আগামী ৭ জুনকে পবিত্র ঈদুল আজহার দিন ধরে ট্রেনের অগ্রিম বিক্রির সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। বরাবরের মতো রেলওয়ে এবার ঈদের আগে বিশেষ ব্যবস্থায় ৭ দিনের আন্তনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি করবে। ঈদ উপলক্ষে ঘরমুখো মানুষের এই ট্রেনযাত্রার টিকিট বিক্রি শুরু হবে আগামী ২১ মে থেকে। যাত্রীদের সুবিধার্থে এবারও শতভাগ আসন অনলাইনে বিক্রি করা হবে।

আজ সোমবার রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে আয়োজিত অংশীজন সভায় এসব তথ্য জানান রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো.

ফাহিমুল ইসলাম। সভায় তিনি বলেন, ৩১ মে থেকে ঈদযাত্রা শুরু হবে। টিকিট বিক্রি শুরু হবে ১০ দিন আগে।

রেলওয়ের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, পশ্চিমাঞ্চলে চলাচল করার সকল আন্তনগর ট্রেনের টিকিট বিক্রি শুরু হবে সকাল ৮টায়। আর পূর্বাঞ্চলে চলাচল করা সকল ট্রেনের টিকিট বিক্রি বেলা ২টায় শুরু হবে।

অগ্রিম টিকিট বিক্রির তারিখ ঘোষণা করে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সচিব বলেন, ঈদের আগে আন্তনগর ট্রেনের ৩১ মের টিকিট বিক্রি হবে ২১ মে। ১ জুনের বিক্রি হবে ২২ মে। ২ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ২৩ মে। ৩ জুনের বিক্রি হবে ২৪ মে। ৪ জুনের বিক্রি হবে ২৫ মে। ৫ জুনের বিক্রি হবে ২৬ মে। আর ৬ জুনের টিকিট বিক্রি হবে ২৭ মে।

সভায় উপস্থিত ছিলেন সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় এবং যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভুঁইয়া, সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে নিযুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী শেখ মইনউদ্দিন, স্বরাষ্ট্র বিষয়ক বিশেষ সহকারী খোদা বখশ চৌধুরী, সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মো. এহছানুল হক, সেতুসচিব মোহাম্মদ আবদুর রউফ প্রমুখ।

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেসের রাত্রিকালীন যাত্রাবিরতির দাবিতে ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ

খুলনা থেকে ঢাকার পথে চলাচলকারী আন্তনগর সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের রাত্রিকালীন যাত্রাবিরতির দাবিতে আজ মঙ্গলবার চুয়াডাঙ্গার দর্শনা হল্ট স্টেশনে দুই ঘণ্টা ট্রেন থামিয়ে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। ‘দর্শনাবাসীর’ ব্যানারে আয়োজিত এ কর্মসূচিতে সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।

ঢাকা থেকে খুলনাগামী আন্তনগর সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেন থামিয়ে বেলা ১টা ৫৫ মিনিট থেকে কর্মসূচি শুরু হয়। পরে সেনাবাহিনীর চুয়াডাঙ্গা ক্যাম্পের ক্যাপ্টেন সৌমিক আহমেদ অয়নের আশ্বাসে সাত দিনের জন্য আন্দোলন স্থগিত করা হয়। বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটে ট্রেনটি খুলনার উদ্দেশে রওনা দেয়। এ সময় ঘোষণা দেওয়া হয়, আগামী সোমবারের মধ্যে দাবি পূরণ না হলে মঙ্গলবার থেকে রেলপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করা হবে।

