ডি আর কঙ্গোর পূর্ব টাঙ্গানইকা হ্রদের তীরবর্তী কাসাবা গ্রামে ভয়াবহ বন্যায় গত কয়েক দিনে ১০০ জনের বেশি মানুষ মারা গেছেন। স্থানীয় এক কর্মকর্তা এ তথ্য জানিয়েছেন। খবর রয়টার্সের
এই বন্যা এমন এক সময় ঘটেছে, যখন মধ্য আফ্রিকার দেশটি সংকটময় অবস্থার মধ্যে রয়েছে। রুয়ান্ডা-সমর্থিত ‘এম২৩’ বিদ্রোহীরা চলতি বছরের শুরু থেকেই পূর্ব কঙ্গোর পূর্বাঞ্চলে হামলা জোরদার করেছে। বছরের প্রথম দুই মাসেই এই সংঘর্ষে হাজারো মানুষ নিহত হয়েছেন।
দক্ষিণ কিভু প্রদেশের ফিজি এলাকার প্রশাসক স্যামি কালোদজি শনিবার রাতে জানান, দুর্গত অঞ্চল থেকে পাওয়া প্রতিবেদনে ‘১০০ জনের বেশি মৃত্যুর’ কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাটি এখনো কিনশাসা সরকারের প্রশাসনের অধীনে রয়েছে। অর্থাৎ স্থানটি এম২৩ বিদ্রোহীদের দখলকৃত অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত নয়।
দক্ষিণ কিভু প্রাদেশিক সরকারের মুখপাত্র দিদিয়ে লুগানইয়া এক বিবৃতিতে জানান, বৃহস্পতিবার রাত ও শুক্রবারের মাঝামাঝি সময়ে টানা প্রবল বৃষ্টি ও ঝোড়ো হাওয়ায় কাসাবা নদীর পানি উপচে পড়ে বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ৬২ জন নিহত ও ৩০ জন আহত হয়েছেন।
স্থানীয় কর্মকর্তারা জানান, কাসাবা এলাকা শুধু টাঙ্গানইকা হ্রদ হয়েই যাওয়া যায়। সেখানে কোনো মুঠোফোন নেটওয়ার্কও নেই, যার ফলে ত্রাণ কার্যক্রম পৌঁছাতে দেরি হতে পারে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: বন য
এছাড়াও পড়ুন:
গোপনে ইরানে ঢুকে যেভাবে হামলা করেছিল ইসরায়েল
১২ দিন ধরে চলা সংঘাতে শত শত যুদ্ধবিমান, সশস্ত্র ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী। তবে এ সংঘাতে ইসরায়েলকে সবচেয়ে বেশি সাফল্য এনে দিয়েছে অভিনব একটি কৌশল। আর তা হলো, গোপনে ইরানের অভ্যন্তরে ঢুকে সেখান থেকে বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করা।
১৩ জুন ভোরের আলো ফোটার আগে ইসরায়েলি সেনাবাহিনী ও গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ ইরানে হামলা শুরু করে। এর কয়েক ঘণ্টা পর এমন কিছু ভিডিও ফুটেজ প্রকাশ করে, যেগুলো দেখে মনে হচ্ছিল, ইরানের বিভিন্ন অজ্ঞাত স্থান থেকে রাতের বেলা এসব ধারণ করা হয়েছে।
একটি ঝাপসা ভিডিওতে দেখা যায়, ক্যামোফ্লজ পোশাক, নাইট-ভিশন চশমাসহ সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন সরঞ্জামসজ্জিত মোসাদ সদস্যরা মরুভূমির মতো জায়গায় বসে অস্ত্র স্থাপন করছেন। ইরানের আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস করার জন্য এসব অস্ত্র বসানো হয়, যাতে ইসরায়েলি যুদ্ধবিমানগুলো নিরবচ্ছিন্নভাবে হামলা চালাতে পারে।
অন্যান্য ভিডিওতে দেখা যায়, ক্যামেরা লাগানো ক্ষেপণাস্ত্রগুলো ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা ব্যাটারি ও ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্ল্যাটফর্মে আছড়ে পড়ছে। আঘাত হানা ক্ষেপণাস্ত্রগুলো স্পাইক ক্ষেপণাস্ত্র বলে মনে হয়েছে। এগুলো অপেক্ষাকৃত ছোট ও নির্ভুলভাবে লক্ষ্যভেদী। শত্রুপক্ষের ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করতে এগুলো ব্যবহৃত হয়। এসব ক্ষেপণাস্ত্র দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকা লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে পারে।
সংঘাতে ছোট ড্রোনগুলো ব্যাপক মনোযোগ আকর্ষণ করে। এগুলো নিষ্ক্রিয় করতে ইরানি কর্তৃপক্ষ বড় পরিসরে তল্লাশি চালাতে বাধ্য হয়। অল্প সময়ের মধ্যেই কর্তৃপক্ষ এমন কিছু পিকআপ ট্রাক খুঁজে পায়, যেগুলো ছোট ড্রোন বহনের উপযোগী করে বিশেষভাবে তৈরি। কর্তৃপক্ষ জানায়, এসব ট্রাকে করে লক্ষ্যবস্তুর কাছাকাছি নিয়ে ড্রোনগুলো ছোড়া হতো।ইরানের কর্তৃপক্ষও এসব অস্ত্র ব্যবহারের কথা স্বীকার করেছে। দেশটির রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যম একটি খোলা জায়গা থেকে পাওয়া স্পাইক ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপকের ধ্বংসাবশেষের ছবি প্রকাশ করেছে। বলা হয়েছে, এসব অস্ত্রে ‘ইন্টারনেটভিত্তিক স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা ও দূরনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা’ সংযুক্ত ছিল। এগুলো পরিচালনা করছিলেন মোসাদ সদস্যরা।
এ ধরনের হামলার সঙ্গে ২০২০ সালের নভেম্বরে চালানো একটি ইসরায়েলি অভিযানের মিল পাওয়া যায়। ওই অভিযানে ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচির শীর্ষ ব্যক্তি মোহসেন ফাখরিজাদেহকে তেহরানের কাছে একটি চলন্ত গাড়িতে গুলি করে হত্যা করা হয়। এ সময় তাঁর স্ত্রী ও দেহরক্ষীরাও নিহত হন।
ওই সময় ইরানি কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে যে দূরনিয়ন্ত্রিত ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা-নিয়ন্ত্রিত যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে এ হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছিল। ইসরায়েলি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, এক টন ওজনের একটি বন্দুক খণ্ড খণ্ড করে ইরানে পাচার করে মোসাদ। বন্দুকটি ছোট ট্রাকের পেছনে বসানো হয়। পরে ফাখরিজাদেহ নিহত হওয়ার পর ট্রাকটিও বিস্ফোরিত হয়।
ইরান দেশটির উত্তর–পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ পশ্চিম আজারবাইজানে গত বুধবার তিনজনের মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে। তাঁদের বিরুদ্ধে ফাখরিজাদেহ হত্যাকাণ্ড ও অন্যান্য গুপ্তহত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগ ছিল।
সাম্প্রতিক সংঘাতে ইরানের ভূপাতিত করা একটি ইসরায়েলি ড্রোনের ধ্বংসাবশেষ