ফেসবুকের ইন্টার্ন থেকে টিকটকের সিইও—যেভাবে শো জি চিউয়ের পথচলা
Published: 2nd, October 2025 GMT
সারা বিশ্বের টিকটকের ব্যবহারকারীর সংখ্যা ১৫০ কোটিরও বেশি। এই প্ল্যাটফর্ম শুধু বিনোদন নয়, কোটি কোটি ছোট ব্যবসা, সৃষ্টিশীল তরুণ-তরুণীর জীবিকার উৎস। আর এই প্ল্যাটফর্মের ভবিষ্যৎ আজ নির্ভর করছে একজন মানুষের কাঁধে—শো জি চিউ। তিনি সেই ব্যক্তি, যিনি ফেসবুকে ইন্টার্নশিপ দিয়ে পেশাগত জীবন শুরু করেছিলেন এবং আজ টিকটকের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসেবে বিশ্বের অন্যতম বড় প্রযুক্তি যুদ্ধের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।
সাদামাটা শুরু: ইন্টার্ন থেকে ব্যাংকারসিঙ্গাপুরে জন্ম ও বেড়ে ওঠা শো জি চিউ প্রথমে দেশটির নিয়মানুযায়ী বাধ্যতামূলকভাবে সেনাবাহিনীতে কাজ করেন। এরপর লন্ডনের ইউনিভার্সিটি কলেজ থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক সম্পন্ন করেন। তবে তাঁর জীবনের মোড় ঘোরানো অধ্যায় শুরু হয় যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিজনেস স্কুলে এমবিএ করার সময়।
হার্ভার্ডে পড়ার সময়, যখন ফেসবুক ছিল একেবারে নতুন একটি স্টার্টআপ, চিউ সেখানে ইন্টার্নশিপ করেন। তখন হয়তো তিনি কল্পনাও করতে পারেননি যে একদিন ফেসবুকের প্রতিদ্বন্দ্বী বিশ্বের শীর্ষ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের নেতৃত্ব দেবেন। ইন্টার্নশিপের অভিজ্ঞতা তাঁকে প্রযুক্তি খাতের প্রথম বাস্তব ধারণা দেয়।
হার্ভার্ডের পর তিনি দুই বছর গোল্ডম্যান স্যাকসে বিনিয়োগ ব্যাংকার হিসেবে কাজ করেন। এ সময় তিনি প্রযুক্তি খাতে বড় বিনিয়োগের কাজের সঙ্গে জড়িত হন, যা তাঁর ক্যারিয়ারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
বিনিয়োগ জগতে উত্থান এবং বাইটড্যান্সের সঙ্গে প্রথম সংযোগ২০০৮ সালে চিউ যোগ দেন ডিএসটি গ্লোবাল নামের এক শীর্ষ ভেঞ্চার ক্যাপিটাল প্রতিষ্ঠানে। সেখানে পাঁচ বছর কাজ করার সময় তিনি আলিবাবা, জেডি ডটকমসহ একাধিক প্রযুক্তি জায়ান্টে বিনিয়োগের সুযোগ পান।
২০১৩ সালে তিনি একটি দলকে নেতৃত্ব দেন, যারা প্রথম দিকে বাইটড্যান্সে বিনিয়োগ করেছিল। সেই সময় হয়তো চিউ ভাবতেও পারেননি, একদিন তিনিই সেই কোম্পানির প্রধান পণ্য টিকটকের সিইও হবেন।
আরও পড়ুনগণপূর্ত অধিদপ্তরে বিশাল নিয়োগ, পদ ৬৬৯২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫শাওমিতে বড় অর্জন২০১৫ সালে চিউ চীনের স্মার্টফোন জায়ান্ট শাওমির প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) হিসেবে যোগ দেন। তাঁর আর্থিক কৌশলের দক্ষতায় শাওমি দ্রুত আন্তর্জাতিক বাজারে শক্তিশালী অবস্থান তৈরি করে।
২০১৮ সালে শাওমির আইপিও ইতিহাস সৃষ্টি করে, যা চীনের অন্যতম বড় প্রযুক্তি আইপিও ছিল। ২০১৯ সালে চিউ শাওমির আন্তর্জাতিক মার্কেটের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেন এবং কোম্পানির বৈশ্বিক সম্প্রসারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন। এই সাফল্য তাঁকে আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি জগতে পরিচিত করে তোলে এবং টিকটকের দরজায় নিয়ে আসে।
