সর্বোৎকৃষ্ট মানের কসমেটিকস, স্কিন কেয়ার ও হোম কেয়ার পণ্য উৎপাদন করায় দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় উৎপাদক প্রতিষ্ঠান রিমার্ক এইচবির প্রশংসা করেছেন শিল্প সচিব মো. ওবায়দুর রহমান। দেশে উৎপাদিত বিশ্বসেরা ব্র্যান্ডগুলোর মানসম্মত প্রসাধন সামগ্রী উৎপাদন, মান নিয়ন্ত্রণ, সংরক্ষণ ও সামগ্রীক ব্যবস্থাপনার আধুনিক পদ্ধতি দেখেও তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। 

শনিবার (৩ মে) মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় রিমার্ক এইচবি লিমিটেডের বিশ্বমানের সর্বাধুনিক ফ্যাক্টরি ঘুরে দেখেন। এ সময় শিল্পের বিকাশে দেশে উৎপাদিত পণ্য বেশি হারে ব্যবহারে দেশের সর্বস্তরের মানুষের প্রতি তিনি আহ্বান জানান।  

ওবায়দুর রহমান বলেন, ‘‘নিজ দেশে উৎপাদিত পণ্যের ব্যবহার বাড়লে আরো নতুন শিল্পের বিকাশ হবে। উদ্যোক্তারা দেশে বেশি করে বিনিয়োগে আগ্রহী হবেন। এতে নিজেদের প্রয়োজন মিটিয়ে বিদেশেও পণ্য রফতানি করা যাবে। যা থেকে বিপুল বৈদেশিক মুদ্রা আয় করা সম্ভব।’’

দেশীয় শিল্পের বিদ্যমান সংকট ও সমস্যা সমাধানে শিল্প মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় সব কিছুই করবে। যেসব বিষয় শিল্প মন্ত্রণালয়ের আওতার বাইরে, বিশেষ করে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেসব বিষয়ও আলোচনার মাধ্যমে সমাধানের আশ্বাস দেন তিনি। 

এর আগে সকালে রিমার্ক এইচবির ফ্যাক্টরিতে পৌঁছুলে কোম্পানির চেয়ারম্যান এস এম আশরাফুল আলমসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওবায়দুর রহমানকে অভ্যর্থনা জানান। এ সময় প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আশরাফুল আম্বিয়া রিমার্কের কার্যক্রম ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে শিল্প সচিবকে ব্রিফিং করেন এবং বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। পরে উচ্চপ্রযুক্তি (হাইটেক) ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে রিমার্কের আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন বিশ্ব সেরা ব্র্যান্ডগুলোর বিভিন্ন ধরনের প্রসাধন সামগ্রী উৎপাদন প্রক্রিয়া, সংরক্ষণ ও  সামগ্রিক ব্যবস্থাপনার আধুনিক পদ্ধতি সরেজমিন ঘুরে দেখেন।

শিল্প সচিব পণ্য উৎপাদন ফ্লোর, ল্যাবরেটরি, প্যাকেজিং ফ্লোর, কাঁচামাল স্টোরেজের স্থান, মোল্ড তৈরির অংশগুলো ঘুরে দেখেন এবং পণ্য উৎপাদনে রিমার্কের প্রক্রিয়া বিশ্বমানের এবং বিএসটিআই মান অনুযায়ী হচ্ছে দেখে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন।

সবশেষে তিনি দেশের সর্ববৃহৎ ওয়াশিং পণ্য অরিক্স ও সানবিট উৎপাদন প্ল্যান্ট ঘুরে দেখেন। বিশ্বমানের সর্বাধুনিক এ ফ্যাক্টরির উৎপাদন প্রক্রিয়ায় বিদেশি কর্মীদের পাশাপাশি দেশীয় কর্মীদের দক্ষতা দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। 

