মানবিক গল্পে শরীফ নাসরুল্লাহর নাটক, জুটি বাঁধলেন আরশ-সুনেরা
Published: 5th, May 2025 GMT
মানুষ তার পরিচয় নানা কারণেই ভুলে যায়। জাত, বর্ণ, অর্থ, ধর্মসহ নানা কিছু পার্থক্য গড়ে দেয় মানুষের মধ্যে। তখন মানুষ হয়ে ওঠে অমানবিক, তাদের মধ্যে তৈরি হয় বৈষম্য। কিন্তু মানুষ যখন মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়ায়, তখন সে ভুলে যায় সব ব্যবধান। তার পরিচয় আর ধনী গরিব কিংবা সাদা কালো হয়ে ওঠে না। সে হয়ে ওঠে মানবিক, কেবলই মানুষ।
এমন মানবিক এক গল্পের নাটক ‘১০ মিনিট’ এ জুটি বাঁধতে দেখা যাবে আরশ খান ও সুনেরাহ বিনতে কামালকে। এই নাটকের মাধ্যমে অভিষেক হচ্ছে তরুণ নির্মাতা শরীফ নাসরুল্লাহর। দীর্ঘদিন সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত থাকার পাশাপাশি পরিচালনার প্রতি আলাদা এক টান অনুভব করতেন শরীফ নাসরুল্লাহ। সেই টান থেকেই পরিচালনার যাত্রা, ‘১০ মিনিট’ নির্মাণের মধ্য দিয়ে।
পরিচালক বলেন, বলেন, এই নাটকের মধ্যমে আমরা একটা মানবিক গল্প বলার চেষ্টা করেছি। চারদিকে মানুষের মধ্যে নানাকিছু নিয়ে অমানবিক সব কর্মকাণ্ড চলে। কিন্তু এর মধ্যেও এমন কিছু ঘটনা ঘটে যা আমাদের কঠিন হয়ে যাওয়া মনকে একটু খানি মমতা, ভালোবাসার সুবাস ছড়িয়ে দেয়। ১০ মিনিট আমাদের মধ্যে সেই ভালোবাসার সুবাস ছড়িয়ে দেবে।
নাটকটির গল্প ও চিত্রনাট্য লিখেছেন নাট্যকার অপূর্ণ রুবেল। তিনি বলেন, “শরীফ নাসরুল্লাহ সাংবাদিক হলেও তাঁর মনপ্রাণে একজন নির্মাতা লুকিয়ে আছে, সেটা বহু আগেই বুঝেছিলাম। নাটক ‘১০ মিনিট’ নির্মাণের মধ্য দিয়ে সেই ধারণাই আরও স্পষ্ট হলো।”
সম্প্রতি ঢাকার উত্তরা এলাকায় নাটকটির শুটিং সম্পন্ন হয়েছে। ওয়াটার লিলি পিকচার্স প্রযোজিত নাটকটি দ্রুতই দেখা যাবে ইউটিউব চ্যানেলে।
.উৎস: Samakal
এছাড়াও পড়ুন:
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে দৃষ্টি হারানো আজিজুলকে নির্যাতনের অভিযোগ স্ত্রীর বিরুদ্ধে
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে দৃষ্টিশক্তি হারানো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের আজিজুল হক স্ত্রীর বিরুদ্ধে টাকা দাবিসহ নির্যাতনের অভিযোগ এনেছেন। থানায় দেওয়া লিখিত অভিযোগে জুলাই আন্দোলনে আহত ব্যক্তিদের অর্থসহায়তা দেওয়ার ঘোষণার পর থেকে তাঁর স্ত্রী টাকার জন্য অত্যাচার-নির্যাতন করছেন বলে উল্লেখ করা হয়।
আজিজুল হক উপজেলার তেজখালী ইউনিয়নের বাহেরচর পূর্ব পাড়ার বাসিন্দা। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে আহত হওয়ার পর তাঁর দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হয়ে যায়। এরপর আজিজুলকে ফেলে তাঁর স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার বাবার বাড়িতে চলে যান বলে তিনি অভিযোগ করেন।
