অস্ত্র প্রশিক্ষণের ভিডিও ভাইরালের ঘটনায় গ্রেপ্তার ৩
Published: 16th, October 2025 GMT
মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে চার যুবকের অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণের একটি ভিডিও ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার ঘটনায় তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গত মঙ্গলবার মধ্যরাত ২টার দিকে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জের মিরেরবাগ এলাকার একটি ফ্ল্যাট বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বুধবার (১৫ অক্টোবর) মুন্সীগঞ্জ জেলা পুলিশ সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গ্রেপ্তারের তথ্য নিশ্চিত করেছে।
আরো পড়ুন:
বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষে আহত একজনের মৃত্যু
গোসলের সময় নারীর লাশে দেখা গেল বহু আঘাতের চিহ্ন
আরো পড়ুন: শ্রীনগরে অস্ত্র চালানোর প্রশিক্ষণের ভিডিও ভাইরাল
গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের মধ্য বাগড়া এলাকার মৃত হাশেম হাওলাদারের ছেলে রাসেল হাওলাদার (৩০), তার সহযোগী একই এলাকার আহসান বেপারীর ছেলে সাখাওয়াত ব্যাপারী (২৮) ও শ্রীনগরের পাটাভোগ গ্রামের সেলিম খানের ছেলে তারেক খান (৩০)।
শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) নাজমূল হুদা জানান, অবৈধ অস্ত্র প্রদর্শন সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হলে তা জেলা পুলিশের দৃষ্টিগোচর হয়। পুলিশ সুপার শামসুল আলম সরকারের নির্দেশে আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান শুরু হয়। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এবং তথ্য প্রযুক্তির ব্যবহার করে মঙ্গলবার রাত ২টার দিকে দক্ষিণ কেরাণীগঞ্জ থানাধীন মীরেরবাগ এলাকার আরিফের বিল্ডিংয়ের দ্বিতীয় তলায় রাসেল হাওলাদারের ভাড়া করা ফ্ল্যাট থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
তিনি জানান, ভিডিওটি শ্রীনগর কলেজের পেছনের পুকুরপাড় এলাকার। শ্রীনগরের পরিবেশ এখন শান্ত। পরিবেশ ঘোলাটে করতে ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছাড়া হয়েছিল।
মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহাম্মাদ শামসুল আলম সরকার জানান, ভিডিওতে থাকা ব্যক্তিদের মধ্যে পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। বাকিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে। তারা সবাই পুলিশের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বলে পুলিশ সুপার জানিয়েছেন।
ঢাকা/রতন/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর শ র নগর এল ক র
এছাড়াও পড়ুন:
জমি নিয়ে বিরোধে এ হত্যাকাণ্ড: পুলিশ
খুলনায় শিশু ফাতিহা (৭), মুস্তাকিম (৮) এবং তাদের নানি মহিতুন্নেছার (৫৩) হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ। জমি নিয়ে বিরোধের কারণে হত্যা সংঘটিত হয়। এ মামলায় এখন পর্যন্ত তিনজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
শনিবার (২৯ নভেম্বর) দুপুরে খুলনা মেট্রেপলিটন পুলিশ সদর দপ্তরে প্রেস ব্রিফিংয়ে হত্যার বিষয়ে তথ্য দেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু রায়হান মো. সালেহ। তিনি জানান, নিহত ফাতিহা ও মুস্তাকিমের বাবা শেফার আহমেদের মামাত ভাই ফ্রান্স প্রবাসী মো. শামীম শেখ ওরফে শেখ শামীম আহম্মেদসহ সাতজন হত্যা মিশনে অংশ নেন।
