আওয়ামী লীগকে দল হিসেবে নিষিদ্ধ করতে হবে: ইসলামী আন্দোলন
Published: 11th, May 2025 GMT
আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় অন্তর্বর্তী সরকারকে সাধুবাদ জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। একই সঙ্গে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগ নেতাদের বিচার শেষ করে রায় বাস্তবায়ন করা এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি জানিয়েছে দলটি।
আজ রোববার ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে এই দাবি জানান।
বিবৃতিতে মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, আওয়ামী লীগ যে মাত্রায় অপরাধ করেছে, তাতে অভ্যুত্থান–পরবর্তী সরকারের প্রথম কার্যদিবসেই আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ হওয়া উচিত ছিল। সরকার তা করেনি। দুঃখজনক বিষয় হলো, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করতে জনতাকে লাগাতার আন্দোলন করতে হয়েছে। প্রধান উপদেষ্টার বাসভবনের মতো গুরুত্বপূর্ণ স্থান অবরোধ করতে হয়েছে। তারপর গতকাল উপদেষ্টা পরিষদ যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, সেটিকে তাঁরা সাধুবাদ জানান।
ইসলামী আন্দোলনের আমির বলেন, মানুষের প্রত্যাশা ছিল আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে। কিন্তু উপদেষ্টা পরিষদ আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করেছে। এতে জনতার প্রত্যাশার একাংশ পূরণ হয়েছে। তিনি বলেন, ‘আমরা চাই অতি দ্রুত বিচারিক প্রক্রিয়ায় আওয়ামী লীগের নেতাদের বিচার শেষ করে রায় বাস্তবায়ন করা হবে এবং দল হিসেবে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা হবে। বিগত ৯ মাসের মতো এই ক্ষেত্রে টালবাহানা করলে জনতা সরকারের ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হবে।’
মুফতি সৈয়দ মুহাম্মাদ রেজাউল করীম বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যত বড় স্বৈরাচারই হোক, তার পাপের বোঝা যত বড়ই হোক, আমরা চাই আওয়ামী লীগের শাস্তি বিচারিক প্রক্রিয়াতেই হোক। তবে বিচারিক প্রক্রিয়ার কথা বলে দিনের পর দিন অপরাধীরা ঘুরে বেড়াবে, দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাবে, তা সহ্য করা হবে না। তাই দ্রুততার সঙ্গে আওয়ামী অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করতে হবে।’
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ন ষ দ ধ কর আওয় ম ইসল ম সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
ইসির ভোটার তালিকা সংশোধন এনআরসি থেকেও ভয়ংকর, সতর্কবার্তা মমতার
নির্বাচন কমিশনের ভোটার তালিকার সংশোধন হতে পারে এনআরসির পরিকল্পনা কিংবা এনআরসির থেকেও ভয়ংকর- এমন মন্তব্য করে মানুষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সম্প্রতি বিহারে বিধানসভা নির্বাচনের আগে ভারতের জাতীয় নির্বাচন কমিশন ভোটার তালিকার সার্বিক সংশোধনের কথা জানিয়েছে। অবৈধ ভোটারদের বাদ দিয়ে ভোটার তালিকায় স্বচ্ছতা আনতে সংশোধনের কাজ শুরু করেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। সেই কারণে বিভিন্ন রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়েছে একটি 'ডিক্লারেশন ফর্ম'। জারি করা হয়েছে একগুচ্ছ নির্দেশিকাও। যার বেশ কিছু নিয়মাবলি নিয়ে আপত্তি তুলে বৃহস্পতিবার এমন মন্তব্য করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মমতার দাবি, কমিশনের এই নতুন নির্দেশিকা বিহার ভোটের আগে প্রকাশ করা হলেও এর আসল উদ্দেশ্য বাংলার বিধানসভা ভোট। ২০২৬ সালে বাংলায় নির্বাচন রয়েছে। সেই ভোটকে নিশানা করেই এই নির্দেশিকা পালন করা হয়েছে। এমনকি, নির্বাচন কমিশন গঠন করা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
মমতা বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন নতুন প্রজন্মকে, গ্রামের মানুষদের ভোটাধিকার কেড়ে নিতে চাইছে। বিজেপির হয়ে কাজ করছে। এটা এনআরসির পরিকল্পনা হতে পারে। এনআরসির চেয়েও ভয়ংকর। মানুষকে বলব সতর্ক হন। শেষ দিন পর্যন্ত দেখুন আপনার নাম ভোটার তালিকায় রয়েছে কি না। এই নির্দেশিকাতে আরও অনেক দুর্নীতি আছে।’
তিনি বলেন,‘ভোটার তালিকা সংশোধন করার জন্য আমাদের কাছে কমিশন একটা ফর্ম পাঠিয়েছেন। কিন্তু সেই ডিক্লারেশন ফর্মের কয়েকটি বিষয়ে আমার আপত্তি আছে। কেন উল্লেখ করা হচ্ছে যে ১৯৮৭ থেকে ২০০২-এর মধ্যে যাদের জন্ম, তাদের তা লিখতে হবে ফর্মে? তার মানে কি তার আগে বা পরে যারা জন্মেছে, তাদেরটা হবে না?’
তার দাবি, নির্বাচন কমিশন তাকে ২টি চিঠি পাঠিয়েছে। তা প্রাথমিকভাবে দেখতে গিয়ে ১৮ ও ১৯ পাতার নির্দেশিকায় তার চোখে পড়েছে যে ওই ডিক্লারেশন ফর্ম পূরণের সময় বাবা-মায়ের বার্থ সার্টিফিকেটও দিতে হবে। তা কোথা থেকে পাবেন সবাই? এই প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী।
এ প্রসঙ্গে নিজের কথা বলতে গিয়ে মমতা বলেন, ‘আমিও নিজের মা-বাবার জন্মসাল জানি না।’
উল্লেখ্য, অবৈধ ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দিতে ২২ বছর পর নড়েচড়ে বসেছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন। বিশেষ করে ভিনদেশী নাগরিকদের তালিকা থেকে বাদ দিতেই কমিশনের এই পরিকল্পনা বলে জানা গিয়েছে। নতুন ভোটারদের তালিকাভুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রেও বেশ কয়েকটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। জন্মের প্রমাণপত্র সঠিকভাবে দাখিল করতে না পারলে ভোটার তালিকায় নাম তোলা যাবে না বলে স্পষ্ট জানিয়েছে কমিশন।