ট্রাইব্যুনালে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের মামলায় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন জমা
Published: 12th, May 2025 GMT
জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে করা মামলায় তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়া হয়েছে।
আজ সোমবার ট্রাইব্যুনালের চিফ প্রসিকিউটর কার্যালয়ে এই প্রতিবেদন জমা দিয়েছে তদন্ত সংস্থা। আজ দুপুরে ট্রাইব্যুনালে সংবাদ সম্মেলন করে চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনার পাশাপাশি এই মামলায় সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান ও গণ-অভ্যুত্থানের সময়কার আইজিপি চৌধুরী আবদুল্লাহ আল-মামুনকে আসামি করে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
নিয়ম অনুযায়ী, ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা প্রথমে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয়। এরপর চিফ প্রসিকিউটর সেই তদন্ত প্রতিবেদন পর্যালোচনা করেন। এবং আনুষ্ঠানিক অভিযোগ (ফরমাল চার্জ) আকারে ট্রাইব্যুনালে দাখিল করেন।
গত বছরের ৫ আগস্ট গণ-অভ্যুত্থানের মুখে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করা হয়। পুনর্গঠিত ট্রাইব্যুনালে গণ-অভ্যুত্থানের সময়ের হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধে প্রথম মামলাটি (মিস কেস বা বিবিধ মামলা) হয় শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে।
এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদনের দাখিলের সময় তিনবার বাড়ানো হয়। সবশেষ গত ২০ এপ্রিল এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য সময় বাড়ানোর আবেদন করেছিল প্রসিকিউশন (রাষ্ট্রপক্ষ)। সেই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এই মামলার তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় দুই মাস বাড়ানো হয়। আগামী ২৪ জুনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার সময় নির্ধারণ করেন ট্রাইব্যুনাল। অবশ্য এর আগেই প্রতিবেদন জমা দিল তদন্ত সংস্থা।
এই মামলাটি ছাড়াও শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে ট্রাইব্যুনালে আরও দুটি মামলা রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলায় আওয়ামী লীগ শাসনামলের সাড়ে ১৫ বছরে গুম-খুনের ঘটনায় তাঁকে আসামি করা হয়েছে। অপর মামলাটি হয়েছে রাজধানীর মতিঝিলের শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশে হত্যাকাণ্ডের ঘটনায়।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ল র তদন ত র সময় অপর ধ
এছাড়াও পড়ুন:
আ.লীগের বিচারের দাবি বিএনপিই তুলেছিল: সালাহউদ্দিন আহমেদ
বিচার সম্পন্ন না হওয়া পর্যন্ত আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করায় সরকারকে সধুবাদ জানিয়েছে বিএনপি। দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, বিএনপি কয়েক মাস আগেই লিখিতভাবে প্রধান উপদেষ্টাকে জানিয়েছিল, আওয়ামী লীগকে মানবতাবিরোধী ও গণহত্যার দায়ে বিচারের আওতায় আনতে হবে। তখন প্রধান উপদেষ্টা যদি দাবিটি আমলে নিতেন, তাহলে গত কয়েকদিনের বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হতো না।
রোববার আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে সংবিধান সংস্কার বিষয়ে নাগরিক জোটের অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিএনপি শাহবাগে না যাওয়ার কারণ সম্পর্কে- সালাহউদ্দিন বলেন, আমরা কেন শাহবাগে যাবো। আমাদের দাবি তো বহু আগেই লিখিতভাবে প্রধান উপদেষ্টাকে দিয়েছি।
তিনি বলেন, আমরা জুলাই গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা ও গণমানুষের কথাগুলো বলেছিলাম। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে নজির আছে যে সমস্ত ফ্যাসিবাদী দল গণহত্যার জন্য দায়ী দল হিসেবে তাদেরকে বিচারিক প্রক্রিয়ার মধ্যে নিয়ে এসে নিষিদ্ধ করা হয়। এর উদাহরণ সারা পৃথিবীতে আছে। সুতরাং দেরিতে হলেও অন্তর্বর্তী সরকার আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগের বিচার নিশ্চিত করবে এই ঘোষণা দেওয়ার জন্য স্বাগতম জানাই।
সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমরা অন্তর্বর্তী সরকারকে বলব, বিএনপি এই রকম যেসব পরামর্শ দিয়েছে দেশ ও জনগণের পক্ষে তা যেন যথাসময়ে আমলে নেয়। সরকার ও দেশ পরিচালনায় আমরা সরকারকে সহযোগিতা করব।
সারাদেশের মানুষ ভোট দেওয়ার জন্য উদগ্রীব বলে জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, এ জন্য প্রধান উপদেষ্টাকে আহ্বান জানিয়েছি, নির্বাচনের একটা রোডম্যাপ ঘোষণা করতে।
আওয়ামী লীগ ও তাদের অন্যান্য সংগঠনের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়ে সরকার আরও একটি পদক্ষেপ নিতে যাচ্ছে বলে উল্লেখ করে সালাহউদ্দিন বলেন, সন্ত্রাসী বিরোধী আইনে সরকার আওয়ামী লীগের কার্যক্রম নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা মনে হয় এইজন্য সরকারকে সন্ত্রাস বিরোধী আইনে কিছুটা সংশোধনী আনতে হবে। কারণ এই আইনে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধের কথা বলা আছে। এখানে রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধের বিষয়টি উল্লেখ নেই বলেও জানান সালাহউদ্দিন।
বিএনপি এতদিন যে গণতান্ত্রিক রাজনীতির কথা বলে আসছে, সেখানে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ কতটা গণতান্ত্রিক- এমন প্রশ্নে সালাহউদ্দিন বলেন, তারা একটি ফ্যাসিবাদী শক্তি, তারা একটি মাফিয়া শক্তিতে পরিণত হয়েছিল। তারা দীর্ঘদিন ফ্যাসিবাদী ও মাফিয়াতন্ত্রের চর্চা করেছিল দেশের মানুষের ওপর। তারা আর রাজনৈতিক দল নেই। তারা একটা মাফিয়া শক্তি, ফ্যাসিবাদী দল। সুতরাং তাদেরকে রাজনৈতিক দলের কোনো তকমা দিতে চাই না। আওয়ামী লীগের ডিএনএতে গণতন্ত্র ও রাজনৈতিক চর্চা নেই বলেও দাবি করেন সালাহউদ্দিন।