জুলাই গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে গণ অধিকার পরিষদ। পাশাপাশি অন্তর্বর্তী সরকারকে দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ (পথনকশা) প্রকাশ করার আহ্বান জানিয়েছে তারা।

এ ছাড়া জাতিসংঘের তত্ত্বাবধানে শর্ত সাপেক্ষে মিয়ানমারের বেসামরিক লোকজনের জন্য করিডর দেওয়ার নীতিগত সিদ্ধান্ত এবং নারীবিষয়ক সংস্কার কমিশন বাতিলের দাবি জানিয়েছে দলটি।

আজ শনিবার ঢাকায় ইনস্টিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স, বাংলাদেশে এক অনুষ্ঠানে গণ অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে এসব দাবি জানানো হয়েছে। এই অনুষ্ঠানে পেশাজীবীসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সহস্রাধিক নেতা–কর্মী গণ অধিকার পরিষদে যোগ দিয়েছেন বলে দলের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনুষ্ঠানে গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর ও সাধারণ সম্পাদক মো.

রাশেদ খান ফুল দিয়ে নতুন নেতাদের বরণ করে নিয়েছেন। এ সময় গণ অধিকার পরিষদের পক্ষ থেকে তিনটি দাবি করা হয়। এগুলো হলো গণহত্যার বিচার ও আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা, ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র সংস্কার ও জাতীয় সনদ তৈরি করা (সব দলের স্বাক্ষরসহ) এবং দ্রুত সময়ের মধ্যে নির্বাচনের রোডম্যাপ (পথনকশা) প্রকাশ করা।

দলটির পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেশের স্বাধীনতা–সার্বভৌমত্বের জন্য হুমকি ও ধর্মের সঙ্গে সাংঘর্ষিক সব সিদ্ধান্ত বাতিল করতে হবে। গণ অধিকার পরিষদ কোনো দেশের দালালি মানবে না। গণ অধিকার পরিষদ দেশের জনগণবিরোধী সব সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

গণ অধিকারে যোগ দেওয়া এই নেতা–কর্মীদের মধ্যে লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টির (এলডিপি) ৩০ জন নেতা রয়েছেন। এর বাইরে ভাসানী অনুসারী পরিষদের বেশ কিছু নেতা–কর্মীও যোগ দিয়েছেন এই দলে। যোগ দেওয়া অন্যদের মধ্যে প্রকৌশলী, আইনজীবীসহ বিভিন্ন পেশার ব্যক্তিরা রয়েছেন।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি ফুটবলের ‘পেলে’

ফিলিস্তিন জাতীয় দলের সাবেক ফরোয়ার্ড সুলেইমান আল–ওবেইদ ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর হামলায় নিহত হয়েছেন। গাজার দক্ষিণাঞ্চলে মানবিক সাহায্য পেতে অপেক্ষমাণ ফিলিস্তিনি জনতার ওপর ইসরায়েলি বাহিনী হামলা চালালে প্রাণ হারান ৪১ বছর বয়সী এই ফুটবলার। ফিলিস্তিন ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (পিএএফ) গতকাল তাদের ওয়েবসাইটে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে সুলেইমানের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে।

আরও পড়ুনবন্ধু সুয়ারেজ ও ‘দেহরক্ষী’ দি পলে কোয়ার্টার ফাইনালে মেসির মায়ামি৫ ঘণ্টা আগে

পিএএফের বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘গাজা উপত্যকার দক্ষিণাঞ্চলে মানবিক সাহায্যের জন্য অপেক্ষমাণ মানুষের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় শহীদ হয়েছেন জাতীয় দলের সাবেক খেলোয়াড় ও বিচ সার্ভিসেস দলের তারকা সুলেইমান আল–ওবেইদ। ফিলিস্তিন ফুটবলে সুলেইমান “দ্য গ্যাজেল (হরিণ)”, “দ্য ব্লাক পার্ল (কালো মুক্তা)”, “হেনরি অব প্যালেস্টাইন” এবং “পেলে অব প্যালেস্টাইন ফুটবল” নামে পরিচিত ছিলেন। পাঁচ সন্তান রেখে মারা গেছেন ফিলিস্তিন ফুটবলের এই পেলে।’

গাজায় জন্ম নেওয়া সুলেইমান সার্ভিসেস বিচ ক্লাবের হয়ে ক্যারিয়ার শুরু করেন। এরপর পশ্চিম তীরে গিয়ে সেখানকার ক্লাব আল আমারি ইয়ুথ সেন্টারে ২০০৯ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত খেলেন। ২০১০–১১ মৌসুমে ফিলিস্তিনের প্রথম পেশাদার ফুটবল লিগ জেতেন সুলেইমান। আল আমারি ছেড়ে আল শাতিয়া ক্লাবে এক মৌসুম খেলেন সুলেইমান। এরপর গাজা স্পোর্টস ক্লাবের হয়ে সাউদার্ন গভর্নরেটস প্রিমিয়ার লিগে ২০২৬–১৭ মৌসুমে ১৭ গোল করে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন। পরের মৌসুমে আল খাদামা ক্লাবের হয়েও লিগে সর্বোচ্চ গোলদাতা হন।