আরো পড়ুন:
বন্ধুকে হত্যার পর কুড়াল নিয়ে থানায় হাজির
খুলনায় ছুরিকাঘাতে যুবক নিহত
ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার শামীম শেখ আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু রায়হান মো. সালেহ বলেন, ‘‘খুলনার রূপসা উপজেলার আইচগাতী ইউনিয়ন ভবাণীপুর গ্রামে ১ একর ৬৯ শতক পৈত্রিক জমি নিয়ে শেফার আহমেদের সঙ্গে মামাত ভাই শামীমের বিরোধ আছে। এ নিয়ে আদালতে মামলা চলছে। ২০০৩ সালে শামীম একটি অস্ত্র মামলার আসামি ছিলেন। এরপর তিনি ফ্রান্সে চলে যান। ২০১৭ সালে ফ্রান্স থেকে দেশে ফেরেন। এরপর তিনি অস্ত্র মামলায় গ্রেপ্তার হওয়ার পর ৭-৮ মাস আগে জামিনে মুক্তি পান। জেলখানায় বসে শামীম তার ফুফাত ভাই শেফারের পরিবারকে হত্যা করার পরিকল্পনা করে।’’
ওই কর্মকর্তা আরো বলেন, ‘‘অস্ত্র মামলায় জেলে থাকাকালে একটি সন্ত্রাসী গ্রুপের সদস্যের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে ওঠে শামীমের। জেলখানা থেকে বের হয়ে তিনি জেলখানায় পরিচিত সন্ত্রাসীদের এক লাখ টাকার বিনিময়ে ভাড়া করে প্রতিপক্ষ সেফার আহমেদের পরিবারকে নিশ্চিহ্ন করার পরিকল্পনা করে।’’
অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবু রায়হান মো. সালেহ বলেন, ‘‘গত ১৬ নভেম্বর দুপুর একটা থেকে দেড়টার মধ্যে শামীমের নেতৃত্বে সাতজন লবণচরা এলাকার দরবেশ মোল্লা গলির শেফার আহমেদের বাড়িতে প্রবেশ করে। প্রথমে দেওয়াল টপকে একজন ভেতরে প্রবেশ করে প্রধান গেটের পকেটগেট খুলে দেয়। এরপর তারা একে একে তিনজনকে ইট দিয়ে থেতলে হত্যা করে মুরগীর খামারের কক্ষে রেখে দেয়। এরপর তারা শেফার আহমেদ ও তার স্ত্রী রুবি আক্তারকে হত্যা করার জন্য ওই বাড়িতে অবস্থান করে কিন্তু সেটি সফল করতে না পেরে তারা কৌশলে পালিয়ে যায়।’’
এই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, ‘‘হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী শামীম শেখ ঘটনার দিন থেকে পলাতক ছিলেন। তিনি কৌশলে ফ্রান্সে পালিয়ে যাচ্ছিলেন। গত ২৭ নভেম্বর রাত ৩টায় ঢাকার বিমানবন্দর থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।’’
এ মামলায় আরো দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা হলেন, লবণচরা থানার মোল্লাপাড়া এলাকার আজহারুল ইসলাম আরজুর ছেলে তরিকুল ইসলাম তারেক (২৬)। তার বিরুদ্ধে একটি মাদক মামলা রয়েছে। এছাড়া একই থানার জিন্নাহপাড়া এলাকার বাবুল হাওলাদারের ছেলে তাফসির হাওলাদারকে (২০) গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে চুরি ও ছিনতাইয়ের দুটি মামলা রয়েছে।
অপর এক প্রশ্নের জবাবে ওই পুলিশ কর্মকর্তা বলেন, হত্যার মিশন সফল হওয়ার পর শামীম ভাড়াটে খুনীদের এক লাখ টাকা পরিশোধ করেন। ঘটনার পর ওই বাড়ি থেকে লুট হওয়া জমির দলিলপত্র ও স্বর্ণালংকার এখনো উদ্ধার হয়নি।
এ মামলার সকল আসামি ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানান পুলিশের এ কর্মকর্তা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে নিহত ফাতিহা ও মুস্তাকিমের বাবা শেফার আহমেদ এবং মা রুবি আক্তার উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/নুরুজ্জামান/বকুল