থানায় দেওয়া লিখিতে অভিযোগে স্ত্রী একই গ্রামের সুমাইয়া আক্তার (২২), শাশুড়ি হাসনা আক্তার (৪০), সুমাইয়ার চাচা গণ অধিকার পরিষদের উপজেলা শাখার আহ্বায়ক এস কে শফিকুল ইসলাম (৪৫), বিষ্ণুরামপুর গ্রামের আশরাফুল মারুফ (২৫) ও মামা বাহেরচর গ্রামের রনি মিয়ার (৩৫) নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
লিখিত অভিযোগে বলা হয়, দুই বছর আগে সুমাইয়ার সঙ্গে আজিজুলের বিয়ে হয়। গত বছর নরসিংদীর পৌলানপুর ইসলামিয়া মাদ্রাসার আলিম বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন আজিজুল। পড়াশোনার পাশাপাশি একটি বস্ত্রকলের উৎপাদন বিভাগে অপারেটর হিসেবে কাজ করতেন তিনি। গত বছরের ১৮ জুলাই বিকেলে নরসিংদীর ভেলানগর এলাকায় কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। তখন আজিজুলের দুই চোখ গুলিবিদ্ধ হয়। এতে দুই চোখের দৃষ্টিশক্তি হারান তিনি। একপর্যায়ে স্ত্রী সুমাইয়া আক্তার তাঁকে ফেলে বাবার বাড়িতে চলে যান। পরে সরকার জুলাইয়ের আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তা দেবে বলে ঘোষণা দেয়। এর পর থেকে স্ত্রী উল্লিখিত লোকজন নিয়ে আজিজুলকে অত্যাচার এবং মানসিক নির্যাতন করা শুরু করেন। তাঁর কাছে ২০ লাখ টাকা দাবি করা হয়। টাকা দিতে অনীহা প্রকাশ করলে শফিকুল ও আশরাফুল তাঁকে রাস্তায় একা পেলে হত্যার হুমকি ও ভয়ভীতি দেখান। ১১ জুন স্ত্রীসহ অন্য লোকজন বাড়িতে গিয়ে আবার ২০ লাখ টাকা দাবি করে আজিজুলকে মারধর করেন।
আজিজুল হক বলেন, ‘চোখের দৃষ্টি চলে গেলে স্ত্রী আমাকে ফেলে বাবার বাড়িতে চলে যায়। সরকার সহায়তা দেবে শুনে এখন টাকার জন্য চাপ প্রয়োগসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করছে। তারা যেকোনো মুহূর্তে আমাদের বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। বড় ভাইয়ের বিয়ের সময় টাকা তারা দিয়েছিল। সেই টাকা আমার কাছে ফেরত চাইছে।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘তার (আজিজুলের) বড় ভাইয়ের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। তখন পরিবার থেকে ১৫ লাখ টাকা দিয়েছিল। বিয়ের এক বছর পর তার বড় ভাই মারা যায়। এরপর আজিজুলের সঙ্গে আমার বিয়ে হয়। আমার একটি হাতে সমস্যা আছে, আমি প্রতিবন্ধী। অসুস্থ হওয়ার পর স্বামীকে পাঁচ মাস সেবা করেছি। বাবার বাড়ি থেকে চিকিৎসার টাকা নিয়ে দিয়েছি। হাতে সমস্যা থাকায় আর সেবা করতে পারব না বলে স্বামী অসন্তুষ্ট ছিল। যখন বাবার বাড়ি আসি, স্বামী এক দিনও খোঁজখবর নেয়নি। এক স্বামী মারা গেছে, আরেক স্বামীর এমন অবস্থা।’
এ বিষয়ে অভিযুক্ত এস কে শফিকুল ইসলাম বলেন, ‘বিয়ের সময় সুমাইয়ার বাবার বাড়ি থেকে নগদ ৫ লাখসহ মোট ১৫ লাখ টাকা দিয়েছিল। গুলিবিদ্ধ হওয়ার পর আজিজুলের পাশে স্ত্রী ছাড়া কেউ ছিল না। এখন বলছে, স্ত্রীকে সে মৌখিকভাবে তালাক দিয়েছে। তার মধ্যে প্রচুর লোভ। তার অভিযোগ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন।’
বাঞ্ছারামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাসান জামিল খান বলেন, অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।