সমাজের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মানুষদের লক্ষ্যে রেখে এক কোটির বেশি নতুন সদস্য সংগ্রহে দুই মাসের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে বিএনপি। বৃহস্পতিবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলটির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, ১৫ মে থেকে শুরু হয়ে আগামী ১৫ জুলাই পর্যন্ত এই কর্মসূচি চলবে।

অন্য দল থেকে কিংবা আওয়ামী লীগ থেকে কেউ আসতে পারবেন কি না—এমন প্রশ্নে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ধরুন, কেউ দীর্ঘদিন রাজনীতি করেননি অথবা হয়তো একসময়ে আওয়ামী লীগ করতেন, কিন্তু আওয়ামী লীগের দুঃশাসন, বর্বরোচিত কর্মকাণ্ড, লুটপাট, টাকা পাচারকে পছন্দ করেননি, আওয়ামী লীগ থেকে সরে গেছেন; তাঁরা আসতে পারবেন না কেন?

সমাজের পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তির মানুষদের দলে আনা উদ্দেশ্য জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমাদের চিন্তা হলো সমাজের ফ্রেশ মানুষ (রাজনীতিতে নতুন)—অবসরে যাওয়া ব্যক্তি; যিনি শিক্ষক, সরকারি কর্মকর্তা ও ব্যাংকার হতে পারেন, এনজিও কর্মী, কৃষক বা শ্রমিক হতে পারেন; তাঁরা আমাদের আদর্শে বিশ্বাস করেন কি না।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘একেবারে ফ্রেশ মানুষ, সমাজে যাঁদের সুনাম আছে, ভদ্রলোক বলে জানে, তাঁরা যাতে আমাদের দলের সদস্য হতে কোনো ধরনের বাধার মুখে না পড়েন, আমরা সেটাই টার্গেট করব।’

বিএনপির এই নেতা আশা প্রকাশ করে বলেন, ‘সমাজের সর্ব ক্ষেত্রের মানুষ যাঁরা বিএনপিকে পছন্দ করেন, জাতীয়তাবাদী চিন্তাচেতনা লালন করেন; তাঁরা আগ্রহী হয়ে এ দলের সদস্য হবেন—এটাই আমরা প্রত্যাশা করি। কারণ, এখন শেখ হাসিনার সেই ভয়ংকর দুঃশাসনের ছোবল নেই। সে ক্ষেত্রে অনেকেই এগিয়ে আসবেন। এই এগিয়ে আসার মধ্য দিয়ে আমাদের এই কর্মসূচি শুরু হবে।’

যোগদানের প্রক্রিয়া সম্পর্কে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আমাদের ২০ টাকার যে ফরমটা পূরণ করতে হয় এবং এর সঙ্গে একটা অঙ্গীকারনামা, যেটা আমাদের গঠনতন্ত্রে আছে; এবার যাঁরা প্রাথমিক সদস্য হবেন, তাঁদের এ আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। পরে সেসব ফরম যাচাই-বাছাই হবে। কারণ, দোসররা নানাভাবে ঢুকে পড়ার চেষ্টা করবে।’

এর আগে নয়াপল্টনের কার্যালয়ে প্রাথমিক সদস্য নবায়নসংক্রান্ত কমিটির বৈঠক করেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি এই কমিটির আহ্বায়ক।

সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী, আবদুস সালাম আজাদ ও সৈয়দ এমরান সালেহ, কোষাধ্যক্ষ রশিদুজ্জামান মিল্লাতসহ সাংগঠনিক সম্পাদকেরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব এনপ র আম দ র সদস য আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

যুদ্ধবিরতিতে রাজি ইরান-ইসরায়েল: ডোনাল্ড ট্রাম্প

হামলা পাল্টা হামলার মধ্যে চলা তীব্র উত্তেজনার মধ্যে ইরান ও ইসরায়েল যুদ্ধবিরতিতে রাজি হয়েছে বলে জানিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি বলেন, সম্পূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে দুই দেশ। এই যুদ্ধবিরতি চলমান সংঘাতের অবসানের পথে নিয়ে যাবে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে ইসরায়েল এবং ইরানের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি কার্যকর হবে। খবর-আল জাজিরা

