৬টি রিক্রুটিং এজেন্সির ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করবে দুদক
Published: 6th, November 2025 GMT
মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে ৫২৫ কোটি ২২ লাখ ৯৭ হাজার ৫০০ টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগে ৬টি রিক্রুটিং এজেন্সির ১১ জন মালিক ও কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার দুদকের মহাপরিচালক (প্রতিরোধ) মো. আক্তার হোসেন জানান, ৩১ হাজার ৩৩১ জন কর্মীর কাছ থেকে সরকার নির্ধারিত ফি ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকার পরিবর্তে গড়ে পাঁচ গুণ বেশি টাকা আদায় করা হয়েছে। এ অভিযোগের ভিত্তিতে গত মঙ্গলবার কমিশনের বৈঠকে ছয়টি মামলা করার অনুমোদন দেওয়া হয়।
প্রথম মামলায় আসামি করা হবে মেসার্স আমিন ট্যুরস অ্যান্ড ট্রাভেলসের মালিক রুহুল আমিনকে। প্রতিষ্ঠানটি ৭ হাজার ৪৩০ জনের কাছ থেকে অতিরিক্ত ১২৪ কোটি ৪৫ লাখ ২৫ হাজার টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। দ্বিতীয় মামলায় আসামি হবেন মেসার্স মেরিট ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের চেয়ারম্যান ও ডিবেট ফর ডেমোক্রেসির চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ। প্রতিষ্ঠানটি ৩ হাজার ৪৮৯ জনের কাছ থেকে ৫৮ কোটি ৪৪ লাখ ৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত নিয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
তৃতীয় মামলায় আসামি করা হবে সাদিয়া ইন্টারন্যাশনালের শামীম আহমেদ চৌধুরী ওরফে নোমানকে। প্রতিষ্ঠানটি ৩ হাজার ৩২১ জনের কাছ থেকে ৫৫ কোটি ৬২ লাখ ৬৭ হাজার ৫০০ টাকা অতিরিক্ত নিয়েছে। চতুর্থ মামলায় ইমপেরিয়াল রিসোর্স লিমিটেডের চেয়ারম্যান মো.
পঞ্চম মামলায় আরআরসি হিউম্যান রিসোর্স সার্ভিস লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান ও এমডি মো. আলমগীর কবীরকে আসামি করা হবে। প্রতিষ্ঠানটি ৫ হাজার ২০২ জনের কাছ থেকে ৮৭ কোটি ১৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা অতিরিক্ত নিয়েছে। ৬ নম্বর মামলায় থানেক্স ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের সাবেক ব্যবস্থাপক (এমডি) আব্দুল্লাহ শাহেদ, পরিচালক মো. জয়নাল আবেদীন নোমানী ও বর্তমান ব্যবস্থাপক শমসের আহমেদকে আসামি করা হবে। প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে ৩ হাজার ৭৮৮ জনের কাছ থেকে ৬৩ কোটি ৮৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা অতিরিক্ত আদায়ের অভিযোগ রয়েছে।
এর আগে গত ১১ মার্চ মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠাতে ১ হাজার ১২৮ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ৩২ জনের নামে এবং ১৪ সেপ্টেম্বর ১ হাজার ১৫৯ কোটি টাকার আত্মসাতের অভিযোগে ১৩টি রিক্রুটিং এজেন্সির শীর্ষ কর্মকর্তাদের নামে মামলা করে দুদক। অনিয়ম ও সিন্ডিকেটের কারণে ২০১৮ সালে বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি নেওয়া বন্ধ করেছিল মালয়েশিয়া। পরে ২০২১ সালের ১৯ ডিসেম্বর দেশটি আবার শ্রমিক নেওয়ার চুক্তি করে। এরপর ২০২২ সালে প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক অফিস আদেশে শ্রমিক পাঠানোর সর্বোচ্চ খরচ নির্ধারণ করা হয় ৭৮ হাজার ৫৪০ টাকা।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: হ জ র ৫০০ ট ক জন র ক ছ থ ক
এছাড়াও পড়ুন:
মঞ্জুর বিরুদ্ধে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ জাহানারার, খতিয়ে দেখবে বিসিবি
