শেষ মুহূর্তের পেনাল্টিতে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে জয় হাতছাড়া হলো ম্যানচেস্টার সিটির। বুধবার (০১ অক্টোবর) রাতে আরলিং হালান্ডের দুর্দান্ত জোড়া গোলেও জয় পায়নি তারা। কারণ ৯০ মিনিটে স্পটকিক থেকে গোল করে ম্যাচে সমতা ফেরান এএস মোনাকোর এরিক ডায়ার। তাতে ২-২ গোলের সমতা নিয়েই শেষ হয় ম্যাচ।

প্রথমার্ধের মাঝামাঝি পর্যন্ত বলের দখল ও নিয়ন্ত্রণে এগিয়ে ছিল সিটি। ১৫ মিনিটে প্রথম ছোঁয়া থেকেই গোল করেন হালান্ড। জসকো গার্দিওলের নিখুঁত পাসে ডিফেন্ডারদের ফাঁকি দিয়ে এগিয়ে যান নরওয়েজিয়ান স্ট্রাইকার। বাড়ানো পা দিয়ে লব শটে পরাস্ত করেন গোলরক্ষক ফিলিপ কোহনকে।

আরো পড়ুন:

মার্টিনেল্লির জাদুকরী গোলে শেষ মুহূর্তে সিটিকে রুখল আর্সেনাল

হালান্ডের রেকর্ড ভাঙা রাতে নাপোলিকে হারাল ম্যানসিটি

তবে তিন মিনিটের মধ্যেই সমতায় ফেরে মোনাকো। বক্সের বাইরে থেকে বল পেয়ে ডাচ ডিফেন্ডার জর্ডান তেজে এক টাচে সেট করে বাঁ পায়ের অসাধারণ কার্লিং শটে বল পাঠান জালের উপরের কোণা দিয়ে।

খেলার গতি তখন বেড়ে যায়। ফিল ফোডেনের দারুণ শট ক্রসবার কাঁপায়, রেইজেন্ডার্সের প্রচেষ্টাও অল্পের জন্য বাইরে যায়। প্রথমার্ধ শেষ হওয়ার ঠিক আগেই আবারও আলো ছড়ান হালান্ড। নিকো ও’রিলির উঁচু ক্রস থেকে প্রায় ৮ গজ দূরে লাফিয়ে উঠে দুর্দান্ত হেডে গোল করেন তিনি। চ্যাম্পিয়নস লিগে এটি ছিল হালান্ডের ৫০ ম্যাচে ৫২তম গোল, যা অসাধারণ এক কীর্তি।

বিরতির পর মোনাকো আরও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। আকলিউশের শট একবার ঠেকাতে দারুণ দক্ষতা দেখাতে হয় জিয়ানলুইজি দোনারুম্মাকে। এদিকে সিটির জন্য দুশ্চিন্তার খবর ছিল রদ্রির ইনজুরি; হাঁটুর ব্যথায় মাঠ ছাড়েন তিনি।

৭২ মিনিটে রেইজেন্ডার্সের শট আবারও ক্রসবারে লেগে ফেরে। হালান্ডও চেষ্টা করেছিলেন বক্সের বাইরে থেকে। তবে তার শট কোহন দারুণভাবে কর্নারে পাঠিয়ে দেন। গোলের দিক থেকে সিটি এগিয়ে থাকতে পারত আরও আগেই। কিন্তু শেষ আঘাত হানতে ব্যর্থ হয় তারা।

খেলার শেষ মুহূর্তে ঘটে নাটকীয় ঘটনা। তেজের ফ্রি কিকে বল ধরতে গিয়ে নিকো গনসালেজ ও ডায়ারের মধ্যে ধাক্কাধাক্কি হয়। রিপ্লেতে দেখা যায় গনসালেজ বল স্পর্শ করলেও ডায়ারের মুখে আঘাত লাগে। দীর্ঘ সময় ভিএআর পর্যালোচনার পর পেনাল্টির সিদ্ধান্ত নেন রেফারি। তর্ক-বিতর্কের মাঝেই লাল কার্ড দেখে মাঠ ছাড়তে হয় মোনাকোর এক কোচকেও।

