নাট্যনির্মাতা মাতিয়া বানু শুকু ক্যানসারে আক্রান্ত
Published: 16th, October 2025 GMT
ক্যানসারে আক্রান্ত হয়েছেন গুণী নাট্যনির্মাতা মাতিয়া বানু শুকু। ভারতের চেন্নাইয়ের একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ পরিচালকের ঘনিষ্ঠজন নাট্যকার গোলাম রাব্বানী এসব তথ্য জানিয়েছেন।
গোলাম রাব্বানী বলেন, “শুকু আপা-আতিক ভাই এই শহরে আমার দ্বিতীয় পরিবার। শুকু আপা গুরুতর অসুস্থ হয়ে চেন্নাইতে কেমোথেরাপি নিচ্ছেন। আতিক ভাই শুকু আপার সাথে আছেন। আরো ১২ সপ্তাহ চেন্নাইতে থাকতে হবে।”
আরো পড়ুন:
২০২ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সবাই ফেল, শাওনের সমবেদনা
অভিনেতা পঙ্কজ ধীর মারা গেছেন
রোগ মুক্তি কামনা করে গোলাম রাব্বানী বলেন, “শুকু আপাকে আমি ‘আয়রন লেডি’ হিসেবেই মানি। দোয়া করি, দ্রুতই রোগ মুক্ত হয়ে আমাদের প্রিয় মানুষটি আমাদের কাছে ফিরে আসবেন।”
মাতিয়া বানু শুকুর সঙ্গে তোলা কয়েকটি ছবি ফেসবুকে শেয়ার করে পরিচালক চয়নিকা চৌধুরী লেখেন, “মাতিয়া বানু শুকু আপু, অনেক ভালো থেকো তুমি। তাড়াতাড়ি সুস্থ হয়ে যাও। ভালোবাসা সবসময় তোমার জন্যে। তুমি একদম চিন্তা করবে না। সব ঠিক হয়ে যাবে।”
দোয়া চেয়ে চয়নিকা চৌধুরী লেখেন, “আমাদের শুকু আপু, অসুস্থ হয়ে এখন চেন্নাইতে। তার কেমো চলছে। সবাই তাকে প্রার্থনায় রাখবেন প্লিজ।”
২০২০ সালের নভেম্বরের শেষ দিকে অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানীর গ্রিন রোডের সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয় মাতিয়া বানু শুকুকে। পরীক্ষার-নিরীক্ষার পর তার জরায়ুতে টিউমার ধরা পড়ে; জরুরিভিত্তিতে সফল অস্ত্রোপচার করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু কত দিন ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছেন, তা সঠিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে জানা যায়, আড়াই বছর ধরে এই লড়াই করছেন শুকু।
গুণী নির্মাতা হিসেবে নাট্যাঙ্গনে বিশেষ পরিচিতি রয়েছে মতিয়া বানু শুকুর। তার উল্লেখযোগ্য কাজের মধ্যে রয়েছে—‘গোল্লাছুট’, ‘ধন্যি মেয়ে’ প্রভৃতি। ব্যক্তিগত জীবনে পরিচালক নূরুল আলম আতিকের সঙ্গে ঘর বেঁধেছেন। এর আগে সরকারি অনুদানপ্রাপ্ত ‘লাল মোরগের ঝুঁটি’ চলচ্চিত্রে একসঙ্গে কাজ করেন শুকু-আতিক দম্পতি।
২০২২-২৩ অর্থবছরে ‘লাল মিয়া’ সিনেমাটিও সরকারি অনুদান পেয়েছে। এতে প্রযোজক হিসেবে রয়েছেন মাতিয়া বানু শুকু। এটি পরিচালনা করবেন নূরুল আলম আতিক।
ঢাকা/শান্ত
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ট ভ ন টক স স থ হয়
এছাড়াও পড়ুন:
চুক্তি নিকটেই বলছে যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া চায় মৌলিক পরিবর্তন
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে একটি চুক্তির ‘খুব কাছাকাছি’ পৌঁছানো গেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। যদিও এই যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে ওয়াশিংটন ও কিয়েভের মধ্যে আলোচনা বড় কোনো অগ্রগতি ছাড়াই শেষ হয়েছে। আর মস্কোর ভাষ্য, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের যে প্রস্তাবকে চুক্তির ভিত্তি হিসেবে ধরা হচ্ছে, তাতে বড় পরিবর্তন আনা প্রয়োজন।
চুক্তির কাছাকাছি পৌঁছানোর তথ্য জানিয়েছেন ইউক্রেনবিষয়ক যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত কেইথ কেলগ। আগামী জানুয়ারিতে এই পদ থেকে সরে যাচ্ছেন তিনি। গতকাল শনিবার ক্যালিফোর্নিয়ায় রেগ্যান ন্যাশনাল ডিফেন্স ফোরামে কেলগ বলেন, সংঘাতের সমাধান করার প্রচেষ্টা ‘শেষ ১০ মিটার দূরে রয়েছে।’ এই শেষ সময়টা সবচেয়ে কঠিন বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।
চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য আর দুটি বাধা অতিক্রম করতে হবে বলে জানান কেলগ। এর একটি হলো ভূখণ্ডবিষয়ক—বিশেষ করে ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে দনবাস নিয়ে। অপরটি হলো ইউক্রেনের জাপোরিঝঝিয়া পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র। ইউরোপের সবচেয়ে বড় এই পরমাণু বিদ্যুৎকেন্দ্র বর্তমানে রাশিয়ার দখলে রয়েছে। কেলগ বলেন, এই দুটি বিষয়ের সমাধান হলে অন্য সমস্যাও কেটে যাবে।
