বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিসের স্কেলের আলোকে বেতন-ভাতা ও স্বতন্ত্র নিয়োগবিধি প্রণয়নের দাবিতে সারা দেশের অধস্তন আদালত ও ট্রাইব্যুনালের সহায়ক কর্মচারীরা কর্মবিরতি পালন করেছেন।

তাঁরা বলছেন, আদালতে বিচারকদের সঙ্গে কাজ করলেও সহায়ক কর্মচারীরা বঞ্চিত হচ্ছেন ন্যায্য সুবিধা থেকে। বিচার বিভাগের সহায়ক কর্মচারী হিসেবে বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস বেতন স্কেলের আওতায় না আনায় এ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত সারা দেশে এই কর্মবিরতি পালন করা হয়। কর্মসূচির অংশ হিসেবে কর্মচারীরা আদালত ভবনের সামনে অবস্থান নেন এবং দুই ঘণ্টা আদালতের কার্যক্রম বন্ধ থাকে।

এর আগে ১৯ এপ্রিল দুই দফা দাবি জানায় বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশন। সংগঠনের সভাপতি সংবাদ সম্মেলনে জানান ৫ মের মধ্যে দাবি মানা না হলে ওই দিন নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে দুই ঘণ্টা কর্মবিরতি পালন করবে কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যরা।

বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের বগুড়া জেলা শাখার আয়োজনে আজ সকাল সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে বেলা ১১টা পর্যন্ত বগুড়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সামনে বিভিন্ন দাবি তুলে ধরে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন বগুড়া জেলা জজ আদালতের সেরেস্তাদার ও রাজশাহী বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের সাংগঠনিক সম্পাদক প্লাবন সরকার, সহকারী জেলা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী তরিকুল ইসলাম, যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (অর্থঋণ) আদালতের সেরেস্তাদার আশরাফুল ইসলাম, জেলা জজ আদালতের হিসাবরক্ষক লিয়াকত হোসেন প্রমুখ।

বাংলাদেশ বিচার বিভাগীয় কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মো.

আওলাদ হোসেন। কর্মসূচিতে বক্তব্য রাখেন সংগঠনের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।

নাটোরে আদালতের সামনের চত্বরে অবস্থান নেন বিচার বিভাগীয় কর্মচারীরা

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সাবেক গভর্নর ও ডেপুটি গভর্নরদের পরিবারের সদস্যদের হিসাব তলব

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) সাবেক ৩ গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর, সাবেক বিএফআইইউ প্রধান এবং তাদের পরিবারের সদস্য তথা স্ত্রী-সন্তান-জামাতা-পূত্রবধূর হিসাবও তলব করেছে। এসব ব্যক্তির হিসাবের যাবতীয় তথ্য জানাতে দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে এ সংক্রান্ত চিঠি দিয়েছে বিএফআইইউ।

বৃহস্পতিবার (১৪ আগস্ট) বিএফআইইউর একজন কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন।

তিনি জানান, দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) অনুরোধে সাবেক গভর্নর, ডেপুটি গভর্নর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক কর্মকর্তাদের হিসাব তলব সংক্রান্ত চিঠি বুধবার ব্যাংকগুলোকে দিয়েছে বিএফআইইউ। 

আরো পড়ুন:

সাবেক ৩ গভর্নর ও ৬ ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব তলব 

১২ দিনে দেশে রেমিট্যান্স এল ১০৫ কোটি ডলার

বাংলাদেশ ব্যাংকের শীর্ষ পদে দায়িত্ব পালন করা এসব কর্মকর্তার বিরুদ্ধে আর্থিক খাতের বিভিন্ন অনিয়ম, ব্যাংক দখলের মাধ্যমে অর্থ লোপাট এবং অতিরিক্ত টাকা ছাপিয়ে ঋণ বিতরণের মতো গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। এসব অভিযোগের ভিত্তিতে দুদক তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করেছে। হিসাবের যাবতীয় তথ্য পাওয়ার পর এসব ব্যক্তির হিসাবে অস্বাভাবিক কোন লেনদেন হয়েছে কিনা সে বিষয়ে বিস্তারিত জানা যাবে।

যাদের হিসাব তলব করা হয়েছে তাদের মধ্যে আছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান, ফজলে কবির এবং আব্দুর রউফ তালুকদার। অভিযোগ অনুযায়ী, ফজলে কবিরের মেয়াদে রাষ্ট্রায়ত্ত ও বেসরকারি ব্যাংকগুলোর দখল নিয়ে লুটপাট শুরু হয় এবং তা অব্যাহত থাকে আব্দুর রউফ তালুকদারের সময়েও। বিশেষ করে রউফ তালুকদারের সময় টাকা ছাপিয়ে ব্যাংক খাতে ঋণ বিতরণের মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অর্থ লোপাটের সুযোগ তৈরি হয়েছিল বলে তদন্তে উঠে এসেছে।

হিসাব তলব করা সাবেক ডেপুটি গভর্নরদের মধ্যে রয়েছেন এস কে সুর চৌধুরী, এস এম মনিরুজ্জামান, কাজী ছাইদুর রহমান এবং আবু ফরাহ মো. নাছের। এর মধ্যে এস কে সুর চৌধুরী বর্তমানে দুর্নীতি মামলায় কারাবন্দি। একই মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে আছেন বিএফআইইউর সাবেক প্রধান মো. মাসুদ বিশ্বাসও।

অন্যদিকে সাবেক ডেপুটি গভর্নর এস এম মনিরুজ্জামানের বিরুদ্ধে সরকারি ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ীদের অবৈধ আর্থিক সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। আর আবু ফরাহ মো. নাছেরের বিরুদ্ধে নীতিমালা শিথিল করে বিশেষ সুবিধা দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।

বিএফআইইউর সাবেক প্রধান আবু হেনা মো. রাজী হাসান এবং মো. মাসুদ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে তদন্ত চলছে। বিএফআইইউ থেকে ব্যাংকগুলোকে পাঠানো চিঠিতে তাদের পরিবারের সদস্যদের ব্যাংক হিসাব, লেনদেন বিবরণী, হিসাব খোলার ফরম এবং পরিচয় সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য ব্যাংকগুলোর কাছে চাওয়া হয়েছে। কোনো হিসাব বর্তমানে বন্ধ থাকলেও, সেটির তথ্য আলাদাভাবে জানাতে বলা হয়েছে।

ঢাকা/নাজমুল/সাইফ

সম্পর্কিত নিবন্ধ