরি করেছে। ইকারাসকে নিয়ে প্রাচীন মিথের সঙ্গে ছবিটি তুলনা করেছেন অনেকেই।

অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি চাঁদ ও সূর্যের অত্যন্ত সূক্ষ্ম ছবি তোলার জন্য পরিচিত। তিনি সূর্যের সামনে স্কাইডাইভারের এই একটি মাত্র ছবির জন্য কয়েক সপ্তাহ ধরে প্রস্তুতি নিয়েছিলেন। সূর্যের ছবি তোলা এমনিতেই কঠিন কাজ। সেখানে সূর্যের সামনে গতিশীল একটি বিমান বা একজন পতিত মানবকে একই ফ্রেমে আনা ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন চ্যালেঞ্জ। বিমানটির গতিপথ, সূর্যের কোণ, ক্যামেরার অবস্থান ও স্কাইডাইভারের অবতরণের মতো সব বিষয়কে মাত্র কয়েক সেকেন্ডের ব্যবধানে এক করে কাজটি হয়েছে।

অ্যাস্ট্রোফটোগ্রাফার অ্যান্ড্রু ম্যাককার্থি বলেন, ‘বলা যায়, একেবারে অযৌক্তিক একটি কাজ করেছি। যদিও চূড়ান্ত ছবিটি দারুণ এক অনুভূতি দেয়। স্কাইডাইভার ছিলেন ইউটিউবার ও সংগীতজ্ঞ গ্যাব্রিয়েল সি ব্রাউন। সে সূর্যের উত্তাল হলুদ পৃষ্ঠের বিপরীতে একটি কালো সিলুয়েট বা ছায়ামূর্তি হিসেবে ছবিতে চলে এসেছে। সূর্যের অবস্থান ৯ কোটি ৩০ লাখ মাইল দূরে হলেও ক্যামেরায় দারুণভাবে দেখা যাচ্ছে সব। ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করা ছবি অসম্ভব বলে মনে হয়। আগুনের মতো সৌর ক্রোমোস্ফিয়ারের আবহের বিপরীতে একটি সত্যিকারের মানব চিহ্ন আমাদের মুগ্ধ করে। দেখে মনে হবে যেন, মহাকাশে কেউ নিচে পড়ে যাচ্ছে।’

স্কাইডাইভাররা ব্রাউনের ৩ হাজার ৫০০ ফুট উচ্চতা থেকে পতন শুরু করলে প্রায় ১০ সেকেন্ড সময় ব্যয় করে প্যারাসুট খোলার আগে ছবি তোলার সুযোগ মেলে। ম্যাককার্থি একটি লুন্ট ৬০ মিলিমিটার এইচ–আলফা ক্যামেরায় তার ফ্রি ফলের ছবি তোলেন। একটি এএসআই ১ হাজার ৬০০ মিলিমিটারে একক এক্সপোজার ধারণ করা হয়। আসলে এই বিভ্রমের মূল কারণ হচ্ছে দূরত্বের সামঞ্জস্য। ব্রাউন একটি ছোট বিমান থেকে প্রায় ৩ হাজার ৫০০ ফুট ওপর থেকে লাফ দেন। আর ম্যাককার্থি প্রায় আট হাজার ফুট দূরে অবস্থান করেছিলেন। স্কাইডাইভার অবশ্যই সূর্যের কাছে ছিলেন না। শুধু ক্যামেরার দৃষ্টিকোণ থেকে নিখুঁত অবস্থানের কারণে স্কাইডাইভারকে অসম্ভব কাছাকাছি দেখাচ্ছিল। আসলে লাফ দেওয়ার আগে বিমানটিকে সঠিক অবস্থানে আনার জন্য ছয়বার চেষ্টা করতে হয়েছে। স্কাইডাইভারকে ফ্রেমে ধরার জন্য মাত্র একবারের সুযোগ ছিল। ম্যাককার্থি তাঁর মনিটরে সেই ক্ষুদ্র অবয়বটিকে সূর্যের আলোর সঙ্গে মিলিয়ে একটি নিখুঁত অবয়ব ধারণ করেন।

এই ছবিকে অনেকেই পৌরাণিক রূপকথার সঙ্গে তুলনা করছেন। গ্রিক মিথের ইকারাসের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ম্যাককার্থির এ ছবিটি সেই আখ্যানকেই একটি আধুনিক ও স্পষ্ট রূপে যেন তুলে ধরছে।

সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • এপস্টেইনের নথি প্রকাশের পক্ষে হঠাৎ কেন অবস্থান নিলেন ট্রাম্প
  • এশিয়ার প্রভাবশালী নারী ব্যবসায়ী কারা, কীসের ব্যবসা তাঁদের
  • করদাতা মারা গেলেও যে কারণে কর দিতে হয়, কীভাবে দেওয়া হয়
  • ৩ কোটি টাকা, ব্যক্তিগত উড়োজাহাজসহ আরও যা যা পান একজন মিস ইউনিভার্স
  • গায়িকা থেকে বিধায়ক, মৈথিলীর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনুসারী চমকে ওঠার মতো
  • সরকারি গাড়ি ব্যবহার করে নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিলেন উপদেষ্টার এপিএস
  • বিএনপি নেতা খুন: অভিযুক্ত ছাত্রদল কর্মী ফেসবুকে লিখলেন ‘আউট’
  • সাজা হলে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ইন্টারপোলে ‘কনভিকশন ওয়ারেন্টের’ আবেদন করা হবে
  • সূর্যের সামনে স্কাইডাইভার, তৈরি হয়েছে এক অলীক আলোকচিত্র
  • হাটহাজারীতে তিন দিনে চার লাশ উদ্ধার, জনমনে আতঙ্ক