আরও পড়ুনজাহাঙ্গীরনগরের সামিয়া ইসলাম চার বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে কেন অক্সফোর্ডকেই বেছে নিলেন০১ অক্টোবর ২০২৫টিকটকের নেতৃত্বে যেভাবেমার্চ ২০২১ সালে চিউ বাইটড্যান্সে প্রথম সিএফও হিসেবে যোগ দেন। মাত্র দুই মাস পর, মে ২০২১-এ তাঁকে টিকটকের সিইও করা হয়। তখন টিকটক রাজনৈতিক চাপে ছিল। তাঁর পূর্বসূরি কেভিন মেয়ার মাত্র তিন মাসের মাথায় পদত্যাগ করেছিলেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে চিউকে শুধু একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পরিচালনা নয় বরং প্রযুক্তি ও রাজনীতির এক জটিল যুদ্ধের নেতৃত্ব দিতে হয়।
হার্ভার্ডে পড়াশোনার সময় ই-মেইল চালাচালির সময়ে পরিচিত হন স্ত্রী ভিভিয়ান কাওয়ের সঙ্গে পরিচয় শো জি চিউর.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইন ট র ন ট কটক র ফ সব ক র সময প রথম
এছাড়াও পড়ুন:
বগুড়ায় গ্রামীণ ব্যাংকের শাখায় পেট্রল ঢেলে আগুন
বগুড়ার ধুনট উপজেলায় গ্রামীণ ব্যাংকের গোসাইবাড়ী ইউনিয়ন শাখা কার্যালয়ে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। আজ সোমবার ভোরে গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখা ভবনের বারান্দায় পেট্রল আগুন দেওয়া হয়। এতে ব্যাংকের বৈদ্যুতিক তার পুড়ে গিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ ছাড়া বারান্দায় একটি ব্যানার, ক্যারম বোর্ড ও আসবাব আগুনে পুড়ে যায়।
ধুনট থানা-পুলিশ ও গ্রামীণ ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলেন, আজ ভোরে দুর্বৃত্তরা গ্রামীণ ব্যাংকের ওই শাখার কার্যালয়ের বারান্দায় পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। খবর পেয়ে প্রতিষ্ঠানটির কর্মীরা বালু ও পানি দিয়ে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। খবর পেয়ে সকাল ১০টার দিকে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (শেরপুর-ধুনট সার্কেল) সজীব শাহরীন ও ধুনট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল আলম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ব্যাংকের নৈশপ্রহরী শহিদুল ইসলাম বলেন, ‘রাতে বারান্দায় সতর্ক অবস্থায় ছিলাম। রাত তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে হঠাৎ বারান্দায় আগুনের লেলিহান শিখা দেখতে পাই। দুর্বৃত্তরা পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যায়।’
শাখাটির ব্যবস্থাপক মাসুদ রানা বলেন, রাতে নিরাপত্তার কাজে নিয়োজিত থাকা নৈশপ্রহরী সামান্য সময়ের জন্য বারান্দা থেকে একটি কক্ষের ভেতরে যান। এ সুযোগে দুর্বৃত্তরা বারান্দায় অগ্নিসংযোগ করে দ্রুত পালিয়ে যায়। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। আগুনে বড় রকমের কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে আগে থেকেই বালু ও পানি মজুত ছিল। আজ সকাল থেকে যথারীতি ব্যাংকের কার্যক্রম চলছে।
ধুনট থানার ওসি সাইদুল আলম বলেন, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নাশকতাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজীব শাহরীন বলেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ধুনট থানার পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।