আরও পড়ুনলা লিগায় সর্বোচ্চ বেতন পাওয়া ১০ ফুটবলার৬ ঘণ্টা আগে

পিএএফের বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, দুর্দান্ত গতি ও দক্ষতার জন্য ২০০৭ সালে ফিলিস্তিন জাতীয় দলে জায়গা করে নেন সুলেইমান। ২০১৩ সালে জাতীয় দলের হয়ে শেষ ম্যাচটি খেলার আগে ২৪ ম্যাচে করেন ২ গোল। এর মধ্যে সুলেইমানের বিখ্যাত গোলটি ২০১০ সালে পশ্চিম এশিয়ান ফুটবল ফেডারেশন চ্যাম্পিয়নশিপে। ইয়েমেনের বিপক্ষে ‘সিজর্স কিকে’ চোখধাঁধানো গোলটি করেছিলেন।

সুলেইমানের মৃত্যুতে শোক জানিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড কিংবদন্তি এরিক ক্যান্টোনা নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে লিখেছেন, ”‘সাহায্য পাওয়ার আশায় রাফায় অবস্থান করার সময় ফিলিস্তিন জাতীয় দলের তারকা সুলেইমান আল–ওবেইদকে হত্যা করেছে ইসরায়েল। তাকে “ফিলিস্তিনের পেলে” ডাকা হতো। আমরা তাদের আর কত গণহত্যা করতে দেব? ফিলিস্তিন মুক্ত হোক।’”

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘লম্বা ক্যারিয়ারে সুলেইমান আল–ওবেইদ ১০০–এর বেশি গোল করে ফিলিস্তিন ফুটবলের অন্যতম উজ্জ্বল তারকায় পরিণত হয়েছিলেন।’ তাঁর মৃত্যুর মধ্য দিয়ে খেলাধুলা ও স্কাউটিং–সংশ্লিষ্ট পরিবারে শহীদের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ৬৬২, যেটা ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের নির্মূলীকরণ যুদ্ধের মাধ্যমে শুরু হয়। ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন–সংশ্লিষ্ট মৃত মানুষের সংখ্যা ৩২১। এর মধ্যে রয়েছেন খেলোয়াড়, কোচ, প্রশাসক, সংগঠক, রেফারি ও ক্লাবের বোর্ড সদস্য।’

তবে গত ২৩ জুলাই পিএএফের এক্সে করা পোস্টের বরাত দিয়ে ফুটবলপ্যালেস্টাইন ওয়েবসাইট জানিয়েছে, গত ৬৬৯ দিনে ইসরায়েলের হামলায় ৪০০–এর বেশি ফুটবলার নিহত হয়েছেন। সেই পোস্টে তখন জানানো হয়েছিল, সর্বশেষ ৬৫৬ দিনে খেলাধুলা ও স্কাউটিং–সংশ্লিষ্ট ৮০০–এর বেশি নিহত হয়েছেন ইসরায়েলের হামলায়।

গত ২৯ জুলাই সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ফিলিস্তিন অলিম্পিক কমিটি জানিয়েছে, শুধু জুলাই মাসেই গাজা ও দখলকৃত পশ্চিম তীরে ইসরায়েলের হামলায় ৪০ জন ফিলিস্তিনি অ্যাথলেট নিহত হয়েছেন। বিবৃতিতে বলা হয়েছিল, ‘একেকটি দিন যায় আর ফিলিস্তিনের ক্রীড়াঙ্গনে বিয়োগান্ত ঘটনার নতুন অধ্যায় যোগ হয়।’

গাজায় গণহত্যামূলক যুদ্ধ শুরুর পর ইসরায়েলি বাহিনীর হাতে ৬১ হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি নাগরিক মারা গেছেন। আহত হয়েছেন দেড় লাখের বেশি; তাঁদের মধ্যে বেশির ভাগই নারী ও শিশু বলে জানিয়েছে ইরানের রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদমাধ্যম প্রেসটিভি।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • লেভেল প্লেয়িং ছাড়া নির্বাচনে যাওয়া হাত পা বেঁধে সাঁতার কাটার শামিল: জাপা
  • চিহ্নিত গণহত্যাকারীদের ছবি প্রদর্শন করে ঢাবিকে কলঙ্কিত করেছে শিবির, বিবৃতিতে ছাত্র ইউনিয়ন
  • জামায়াতকে মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতার দায় স্বীকারের আহ্বান ৩২ বিশিষ্ট নাগরিকের
  • ইসরায়েলের হামলায় নিহত ফিলিস্তিনি ফুটবলের ‘পেলে’
  • চিহ্নিত যুদ্ধাপরাধীদের ছবি প্রদর্শনের ঘটনায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরের পদত্যাগ দাবি শিক্ষক নেটওয়ার্কের
  • সাবেক ডিআইজি গাজী মোজাম্মেল গংদের বিচারের দাবিতে শহরে মানববন্ধন  
  • একাত্তরের গণহত্যায় জড়িতদের বিরুদ্ধে চবিতে গণতান্ত্রিক ছাত্র জোটের বিক্ষোভ