এর আগে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্রের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও ট্রাম্পের জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে দীর্ঘ পাঁচ ঘণ্টা ধরে বৈঠক করেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। ওই বৈঠকের পর পুতিনের পররাষ্ট্র নীতিবিষয়ক প্রধান সহকারী ইউরি উশাকভ বলেছিলেন, ভূখণ্ড নিয়ে সমস্যাগুলো আলোচনা হয়েছে। যুদ্ধ বন্ধের চুক্তির জন্য ইউক্রেনে পুরো দনবাস অঞ্চল চায় মস্কো।
দনবাসের অন্তত ৫ হাজার বর্গকিলোমিটার অঞ্চল এখনো ইউক্রেনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির ভাষ্যমতে, এই অঞ্চলগুলো রাশিয়ার হাতে তুলে দিলে সেখান থেকে ইউক্রেনের আরও গভীরে হামলা চালাতে পারবে মস্কো। আজ রোববার উশাকভ বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের শান্তি প্রস্তাবে মৌলিক পরিবর্তন আনতে হবে। যদিও এ নিয়ে বিস্তারিত বলেননি তিনি।
যুক্তরাষ্ট্র-ইউক্রেন আলোচনা
যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের মধ্যে তিন দিনের আলোচনার আয়োজন করা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ফ্লোরিডা অঙ্গরাজ্যে। শনিবার ছিল আলোচনার শেষ দিন। এদিন জেলেনস্কি বলেন, আলোচনার তৃতীয় দিনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের বিশেষ দূত স্টিভ উইটকফ ও জামাতা জ্যারেড কুশনারের সঙ্গে ‘বাস্তবসম্মত ও গঠনমূলক’ আলোচনায় নিজ দেশে প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি যোগ দিয়েছিলেন।
বার্তা আদান-প্রদানের অ্যাপ টেলিগ্রামে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট বলেন, সত্যিকারের শান্তি আনতে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সততার সঙ্গে কাজ চালিয়ে যেতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ইউক্রেন। ওয়াশিংটনের সঙ্গে আলোচনার পরবর্তী ধাপ এবং কাঠামো সম্পর্কে একমত বিভিন্ন পক্ষ। জেলেনস্কি আরও বলেন, যেকোনো গঠনমূলক অগ্রগতির বিষয়টি পুরোপুরি নির্ভর করছে মস্কোর ওপর।
এদিকে আগামীকাল সোমবার যুক্তরাজ্যের রাজধানী লন্ডনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমার, জার্মান চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্ৎস ও জেলেনস্কির সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন বলে জানিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল মাখোঁ। যুদ্ধ বন্ধের লক্ষ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রস্তাবিত শান্তি পরিকল্পনা নিয়ে সেখানে আলোচনা হওয়ার কথা রয়েছে। মস্কো যেন শান্তির পথে ফিরে আসে, সে জন্য চাপও দেবেন তাঁরা।
৭০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা
যুদ্ধ বন্ধে দফায় দফায় আলোচনা ও দর-কষাকষির মধ্যে ইউক্রেনে ৭০০ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র দিয়ে হামলা চালিয়েছে রাশিয়া। ফ্লোরিডায় যুক্তরাষ্ট্র ও ইউক্রেনের শনিবারের আলোচনার আগে রাতভর এই হামলা চালানো হয়। ইউক্রেনের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, জ্বালানি অবকাঠামো ও রেলসম্পদকে এ হামলার লক্ষ্যবস্তু করা হয়।
হামলায় ইউক্রেনের হাজার হাজার বাড়িতে বিদ্যুৎ ও পানিসংকট দেখা দেয়। হামলার পর ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, ‘হামলার প্রধান লক্ষ্য ছিল আমাদের জ্বালানি অবকাঠামোগুলো। ইউক্রেনের লাখ লাখ মানুষের জীবনকে দুর্বিষহ করে তোলাটাই রাশিয়ার লক্ষ্য।’ বিশাল এই হামলার কথা স্বীকার করেছে ক্রেমলিনও।
তবে বেসামরিক লক্ষ্যবস্তুতে হামলার কথা অস্বীকার করেছে মস্কো। রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে জানানো হয়েছে, তারা শুধু ইউক্রেনের সামরিক শিল্পসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন স্থাপনা এবং জ্বালানি অবকাঠামোয় হামলা চালিয়েছে। সব লক্ষ্যবস্তুতেই সফলভাবে আঘাত হানতে পেরেছে তারা।