ফিলিস্তিনের গাজা অভিমুখে যাত্রা করা নৌবহরে হস্তক্ষেপ শুরু করেছে ইসরায়েলি বাহিনী। ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামের ওই নৌবহরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তাদের কয়েকটি নৌযানে ইসরায়েলি সেনারা অবস্থান নিয়েছেন। নৌযানগুলোয় থাকা ক্যামেরা বন্ধ হয়ে গেছে।

বুধবার রাতে এক বিবৃতিতে এসব তথ্য জানিয়েছে গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা। তাতে বলা হয়েছে, ‘ইসরায়েলি সেনারা অবৈধভাবে নৌযানে হস্তক্ষেপ করছেন। নৌযানগুলোয় থাকা সব অংশগ্রহণকারীর অবস্থা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমরা সক্রিয়ভাবে কাজ করছি।’ ফ্লোটিলা বর্তমানে ভূমধ্যসাগরের গাজা থেকে ২১৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থান করছে।

হস্তক্ষেপের আগে একটি ভিডিও প্রকাশ করেছিল ইসরায়েলের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। তাতে দেখা যায়, ইসরায়েলের নৌবাহিনীর একজন কর্মকর্তা ফ্লোটিলার নৌযানগুলোকে দিক পরিবর্তন করে ইসরায়েলের আশদদ বন্দরের দিকে যেতে বলছেন। সেখানে নৌবহরে থাকা ত্রাণ গাজায় পৌঁছানোর আগে নিরাপত্তা–সংক্রান্ত যাচাই–বাছাই করা হবে।

ফ্লোটিলায় যে হস্তক্ষেপ হতে পারে, সে আশঙ্কা আগে থেকেই ছিল। বুধবার রাতেই নৌবহরটি থেকে জানানো হয়, সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে ২০টির বেশি নৌযান দেখা গেছে। অল্প সময়ের মধ্যেই নৌবহরে হস্তক্ষেপ করতে পারেন ইসরায়েলি সেনারা। এর কিছুক্ষণ পরেই হস্তক্ষেপের খবর পাওয়া যায়।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা সমুদ্রপথে গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার একটি বৈশ্বিক প্রচেষ্টা। এই নৌবহরে রয়েছে ৪০টির বেশি বেসামরিক নৌযান। এই বহরে প্রায় ৪৪টি দেশের ৫০০ মানুষের মধ্যে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র, স্পেন, আয়ারল্যান্ড, ফ্রান্স, বেলজিয়ামসহ ইউরোপীয় পার্লামেন্টের নির্বাচিত প্রতিনিধিরা, আইনজীবী, অধিকারকর্মী, চিকিৎসক ও সাংবাদিক।

গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলার প্রথম বহর ৩১ আগস্ট স্পেনের বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরু করে। এরপর ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর তিউনিসিয়া ও ইতালির সিসিলি দ্বীপ থেকে আরও নৌযান এই বহরে যুক্ত হয়। এ ছাড়া গ্রিসের সাইরাস দ্বীপ থেকে পরবর্তী সময়ে আরও কিছু নৌযান ত্রাণ নিয়ে বহরে যুক্ত হয়। সব মিলিয়ে বহরের নৌযানের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়ে যায়। তবে ইসরায়েলের ড্রোন হামলায় বিকল হয়ে এবং যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে পরে এ সংখ্যা ৪০–এ নেমে আসে।

আরও পড়ুনইসরায়েলি যুদ্ধজাহাজ কাছাকাছি এলাকায়, গাজামুখী নৌবহরে হস্তক্ষেপের শঙ্কা২ ঘণ্টা আগে

এর আগে গত জুন মাসে গাজার দিকে ত্রাণ নিয়ে যাওয়া একটি নৌযান আটক করেন ইসরায়েলি সেনারা। গাজা থেকে প্রায় ১৮৫ কিলোমেটার দূরে আন্তর্জাতিক জলসীমায় ‘ম্যাডলিন’ নামে নৌযানটি আটক করা হয়। ওই নৌযানে গ্রেটা থুনবার্গসহ ১২ জন অধিকারকর্মী ছিলেন। পরে জুলাই মাসে নৌযান ‘হান্দালা’কে আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়। নৌযানটিতে ১০টি দেশের মোট ২১ জন ছিলেন। পরে তাঁদের ছেড়ে দেওয়া হয়। ইসরায়েলের এসব পদক্ষেপ সে সময় ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ইসর য় ল র ই ন বহর

এছাড়াও পড়ুন:

বগুড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় পেট্রল ঢেলে আগুন

বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন শাখা কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার ভোরে গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখা ভবনের বারান্দায় পেট্রল আগুন দেওয়া হয়। এতে ব্যাংকের বৈদ্যুতিক তার পুড়ে গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ছাড়া বারান্দায় একটি ব্যানার, ক্যারম বোর্ড ও আসবাব আগুনে পুড়ে যায়।

ধুনট থানা-পুলিশ ও গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, আজ ভোরে দুর্বৃত্তরা গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখার কার্যালয়ের বারান্দায় পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বালু ও পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর-ধুনট সার্কেল) সজীব শাহরীন ও ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

ব্যাংকের নৈশপ্রহরী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে বারান্দায় সতর্ক অবস্থায় ছিলাম। রাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎ বারান্দায় আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পাই। দুর্বৃত্তরা পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।’

শাখাটির ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, রাতে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকা নৈশপ্রহরী সামান্য সময়ের জন্য বারান্দা থেকে একটি কক্ষের ভেতরে যান। এ সুযোগে দুর্বৃত্তরা বারান্দায় অগ্নিসংযোগ করে দ্রুত পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে বড় রকমের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আগে থেকেই বালু ও পানি মজুত ছিল। আজ সকাল থেকে যথারীতি ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে।

ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।

অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব শাহরীন বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধুনট থানার পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