সরেজমিন দেখা যায়, বিভিন্ন স্লোগান লেখা ব্যানার–ফেস্টুন নিয়ে দুপুর ১২টা থেকে দর্শনা হল্ট স্টেশনে সমবেত হতে থাকেন বিভিন্ন শ্রেণি–পেশার মানুষ। ব্যানার ও ফেস্টুনে লেখা ছিল ‘বঞ্চনা নয়, অধিকার চাই’, ‘দর্শনায় যাত্রাবিরতি চাই’, ‘মিথ্যা আশ্বাস আর নয়, এবার বাস্তবায়ন চাই’, ‘সুন্দরবন এক্সপ্রেস ট্রেনের আপ ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেনের ডাউন বিরতি চাই’। দর্শনা পৌর বিএনপির সমন্বয়ক হাবিবুর রহমান, সাংস্কৃতিক সংগঠক সাজ্জাদ হোসেনসহ বাজার কমিটি ও ছাত্রসংগঠনের নেতারা কর্মসূচির প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।

কর্মসূচি চলাকালে দামুড়হুদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তিথি মিত্র দর্শনা হল্ট স্টেশনে আসেন। তিনি আন্দোলনকারীদের দাবিকে যৌক্তিক হিসেবে উল্লেখ করে রেলপথ অবরোধ থেকে সরে আসার আহ্বান জানান। তবে কর্মসূচি অব্যাহত রাখেন আন্দোলনকারীরা। বিকেল পৌনে চারটার দিকে সেনাবাহিনীর ক্যাপ্টেন সৌমিক আহমেদ অয়ন আন্দোলনকারীদের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাঁর আশ্বাসে আন্দোলনকারীদের পক্ষ থেকে কর্মসূচি স্থগিতের ঘোষণা দেওয়া হয়।

রেলওয়ে সূত্র জানায়, কর্মসূচির কারণে বেনাপোল এক্সপ্রেস, মহানন্দা এক্সপ্রেস ও রূপসা এক্সপ্রেস ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটে। এতে হাজারো যাত্রী দুর্ভোগে পড়েন।
দর্শনাবাসীর ব্যানারে আয়োজিত কর্মসূচি স্থানীয়ভাবে সমন্বয় করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-আন্দোলনের চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার যুগ্ম আহ্বায়ক তানভীর আহম্মেদ অনিক ও সংগঠনটির দর্শনার সমন্বয়ক আবিদ হাসান রিফাত।

আবিদ হাসান বলেন, জেলার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শহর দর্শনা। দর্শনার চেকপোস্ট হয়ে প্রতিদিন হাজারো যাত্রী ভারত-বাংলাদেশ যাতায়াত করেন। এখানকার যাত্রীদের বেশির ভাগই ট্রেনের ওপর নির্ভরশীল। তিনি বলেন, ‘খুলনা-ঢাকা পথে চলাচলকারী সুন্দরবন এক্সপ্রেস ও চিত্রা এক্সপ্রেস ট্রেন দিনের বেলা দর্শনা হল্ট স্টেশনে যাত্রাবিরতি দিয়ে আসছে। অথচ দর্শনায় ট্রেন দুটির রাত্রিকালীন বিরতি নেই। এতে রাতে এসব ট্রেনে চলাচলকারী যাত্রীদের ঝুঁকি নিয়ে ২৫ কিলোমিটার দূরে চুয়াডাঙ্গায় যেতে হয়। এতে অনেকেই ছিনতাইসহ নানা রকম সমস্যায় পড়েন। তাই এ দুটি ট্রেনের রাত্রিকালীন যাত্রাবিরতির জন্য আমরা দীর্ঘদিন আন্দোলন করে আসছি। রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দফায় দফায় আশ্বাস দিলেও তা বাস্তবায়ন করছেন না।’

আন্দোলন স্থগিত রাখা প্রসঙ্গে তানভীর আহম্মেদ অনিক বলেন, এবার যদি সমস্যার সমাধান না হয়, তাহলে তাঁরা দর্শনা রেলস্টেশন বন্ধ করে দেবেন। এই স্টেশন থেকে কোনো টিকিট বিক্রি হবে না। প্রয়োজনে তাঁরা আমরণ অনশন করবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • সুন্দরবন ও চিত্রা এক্সপ্রেসের রাত্রিকালীন যাত্রাবিরতির দাবিতে ট্রেন থামিয়ে বিক্ষোভ