তবে ইরান জানিয়েছে, তারা এখনও যুদ্ধবিরতির কোনো প্রস্তাব পায়নি এবং তাদের কাছে এমন কোনো প্রস্তাবের প্রয়োজনও নেই। তেহরানের এক শীর্ষ সরকারি কর্মকর্তা সিএনএনকে এ কথা জানিয়েছেন। 

ওই কর্মকর্তা বলেছেন, ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বক্তব্য আমাদের কাছে প্রতারণার অংশ। এর মাধ্যমে তারা ইরানে হামলার যুক্তি দাঁড় করাতে চায়। এই মুহূর্তে শত্রু পক্ষ ইরানের ওপর আগ্রাসন চালাচ্ছে। আর ইরান প্রতিশোধমূলক হামলা আরও জোরদার করার চূড়ান্ত পর্যায়ে। আমরা শত্রুর মিথ্যা কথায় কান দিচ্ছি না। 

ইসরায়েলের পক্ষ থেকে এখনও যুদ্ধবিরতির বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি। 

যুদ্ধবিরতির বিষয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, ১২ ঘন্টার জন্য একটি সম্পূর্ণ যুদ্ধবিরতি মেনে চলার জন্য একমত হয়েছে ইসরায়েল ও ইরান। যুদ্ধবিরতির সময় এক পক্ষ অন্য পক্ষের প্রতি শান্তিপূর্ণ ও শ্রদ্ধাশীল থাকবে।

তিনি বলেন, সবকিছু যেমনটি করা উচিত তেমনভাবে হবে। এই ধারণার উপর ভিত্তি করে আমি উভয় দেশ- ইসরায়েল ও ইরানকে অভিনন্দন জানাতে চাই, তাদের দৃঢ়তা, সাহসের অবসান ঘটানোর জন্য, যাকে ‘১২ দিনের যুদ্ধ’ বলা উচিত।

মাকির্ন  প্রেসিডেন্ট বলেন, এ যুদ্ধ বছরের পর বছর ধরে চলতে পারত এবং সমগ্র মধ্যপ্রাচ্যকে ধ্বংস করে দিতে পারত। কিন্তু তা হয়নি, এবং কখনও হবেও না! ঈশ্বর ইসরায়েলকে আশীর্বাদ করুন, ঈশ্বর ইরানকে আশীর্বাদ করুন, ঈশ্বর মধ্যপ্রাচ্যকে আশীর্বাদ করুন। ঈশ্বর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আশীর্বাদ করুন এবং ঈশ্বর বিশ্বকে আশীর্বাদ করুন!

ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় ইসরায়েল ও যুক্তরাষ্ট্রের বিমান হামলার জবাবে কাতার ও ইরাকে মার্কিন ঘাঁটিতে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালিয়েছে ইরান। এ অবস্থায় সংঘাত আরও চরমে পৌঁছার আশঙ্কার মধ্যে ডোনাল্ড ট্রাম্পের এই ঘোষণা মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা নিরসনে একটি বড় অগ্রগতি বলে মনে করা হচ্ছে।  

যুক্তরাষ্ট্রের দুই কর্মকর্তার সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, পাল্টাপাল্টি হামলার মধ্যেও ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যপ্রাচ্যবিষয়ক দূত স্টিভ উইটকফ ইরানের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। ওয়াশিংটন ডিসির স্থানীয় সময় শনিবার সন্ধ্যায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলার পরও এই যোগাযোগ অব্যাহত রয়েছে। কূটনৈতিক সমাধানের পথ খোলা রাখতেই এই উদ্যোগ নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন।

 

সম্পর্কিত নিবন্ধ