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন রিমার্ক এইচবি লিমিটেডের ভাইস চেয়ারম্যান সোনিয়া আক্তার, পরিচালক ফারিহা আলম প্রভা, গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: আশরাফুল আলম ও গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (তদন্ত) মো: নুরুল ইসলামসহ রিমার্কের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাবৃন্দ।

রিমার্ক এলএলসি ইউএসএ এর এফিলিয়েটেড রিমার্ক এইচবি’র ব্র্যান্ড নিওর, লিলি, ব্লেইজ ও স্কিন, হারল্যান, অরিক্স, টাইলক্স, সানবিট, একনল, সিওডিল ব্র্যান্ড ইতোমধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলেছে।

রাহাত//

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র ম র ক এইচব কর মকর ত

এছাড়াও পড়ুন:

আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা নিচ্ছেন তো

ইসলামে সুস্থতার লক্ষ্য হলো আল্লাহর ইবাদতের পথে অবিচল থাকা। যদি কোনো বাধা এই পথে ব্যাঘাত সৃষ্টি করে, তবে তা দূর করা প্রয়োজন। ইসলাম বলে, মানসিক অসুস্থতা শুধু ক্লিনিক্যাল লক্ষণে সীমাবদ্ধ নয়।

ইসলাম চরিত্রের ত্রুটি, যেমন অহংকার (কিবর), হিংসা (হাসাদ) বা দুনিয়ার প্রতি অতিরিক্ত ভালোবাসা (হুব্বুদ দুনিয়া), যা ক্লিনিক্যাল মাত্রায় না পৌঁছালেও আধ্যাত্মিক অসুস্থতা হিসেবে বিবেচনা করে।

নবীজি (সা.) বলেছেন, ‘যার হৃদয়ে এক পরমাণু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।’ (সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১)

কীভাবে চিকিৎসা নেবেন

ইসলামি ঐতিহ্যে আধ্যাত্মিক প্রশিক্ষণ (রিয়াদাহ আন-নাফস) এবং আধ্যাত্মিক গুরুর সঙ্গে কাজ করা আধ্যাত্মিক স্থিতিস্থাপকতা বাড়ায়। এই প্রশিক্ষণ আমাদের দৈনন্দিন চাপ মোকাবিলার জন্য মানসিক ও আধ্যাত্মিক কৌশল শেখায়।

যার হৃদয়ে এক পরমাণু পরিমাণ অহংকার থাকবে, সে জান্নাতে প্রবেশ করবে না।সহিহ মুসলিম, হাদিস: ৯১আরও পড়ুনআয়েশা (রা.) রাগ করলে নবীজি (সা.) কী করতেন১২ জুন ২০২৫

যখন কেউ ক্লিনিক্যাল মানসিক অসুস্থতায় ভোগেন, তখন প্রথমে ক্লিনিক্যাল চিকিৎসার মাধ্যমে তাদের দৈনন্দিন কার্যকারিতা পুনরুদ্ধার করা হয়। এরপর আধ্যাত্মিক ত্রুটিগুলোর চিকিৎসা শুরু হয়, যাতে তারা আল্লাহর সন্তুষ্টি (মারদাতিল্লাহ) অর্জন করতে পারে।

এ জন্য ভালো হলো, কোনো আল্লাহভীরু মানুষের সান্নিধ্য গ্রহণ করা। পবিত্র কোরআন বলছে, ‘হে বিশ্বাসীগণ, তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যপন্থীদের সান্নিধ্য গ্রহণ করো’ (সুরা তাওবা, আয়াত: ১১৯)।

শারীরিক স্বাস্থ্যের মতো, মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের জন্যও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। আধুনিক সমাজের ক্রমাগত উৎপাদনশীলতার চাপ থেকে মুক্তি পেতে আমাদের জীবনে বিরতি (পজ) আনতে হবে।

প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

চারটি অভ্যাস আমাদের আত্মাকে পুষ্টি দেয় এবং ভারসাম্য ফিরিয়ে আনে:

১. চিন্তামূলক অভ্যাস: নামাজের আগে বা পরে চোখ বন্ধ করে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন। প্রকৃতির মধ্যে বসে ‘আল্লাহ’ নাম জপ করুন, আল্লাহর প্রতি নিমগ্ন ধ্যান করুন; যাকে ইসলামে মুরাকাবা। এ ছাড়া বই পড়া (বিবলিওথেরাপি) মানসিক চাপ কমায় এবং আত্মসচেতনতা বাড়ায়। যেমন: গাজার মুসলিমদের দুঃখের কথা ভেবে নিজের দুঃখকে কম গুরুত্বপূর্ণ মনে হতে পারে।

২. সৃজনশীল অভ্যাস: ধাঁধা, আসবাব তৈরি বা অঙ্কনের মতো সৃজনশীল উপকারী কাজ মননশীলতা বাড়ায়। এটি ইসলামের ইহসান (শ্রেষ্ঠত্ব) ধারণার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ, যা উদ্দেশ্য ও নিয়তের সঙ্গে কাজ করতে উৎসাহিত করে। এই কাজগুলো মানসিক শান্তি দেয় এবং বার্নআউট প্রতিরোধ করে।

আরও পড়ুননামাজে দাঁড়িয়ে নানা চিন্তার আনাগোনা২২ জানুয়ারি ২০২৩শারীরিক স্বাস্থ্যের মতো, মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের জন্যও প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা অপরিহার্য। আধুনিক সমাজের ক্রমাগত উৎপাদনশীলতার চাপ থেকে মুক্তি পেতে আমাদের জীবনে বিরতি (পজ) আনতে হবে।

৩. শারীরিক অভ্যাস: ব্যায়াম, বাগান করা বা তিরন্দাজির মতো কার্যকলাপ আত্মার প্রশিক্ষণ (রিয়াদাহ আন-নাফস) দেয়। নবীজি (সা.) সাঁতার, ঘোড়দৌড়, এবং তিরন্দাজিকে উৎসাহিত করেছেন, কারণ এগুলো শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য বাড়ায়। প্রকৃতিতে হাঁটা আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি কৃতজ্ঞতা জাগায় এবং আধ্যাত্মিক সংযোগ গড়ে।

৪. আধ্যাত্মিক অভ্যাস: পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ আবশ্যক। এরপর রাতের নামাজ (তাহাজ্জুদ), সোমবার ও বৃহস্পতিবার সুন্নত রোজা রাখা এবং কোরআন তিলাওয়াতের মতো অভ্যাস বাড়ানো যেতে পারে। প্রতিদিন কয়েকটি পয়সা দিয়ে হলেও সামান্য সাদাকা আত্মার পুষ্টি জোগায়। এই অভ্যাসগুলো আমাদের নফসকে নিয়ন্ত্রণে রাখে এবং আল্লাহর সান্নিধ্য বাড়ায়।

প্রতিবেশীদের ভূমিকা

মহানবী (সা.)-এর জীবন থেকে আমরা শিখি, নির্জনতা নয়, বরং মানুষের সঙ্গে সংযোগ মানসিক ও আধ্যাত্মিক স্বাস্থ্যের জন্য অপরিহার্য। তিনি একজন ব্যক্তির দুঃখ লক্ষ করে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন এবং দোয়া শিখিয়ে সান্ত্বনা দিয়েছেন।

আমাদেরও পরিবার, বন্ধু এবং প্রতিবেশীদের প্রতি সতর্ক থাকতে হবে। জুমার নামাজ বা জামাতে নামাজে আমরা একে অপরের খোঁজ নিতে পারি। যদি কেউ দুর্বল মনে হয়, তবে তাদের সমর্থন দিন বা বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠান। এই সহানুভূতি ইসলামের শিক্ষার মূল।

 সূত্র: মুসলিম ডটএসজি

আরও পড়ুনহিজরি কালপঞ্জি: ইসলামি পরিচয়ের ধারণা২৩ মে ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