সিলেটের আদালতপাড়ায় আবারও আসামিদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। ওই সময় মামলার বাদী পক্ষের লোকজন ডিম নিক্ষেপ ছাড়াও আসামিদের ওপর চড়াও হয়। এমনকি পুলিশের সঙ্গে খারাপ আচরণ ও ধাক্কাধাক্কি করে। 

সোমবার দুপুরে মহানগর দায়রা জজ ভবনের উপরে ও নীচে হাজতখানার সামনে এ ঘটনা ঘটে। এর আগে সরকার পতনের পর গত ২৪ আগস্ট প্রথমবার সিলেট আদালতে হামলার শিকার হন সাবেক বিচারপতি এএইচএম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। পরে ২৪ নভেম্বর সিটি করপোরেশনের কাউন্সিলর এ কে লায়েক, ২৮ নভেম্বর বিএনপি কর্মী বিলাল আহমদ হত্যা মামলার তিন আসামি, ১৯ ডিসেম্বর বালাগঞ্জের পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমির হোসেন নুরুসহ কয়েকজন হামলার শিকার হন।

আদালত সূত্রে জানা যায়, সরকার পতনের পর সিলেটের জকিগঞ্জ থানায় দায়ের করা একটি মামলায় উচ্চ আদালতের জামিনের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আজ সোমবার ১৮ জন আসামি সিলেটের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। আসামিদের মধ্যে জকিগঞ্জের সুলতানপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিক, লামারগ্রামের বাসিন্দা ও বিজিবির সোর্স আলী আহমদসহ আওয়ামী লীগের কিছু নেতাকর্মী রয়েছেন। আদালত থেকে বের হওয়ার পথে হামলা ও ডিম ছুড়ে বাদী পক্ষের লোকজন। পরে আসামিদের ভবনের নীচে হাজতখানায় নিয়ে রাখার সময় আলী আহমদসহ কয়েকজনের ওপর আবার হামলার চেষ্টা করা হয়। বার বার পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের দিকে তেড়ে আসে লোকজন।

এ বিষয়ে জেলা কোর্ট ইন্সপেক্টর মো.

জমশেদ জানান এজলাস থেকে আসামিদের নিয়ে যাওয়ার পথে হামলা করে বাদী পক্ষের লোকজন। পুলিশ বার বার ফেরানোর চেষ্টা করে। পুলিশের সঙ্গে তারা খারাপ ব্যবহার করে। ঘটনাটি খুবই দুঃখজনক। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: আস ম র ওপর ল কজন

এছাড়াও পড়ুন:

হাসপাতালে নেই এন্টিভেনম, ২ সপ্তাহে সাপের কামড়ে মৃত ৫

ঠাকুরগাঁওয়ে সাপের কামড়ে গত দুই সপ্তাহে পাঁচ জনের মৃত্যু হয়েছে। জেলার হাসপাতালগুলোতে এন্টিভেনম না থাকায় সময়মতো চিকিৎসা না পেয়ে প্রাণ হারাচ্ছেন রোগীরা।

সর্বশেষ শুক্রবার (৮ আগস্ট) রাতে বালিয়াডাঙ্গী উপজেলার সীমান্ত এলাকার বড়পলাশবাড়ী ইউনিয়নের কদমতলা গ্রামের স্কুলছাত্র সাকিবুল ইসলাম (পঞ্চম শ্রেণি) বিষধর সাপের কামড়ে মারা যায়।

জানা যায়, সাপে কামড়ানোর পর তাকে প্রথমে বালিয়াডাঙ্গী, পরে হরিপুর, এরপর ঠাকুরগাঁও জেনারেল হাসপাতাল এবং সবশেষে দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। এসব হাসপাতালের কোথাও এন্টিভেনম মজুত ছিল না। পরে দিনাজপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে মৃত্যু হয় সাকিবুলের।

সাকিবুলের বাবা ইসরাইল উদ্দীন বলেন, “চারটা হাসপাতালে নিয়েও ভ্যাকসিন পাইনি। কোলের উপরেই ছেলেকে হারালাম। আর যেন কোনো বাবার বুক খালি না হয়, সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিক।”

অন্যদিকে, সাকিবুলের মতো পীরগঞ্জের স্কুলছাত্র তারেক, রাণীশংকৈলের কলেজছাত্র মোকসেদ আলী এবং হরিপুরের গৃহবধূ সম্পা রানীসহ গত দুই সপ্তাহে জেলায় সাপের কামড়ে মারা গেছে অন্তত পাঁচ জন।

সম্পা রানীর স্বামী জিতেন বলেন, “হাসপাতালে ভ্যাকসিন না পেয়ে শেষ পর্যন্ত ওঝার কাছে যেতে হয়েছে। তবুও স্ত্রীকে বাঁচাতে পারিনি। দেড় বছরের সন্তান নিয়ে অসহায় হয়ে পড়েছি।”

স্থানীয় পল্লী চিকিৎসক আজমুল হক বলেন, “বর্ষার সময়ে সাপের কামড়ের ঘটনা বেশি হয়। প্রতি বছর জেলা ও উপজেলা হাসপাতালগুলোতে ভ্যাকসিন পাঠানো হয় বর্ষা শেষের দিকে। অথচ আগে থেকেই মজুত রাখা উচিত।”

ঠাকুরগাঁও সিভিল সার্জন ডা. মো. আনিছুর রহমান বলেন, “চাহিদা পাঠানোর পরও কেন্দ্রীয় ঔষধাগার থেকে এন্টিভেনম পাওয়া যায়নি। সেখানেও সংকট রয়েছে। চেষ্টা করছি দ্রুত আনার।”

সাপের কামড়ে মৃত্যুর এই ধারাবাহিক ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে গ্রামাঞ্চলে। চিকিৎসক ও সচেতন মহল বলছে, বর্ষার শুরুতেই প্রতিটি উপজেলা ও জেলা হাসপাতালে পর্যাপ্ত এন্টিভেনম সরবরাহ করতে হবে।

ঢাকা/হিমেল/এস

সম্পর্কিত নিবন্ধ