‘‘উনি (মঞ্জুরুল ইসলাম) একদিন আমার কাছে আসলো, আমার কাঁধে হাত রেখে বলতেছে, তোর পিরিয়ডের কতদিন চলতেছে। পিরিয়ড শেষ হলে বলিস, আমার দিকটাও তো দেখতে হবে। পিরিয়ড শেষ হলে, যখন ডাকবো চলে আসিস।’’
কথা গুলো বলছিলেন বাংলাদেশ জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক জাহানারা আলম। শুধুমাত্র বাংলাদেশ নারী ক্রিকেট দলের সাবেক নির্বাচক এবং টিম ম্যানেজার মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু নয়, বিসিবির নারী বিভাগের প্রয়াত সাবেক ইনচার্জ তৌহিদুর রহমানের বিরুদ্ধেও যৌন হয়রানির অভিযোগ জাহানারার। ক্রীড়া সাংবাদিক রিয়াসাদ আজিমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এসব অভিযোগ তুলে ধরেন অস্ট্রেলিয়ায় থাকা পেসার জাহানারা।
আরো পড়ুন:
অভ্যন্তরীণ আলোচনার পর সালাহউদ্দিনকে নিয়ে মন্তব্য: বিসিবি
বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং কোচ হলেন আশরাফুল
ম্যাচ শেষ হওয়ার পর সাধারণত দুই দলের খেলোয়াড় কোচরা একে অপরের সঙ্গে হাত মেলান। তবে মঞ্জু নাকি ম্যাচ শেষে তার সঙ্গে হাত না মিলিয়ে জড়িয়ে ধরতেন। তিনি বলেছেন, ‘‘বিশ্বকাপের কিছু ম্যাচে, যখন আমরা লাইনে হ্যান্ডশেক করি, তখন তিনি (মঞ্জুরুল) হ্যান্ডশেক না করে জড়িয়ে ধরতেন।’’
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডকে (বিসিবি) অনেকবার এ বিষয়ে অভিযোগ দিলেও কোন বিচার পাননি বলে জানান জাহানারা। এখন তাই বোর্ডের কাছে বিচার চান না বরং আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছেন তিনি, ‘‘দেড় বছরে অসংখ্যবার অভিযোগ দিয়েছি। আমাদের যিনি হেড (তৎকালীন বিসিবির নারী উইঙ্গের হেড) নাদেল স্যার, উনাকে বারবার বলেছি। এক-দুই দিন ঠিক হইতো, পরে আবার যা তাই।’’
তখনকার বিসিবির মহিলা উইংয়ের প্রধান শফিউল আলম চৌধুরীর কাছে অভিযোগের সত্যতা মিলেছে। ২০২২ সালের ১১ জানুয়ারি এক সাক্ষাৎকারে নাদেল জানিয়েছিলেন, স্পর্শকাতর কিছু ব্যাপার আছে যা প্রকাশ্যে আসলে নারী ক্রিকেটের ক্ষতি হবে।
তার বক্তব্য ছিল এমন, ‘‘অনেক বিষয় থাকে, যা সামনে আনলে আমাদের পুরো ক্রিকেটের, প্রমীলা ক্রিকেটের ক্ষতি হয়। এমন বিষয় আমি এড়িয়ে যেতে চাই। এটা স্পর্শকাতর ইস্যু। দেশের স্বার্থে, ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে এসব বিবেচনায় নেওয়া উচিত। আমার কাছে কিছু প্রমাণ আছে, যেটা আপনাদের সামনে দেখাতে চাই না। এটা দেখালে আপনারাই লজ্জা পাবেন।’’
বিসিবির প্রধান নির্বাহী নিজাম উদ্দীন সুজনকে একটি চিঠি দেওয়ার কথাও বলেছেন জাহানারা। নাদেল সেই বিষয়টিও স্বীকার করেছিলেন, ‘‘আমি যেটা শুনেছি সে সরাসরি সিইওর কাছে অভিযোগ জানিয়েছে। তার অভিযোগের মধ্যে ছিল- তাকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে না।’’
মঞ্জুকে ২০২০ সালের অক্টোবরে নারী ক্রিকেটের প্রধান নির্বাচক করা হয়। পরে টিম ম্যানেজারের দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি। এছাড়া বাংলা টাইগার্সের প্রোগ্রাম ম্যানেজার ছিলেন তিনি।
এদিকে জাহানারা অভিযোগ আমলে নিয়ে বিসিবির বর্তমান নারী বিভাগের প্রধান আব্দুর রাজ্জাক রাইজিংবিডিকে বলেছেন, ‘‘বিষয়টি সত্যিই স্পর্শকাতর। আমরা অবশ্যই এটা নিয়ে পরবর্তী করণীয় ঠিক করবো। এটা ভয়াবহ অভিযোগ। আমাদের নারী ক্রিকেটে এগিয়ে যেতে বাঁধা তৈরি করবে যদি এটা সুরাহা না হয়। বুলবুল ভাই দেশে নেই। আইসিসি সভা থেকে ফিরলে অবশ্যই এটা নিয়ে আমরা কথা বলবো। একজন ক্রিকেটার বারবার অভিযোগ করে যাচ্ছেন অথচ কেউ তার কথা শুনছে না, জবাব দিচ্ছে না এটা তো হতে পারে না। আমাদের কাছে সবার গুরুত্ব সমান। আমরা সেভাবেই বিষয়টি দেখবো।’’
ঢাকা/ইয়াসিন/আমিনুল