অবশেষে স্পটকিক থেকে ঠাণ্ডা মাথায় দোনারুম্মাকে ভুল পথে পাঠিয়ে গোল করেন ডায়ার। সেই গোলেই ২-২ সমতায় শেষ হয় রোমাঞ্চকর লড়াই।

সিটি চাইলেও এই ম্যাচে জয় পেতে পারত- ফোডেন ও রেইজেন্ডার্সের দুটো শট ক্রসবারে না লেগে জালে গেলে গল্প ভিন্ন হতো। কিন্তু শেষ মুহূর্তের ভুলেই হাতছাড়া হলো টানা দ্বিতীয় জয়। অন্যদিকে, মোনাকোর জন্য এটি অনেকটা জয়োল্লাসের সমান, কারণ শেষ মুহূর্তে পেনাল্টি থেকে তারা শুধু ম্যাচ বাঁচায়নি, বরং ইউরোপীয় মঞ্চে সিটির মতো প্রতিপক্ষকে বারবার চাপে রেখেছে এবং তাদের কাছ থেকে মূল্যবান একটি পয়েন্ট ছিনিয়ে নিয়েছে।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল চ য ম প য়নস ল গ গ ল কর

এছাড়াও পড়ুন:

দলের দুই পক্ষের বিরোধ মেটাতে যাচ্ছিলেন সালিস বৈঠকে, পথে দুর্ঘটনায় মৃত্যু বিএনপি নেতার

দলের দুটি পক্ষের মধ্যে হাতিহাতি ও সংঘর্ষের ঘটনায় বিরোধ মীমাংসায় ডাকা হয়েছিল সালিস বৈঠক। সে বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছিলেন ফেনীর পরশুরামের বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার (৫৮)। পথে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান তিনি। এ ঘটনায় আহত হয়েছেন তাঁর এক সহযোগী।

পারভেজ মজুমদার ফেনীর পরশুরাম উপজেলার মির্জানগর ইউনিয়নের নিজকালিকাপুর গ্রামের সাদেক মজুমদারের ছেলে। তিনি উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য ছিলেন।

পুলিশ ও নিহত ব্যক্তির পরিবারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রোববার দুপুরে নিজকালিকাপুর গ্রামে নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনকে কেন্দ্র করে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি ও মারামারির ঘটনা ঘটে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের চারজন আহত হন। সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে পরশুরাম উপজেলা সদরে সন্ধ্যায় একটি সালিস বৈঠকে উদ্যোগ নেওয়া হয়। সালিসে যোগ দিতে স্থানীয় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদার ও তাঁর সহযোগী মোহাম্মদ হারুন মোটরসাইকেলে নিজকালিকাপুর থেকে পরশুরাম যাচ্ছিলেন। তাঁদের বহন করা মোটরসাইকেলটি সুবার বাজার-পরশুরাম সড়কের কাউতলী রাস্তার মাথায় পৌঁছালে বিপরীত দিক থেকে আসা একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে মোটরসাইকেল আরোহী দুজন গুরুতর আহত হন।

স্থানীয় লোকজন তাদের উদ্ধার করে প্রথমে পরশুরাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে ফেনীর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে যায়। পারভেজের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় চিকিৎসকের পরামর্শে পরিবারের সদস্যরা রাতে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিলে পথে তাঁর মৃত্যু হয়।

পরশুরাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ নুরুল হাকিম মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় বিএনপি নেতা পারভেজ মজুমদারের মৃত্যুর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, নিহত ব্যক্তির পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ না থাকায় বিনা ময়নাতদন্তে মরদেহ বাড়ি নিয়ে যায় স্বজনরা।

সম্পর্কিত নিবন্ধ